শিরোনামঃ
সহকর্মীর শ্লীলতাহানীর পরও বহাল তবিয়তে এলজিইডির উপ সহকারী প্রকৌশলী আশরাফ বিটিএ’র পক্ষ থেকে নব নিযুক্ত পরিচালককে অভিনন্দন বিকাশ দেওয়ান ছিলেন একজন সফল এমডি জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থার উদ্যোগে ইফতার সামগ্রী বিতরণ সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা ফেরতের দাবিতে বিক্ষোভ কক্সবাজার বঙ্গবন্ধু বীচ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা বীচ বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে অবস্থান ও বিক্ষোভ মিছিল বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেল শ্রমিক নেতৃবৃন্দের শ্রদ্ধা সুচনাকে মেয়র হিসেবে গ্রহন করলেন ঢাকাস্থ কুমিল্লা মহানগর নাগরিক ফোরাম কক্সবাজারের সুগন্ধা বিচের নতুন নাম ‘বঙ্গবন্ধু বিচ’ করায় ধন্যবাদ জ্ঞাপন গ্রীস ফেরত অসুস্থ বেলায়েত হোসেনের পাশে প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক ও ব্র্যাক

প্রথিতযশা সাংবাদিক লেখক বেবি মওদুদের মৃত্যুবার্ষিকী কাল

#
news image

সাংবাদিক-লেখক-গবেষক ও নারী অধিকার আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক সাবেক সংসদ সদস্য এ এন মাহফুজা খাতুন বেবী মওদুদের ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী আগামীকাল সোমবার। 
তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ২০১৪ সালের ২৫ জুলাই ৬৬ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।
বেবী মওদুদের জন্ম ১৯৪৮ সালের ২৩ জুন, কলকাতায়। পিতা বিচারপতি আবদুল মওদুদ ছিলেন কেন্দ্রীয় বাংলা উন্নয়ন বোর্ড এবং নজরুল একাডেমীর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। সংস্কৃতি, ফার্সি, আরবী ও ইংরেজী ভাষায় বিস্তর দখল ছিলো বিচারপতি মওদুদের। কলকাতায় ছাত্রাবস্থায় দৈনিক আজাদ, মাসিক মোহাম্মদী, সওগাত এবং ইত্তেহাদ পত্রিকায় নিয়মিত প্রকাশিত হতো তার লেখা প্রবন্ধ। এই গুণী মানুষটির তৃতীয় সন্তান বেবী মওদুদ।
মুক্তিযুদ্ধের আগে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের সদস্য হিসেবে ছাত্র রাজনীতিতে যুক্ত হন বেবী মওদুদ। ১৯৬৭-৬৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হল ছাত্রী সংসদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৯ সালে আসাদ হত্যার প্রতিবাদে রাজপথে মিছিলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন অসীম সাহসে। যুক্ত ছিলেন অসহযোগ আন্দোলনেও। ১৯৭১ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। মুক্তিযুদ্ধে কবি সুফিয়া কামালের সঙ্গে স্বাধীনতার স্বপক্ষে মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তায় বিভিন্ন কর্মকান্ডে যুক্ত হন তিনি।
১৯৬৩ সালে দৈনিক সংবাদ, ইত্তেফাক এবং চিত্রালী পত্রিকায় লেখালেখি শুরুর মধ্য দিয়ে সাংবাদিকতায় তার হাতে খড়ি হলেও ১৯৬৭ সাল থেকে সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন বেবী মওদুদ। ৪ দশকের বেশি সময়ের সাংবাদিকতায় তিনি সাপ্তাহিক ললনা, দৈনিক সংবাদ, দৈনিক ইত্তেফাক, দৈনিক মুক্তকন্ঠ, দৈনিক আজাদ, গণবাংলা, বিবিসি বাংলা বিভাগ, সাপ্তাহিক বিচিত্রা ও বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) বাংলা বিভাগে কাজ করেছেন।
নব্বইয়ের দশকে যুদ্ধাপরাধীদের শাস্তির দাবিতে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আন্দোলনেও তিনি ছিলেন নেতৃস্থানীয় অগ্রসৈনিক।
১৯৯৬ সালে বাসসের বাংলা বিভাগ তার নেতৃত্বে চালু হয়। প্রতিষ্ঠাকালীন প্রধান বার্তা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সবশেষ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সামাজিক বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। সাংবাদিকতার পাশাপাশি শিশু সাহিত্য রচনায় যেমন নাম কুড়িয়েছেন, তেমনি সাংস্কৃতিক কর্মী হিসেবে অথবা নারী নেত্রী ও সচেতন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবেও তিনি পরিচিত ছিলেন।
তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও তার পরিবার, মনে মনে (ছোট গল্প), শেখ মুজিবের ছেলেবেলা (শিশু সাহিত্য), দুঃখ-কষ্ট-ভালোবাসা (উপন্যাস) গণতন্ত্রের মানসকন্যা শেখ হাসিনা, দীপ্তর জন্য ভালোবাসা, আমার রোকেয়া, রোকেয়া পাঠ, টুনুর হারিয়ে যাওয়া, শান্তুর আনন্দ, এক যে ছিলো আনু, মুক্তিযোদ্ধা মানিক, কিশোর সাহিত্য সমগ্র, নিবন্ধ সমগ্র-অন্তরে বাহিরে, পাকিস্তানে বাংলাদেশের নারী পাঁচার এবং পুটুর জন্য ছড়া ও কবিতা।
দৈনিক বাংলা-টাইমস- সরকারি ট্রাস্ট থেকে বিলুপ্ত হওয়ার পর ১৯৯৮ সালে বিচিত্রা নতুন কলেবরে শেখ রেহানার সম্পাদনায় ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের বাড়ি থেকে প্রকাশিত হতো। সেই বিচিত্রার মূল কর্ণধার ছিলেন বেবী মওদুদ। ‘বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ গ্রন্থসহ মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের রাজনৈতিক কর্মকান্ড নিয়ে সহপাঠি, বন্ধু-প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গবেষণা ও সংকলণ করেছেন তিনি। ১৯৪৭ থেকে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক কর্মকান্ড ও তৎকালীন গোয়েন্দা তদন্ত  প্রতিবেদন নিয়ে প্রকাশিত গ্রন্থের গবেষণা ও সংকলনে দায়িত্ব পালন করেছেন বেবী মওদুদ।
নবম জাতীয় সংসদে বেবী মওদুদ আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংরক্ষিত নারী আসন থেকে সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হন। সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি এবং লাইব্রেরী কমিটির সদস্য হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেন।

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৪ জুলাই, ২০২২,  8:52 PM

news image

সাংবাদিক-লেখক-গবেষক ও নারী অধিকার আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক সাবেক সংসদ সদস্য এ এন মাহফুজা খাতুন বেবী মওদুদের ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী আগামীকাল সোমবার। 
তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ২০১৪ সালের ২৫ জুলাই ৬৬ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।
বেবী মওদুদের জন্ম ১৯৪৮ সালের ২৩ জুন, কলকাতায়। পিতা বিচারপতি আবদুল মওদুদ ছিলেন কেন্দ্রীয় বাংলা উন্নয়ন বোর্ড এবং নজরুল একাডেমীর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। সংস্কৃতি, ফার্সি, আরবী ও ইংরেজী ভাষায় বিস্তর দখল ছিলো বিচারপতি মওদুদের। কলকাতায় ছাত্রাবস্থায় দৈনিক আজাদ, মাসিক মোহাম্মদী, সওগাত এবং ইত্তেহাদ পত্রিকায় নিয়মিত প্রকাশিত হতো তার লেখা প্রবন্ধ। এই গুণী মানুষটির তৃতীয় সন্তান বেবী মওদুদ।
মুক্তিযুদ্ধের আগে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের সদস্য হিসেবে ছাত্র রাজনীতিতে যুক্ত হন বেবী মওদুদ। ১৯৬৭-৬৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হল ছাত্রী সংসদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৯ সালে আসাদ হত্যার প্রতিবাদে রাজপথে মিছিলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন অসীম সাহসে। যুক্ত ছিলেন অসহযোগ আন্দোলনেও। ১৯৭১ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। মুক্তিযুদ্ধে কবি সুফিয়া কামালের সঙ্গে স্বাধীনতার স্বপক্ষে মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তায় বিভিন্ন কর্মকান্ডে যুক্ত হন তিনি।
১৯৬৩ সালে দৈনিক সংবাদ, ইত্তেফাক এবং চিত্রালী পত্রিকায় লেখালেখি শুরুর মধ্য দিয়ে সাংবাদিকতায় তার হাতে খড়ি হলেও ১৯৬৭ সাল থেকে সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন বেবী মওদুদ। ৪ দশকের বেশি সময়ের সাংবাদিকতায় তিনি সাপ্তাহিক ললনা, দৈনিক সংবাদ, দৈনিক ইত্তেফাক, দৈনিক মুক্তকন্ঠ, দৈনিক আজাদ, গণবাংলা, বিবিসি বাংলা বিভাগ, সাপ্তাহিক বিচিত্রা ও বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) বাংলা বিভাগে কাজ করেছেন।
নব্বইয়ের দশকে যুদ্ধাপরাধীদের শাস্তির দাবিতে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আন্দোলনেও তিনি ছিলেন নেতৃস্থানীয় অগ্রসৈনিক।
১৯৯৬ সালে বাসসের বাংলা বিভাগ তার নেতৃত্বে চালু হয়। প্রতিষ্ঠাকালীন প্রধান বার্তা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সবশেষ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সামাজিক বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। সাংবাদিকতার পাশাপাশি শিশু সাহিত্য রচনায় যেমন নাম কুড়িয়েছেন, তেমনি সাংস্কৃতিক কর্মী হিসেবে অথবা নারী নেত্রী ও সচেতন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবেও তিনি পরিচিত ছিলেন।
তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও তার পরিবার, মনে মনে (ছোট গল্প), শেখ মুজিবের ছেলেবেলা (শিশু সাহিত্য), দুঃখ-কষ্ট-ভালোবাসা (উপন্যাস) গণতন্ত্রের মানসকন্যা শেখ হাসিনা, দীপ্তর জন্য ভালোবাসা, আমার রোকেয়া, রোকেয়া পাঠ, টুনুর হারিয়ে যাওয়া, শান্তুর আনন্দ, এক যে ছিলো আনু, মুক্তিযোদ্ধা মানিক, কিশোর সাহিত্য সমগ্র, নিবন্ধ সমগ্র-অন্তরে বাহিরে, পাকিস্তানে বাংলাদেশের নারী পাঁচার এবং পুটুর জন্য ছড়া ও কবিতা।
দৈনিক বাংলা-টাইমস- সরকারি ট্রাস্ট থেকে বিলুপ্ত হওয়ার পর ১৯৯৮ সালে বিচিত্রা নতুন কলেবরে শেখ রেহানার সম্পাদনায় ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের বাড়ি থেকে প্রকাশিত হতো। সেই বিচিত্রার মূল কর্ণধার ছিলেন বেবী মওদুদ। ‘বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ গ্রন্থসহ মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের রাজনৈতিক কর্মকান্ড নিয়ে সহপাঠি, বন্ধু-প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গবেষণা ও সংকলণ করেছেন তিনি। ১৯৪৭ থেকে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক কর্মকান্ড ও তৎকালীন গোয়েন্দা তদন্ত  প্রতিবেদন নিয়ে প্রকাশিত গ্রন্থের গবেষণা ও সংকলনে দায়িত্ব পালন করেছেন বেবী মওদুদ।
নবম জাতীয় সংসদে বেবী মওদুদ আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংরক্ষিত নারী আসন থেকে সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হন। সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি এবং লাইব্রেরী কমিটির সদস্য হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেন।