শিরোনামঃ
সহকর্মীর শ্লীলতাহানীর পরও বহাল তবিয়তে এলজিইডির উপ সহকারী প্রকৌশলী আশরাফ বিটিএ’র পক্ষ থেকে নব নিযুক্ত পরিচালককে অভিনন্দন বিকাশ দেওয়ান ছিলেন একজন সফল এমডি জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থার উদ্যোগে ইফতার সামগ্রী বিতরণ সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা ফেরতের দাবিতে বিক্ষোভ কক্সবাজার বঙ্গবন্ধু বীচ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা বীচ বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে অবস্থান ও বিক্ষোভ মিছিল বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেল শ্রমিক নেতৃবৃন্দের শ্রদ্ধা সুচনাকে মেয়র হিসেবে গ্রহন করলেন ঢাকাস্থ কুমিল্লা মহানগর নাগরিক ফোরাম কক্সবাজারের সুগন্ধা বিচের নতুন নাম ‘বঙ্গবন্ধু বিচ’ করায় ধন্যবাদ জ্ঞাপন গ্রীস ফেরত অসুস্থ বেলায়েত হোসেনের পাশে প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক ও ব্র্যাক

‘মাসুদ রানা’ সিরিজ: আপিলের অনুমতি পেলো কাজী আনোয়ার হোসেনের পরিবার

#
news image

সেবা প্রকাশনীর পাঠকপ্রিয় ‘মাসুদ রানা’ সিরিজের ২৬০টি বই ও ‘কুয়াশা’ সিরিজের ৫০টি বই নিয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে কাজী আনোয়ার হোসেনের পরিবারকে আপিলের অনুমতি (লিভ টু আপিল মঞ্জুর) দিয়েছেন আপিল বিভাগ।

সোমবার (০৮ আগস্ট) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে আনোয়ার হোসেনের পরিবারের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মুরাদ রেজা। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী এবিএম হামিদুল মেসবাহ। রেজিস্ট্রার অব কপিরাইট অফিসের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী ইফতাবুল কামাল অয়ন।

পরে খুরশীদ আলম খান বলেন, আদালত হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি দিয়েছেন। একই সঙ্গে ওই বই বেচাকেনার বিষয়ে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে বলেছেন।

গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর সেবা প্রকাশনীর পাঠকপ্রিয় ‘মাসুদ রানা’ সিরিজের ২৬০টি বই ও ‘কুয়াশা’ সিরিজের ৫০টি বইয়ের লেখক হিসেবে স্বত্ব বা মালিকানা নিয়ে শেখ আব্দুল হাকিমের পক্ষে কপিরাইট অফিসের দেওয়া সিদ্ধান্তের বিষয়ে জারি করা রুল খারিজ করেছেন হাইকোর্ট।

ফলে মালিকানা আব্দুল হাকিমের রইলো বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

ওই দিন কাজী আনোয়ার হোসেনের পরিবারের ওপর আইনজীবী হামিদুল মিসবাহ বলেছিলেন, বাংলাদেশ কপিরাইট আইনের ৭১ ও ৮৯ ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগ শুনানি বা আদেশ দেওয়ার এখতিয়ার কপিরাইট অফিসকে দেওয়া হয়নি। যেহেতু তিনি আদেশ দিয়েছেন সেহেতু আদেশটি এখতিয়ার বহির্ভূত। এ যুক্তিতে হাইকোর্টে আবেদন করেছিলাম। শুনানি শেষে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালত মালিকানা নিয়ে কোনো কথা বলেননি। আর আবেদনকারী কপিরাইট আইনের অধীন জেলা বা দায়রা কোর্টে প্রতিকার চাইতে পারেন বলে অবজারভেশন দিয়েছেন। আমরা আদালতের কাছে চেয়েছিলাম কপিরাইট রেজিস্ট্রারের কাজ অবৈধ ঘোষণা করার জন্য। আদালতের কাছে মনে হয়েছে সংবিধানের ১০২ এর অধীনে এখানে চাওয়ার বিষয় না। এটা মনে করে রুলটি খারিজ করেছেন হাইকোর্ট। আমরা মনে করি এখানে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। তাই আমরা আপিল করব।

খুরশীদ আলম খান বলেছিলেন, এ রায়ের ফলে কপিরাইট অফিসের সিদ্ধান্তই বহাল রাখলো উচ্চ আদালত। তার মানে মালিকানার স্বত্ব আব্দুল হাকিমেরই থাকলো।

এরপর কাজী আনোয়ার হোসেনের পরিবার হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেন।

খুরশীদ আলম খান আরও বলেছিলেন, আমরা বলেছি— শেখ আব্দুল হাকিম এ রিটের গুরুত্বপূর্ণ পক্ষ হওয়ার কথা। কিন্তু শেখ আব্দুল হাকিমকে এ রিটে পক্ষই করেননি কাজী আনোয়ার হোসেন। এ মামলায় একজন অ্যামিকাস কিউরি রাখা হয়েছিল। তিনিও বলেছিলেন রিটে শেখ আব্দুল হাকিমকে পক্ষ করা উচিত ছিল। কিন্তু তাকে এ রিটে পক্ষ করা হয়নি। পরে আদালত রিট ও রুল খারিজ করে রায় দিয়েছেন।

২০১৯ সালের ২৯ জুলাই শেখ আব্দুল হাকিম ‘মাসুদ রানা’ সিরিজের ২৬০টি ও ‘কুয়াশা’ সিরিজের ৫০টি বইয়ের লেখক হিসেবে স্বত্ব বা মালিকানা দাবি করে সেবা প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী কাজী আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ কপিরাইট আইনের ৭১ ও ৮৯ ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগ বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসে দাখিল করেন।

এক বছরেরও বেশি সময় ধরে আইনি লড়াই শেষে ২০২০ সালের ১৪ জুন বাংলাদেশ কপিরাইট অফিস শেখ আবদুল হাকিমের পক্ষে সিদ্ধান্ত দিয়েছে।

এ সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে লেখক কাজী আনোয়ার হোসেন হাইকোর্টে রিট করেন। ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০২০ সালের ১০ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট স্থগিতাদেশ দিয়ে রুল জারি করেন।

২০২০ সালের ১৪ জুন এ বিষয়ে বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসের রেজিস্ট্রার জাফর রাজা চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেছিলেন, ‘শেখ আবদুল হাকিমের দাবি করা ২৬০টি মাসুদ রানার বইয়ের মধ্যে একটি ও কুয়াশার ৫০টি বইয়ের মধ্যে ছয়টিতে লেখক হিসেবে তার নামে কপিরাইট করা আছে। বাকিগুলোর কপিরাইট করা নেই। তবে সেগুলো তার লেখা এটি তিনি প্রমাণ করেছেন। কিন্তু কপিরাইট অন্তর্ভুক্তির কারণে তাকে প্রতিটি বইয়ের জন্য আলাদা করে আবেদন করতে হবে। এরপর প্রতিটি বইয়ের লেখক হিসেবে তার নাম যাওয়ার পাশাপাশি, কপিরাইটও তার হয়ে যাবে। ’

বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসের রায়ে বলা হয়েছে, সুষ্ঠু সমাধান ও ন্যায়বিচারের স্বার্থে কপিরাইট বোর্ড বা বিজ্ঞ আদালত থেকে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগ পর্যন্ত আবেদনকারীর দাবি করা ও তালিকাভুক্ত বইগুলোর প্রকাশ বা বাণিজ্যিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার জন্য প্রতিপক্ষকে নির্দেশনা দেওয়া হলো। এছাড়া প্রতিপক্ষকে আবেদনকারীর কপিরাইট রেজিস্ট্রেশন করা প্রকাশিত বইগুলোর সংস্করণ ও বিক্রিত কপির সংখ্যা এবং বিক্রয় মূল্যের হিসাব বিবরণী এ আদেশ জারির তারিখের পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসে দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হলো।

নিজস্ব প্রতিবেদক

০৮ আগস্ট, ২০২২,  9:03 PM

news image

সেবা প্রকাশনীর পাঠকপ্রিয় ‘মাসুদ রানা’ সিরিজের ২৬০টি বই ও ‘কুয়াশা’ সিরিজের ৫০টি বই নিয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে কাজী আনোয়ার হোসেনের পরিবারকে আপিলের অনুমতি (লিভ টু আপিল মঞ্জুর) দিয়েছেন আপিল বিভাগ।

সোমবার (০৮ আগস্ট) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে আনোয়ার হোসেনের পরিবারের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মুরাদ রেজা। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী এবিএম হামিদুল মেসবাহ। রেজিস্ট্রার অব কপিরাইট অফিসের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী ইফতাবুল কামাল অয়ন।

পরে খুরশীদ আলম খান বলেন, আদালত হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি দিয়েছেন। একই সঙ্গে ওই বই বেচাকেনার বিষয়ে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে বলেছেন।

গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর সেবা প্রকাশনীর পাঠকপ্রিয় ‘মাসুদ রানা’ সিরিজের ২৬০টি বই ও ‘কুয়াশা’ সিরিজের ৫০টি বইয়ের লেখক হিসেবে স্বত্ব বা মালিকানা নিয়ে শেখ আব্দুল হাকিমের পক্ষে কপিরাইট অফিসের দেওয়া সিদ্ধান্তের বিষয়ে জারি করা রুল খারিজ করেছেন হাইকোর্ট।

ফলে মালিকানা আব্দুল হাকিমের রইলো বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

ওই দিন কাজী আনোয়ার হোসেনের পরিবারের ওপর আইনজীবী হামিদুল মিসবাহ বলেছিলেন, বাংলাদেশ কপিরাইট আইনের ৭১ ও ৮৯ ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগ শুনানি বা আদেশ দেওয়ার এখতিয়ার কপিরাইট অফিসকে দেওয়া হয়নি। যেহেতু তিনি আদেশ দিয়েছেন সেহেতু আদেশটি এখতিয়ার বহির্ভূত। এ যুক্তিতে হাইকোর্টে আবেদন করেছিলাম। শুনানি শেষে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালত মালিকানা নিয়ে কোনো কথা বলেননি। আর আবেদনকারী কপিরাইট আইনের অধীন জেলা বা দায়রা কোর্টে প্রতিকার চাইতে পারেন বলে অবজারভেশন দিয়েছেন। আমরা আদালতের কাছে চেয়েছিলাম কপিরাইট রেজিস্ট্রারের কাজ অবৈধ ঘোষণা করার জন্য। আদালতের কাছে মনে হয়েছে সংবিধানের ১০২ এর অধীনে এখানে চাওয়ার বিষয় না। এটা মনে করে রুলটি খারিজ করেছেন হাইকোর্ট। আমরা মনে করি এখানে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। তাই আমরা আপিল করব।

খুরশীদ আলম খান বলেছিলেন, এ রায়ের ফলে কপিরাইট অফিসের সিদ্ধান্তই বহাল রাখলো উচ্চ আদালত। তার মানে মালিকানার স্বত্ব আব্দুল হাকিমেরই থাকলো।

এরপর কাজী আনোয়ার হোসেনের পরিবার হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেন।

খুরশীদ আলম খান আরও বলেছিলেন, আমরা বলেছি— শেখ আব্দুল হাকিম এ রিটের গুরুত্বপূর্ণ পক্ষ হওয়ার কথা। কিন্তু শেখ আব্দুল হাকিমকে এ রিটে পক্ষই করেননি কাজী আনোয়ার হোসেন। এ মামলায় একজন অ্যামিকাস কিউরি রাখা হয়েছিল। তিনিও বলেছিলেন রিটে শেখ আব্দুল হাকিমকে পক্ষ করা উচিত ছিল। কিন্তু তাকে এ রিটে পক্ষ করা হয়নি। পরে আদালত রিট ও রুল খারিজ করে রায় দিয়েছেন।

২০১৯ সালের ২৯ জুলাই শেখ আব্দুল হাকিম ‘মাসুদ রানা’ সিরিজের ২৬০টি ও ‘কুয়াশা’ সিরিজের ৫০টি বইয়ের লেখক হিসেবে স্বত্ব বা মালিকানা দাবি করে সেবা প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী কাজী আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ কপিরাইট আইনের ৭১ ও ৮৯ ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগ বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসে দাখিল করেন।

এক বছরেরও বেশি সময় ধরে আইনি লড়াই শেষে ২০২০ সালের ১৪ জুন বাংলাদেশ কপিরাইট অফিস শেখ আবদুল হাকিমের পক্ষে সিদ্ধান্ত দিয়েছে।

এ সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে লেখক কাজী আনোয়ার হোসেন হাইকোর্টে রিট করেন। ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০২০ সালের ১০ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট স্থগিতাদেশ দিয়ে রুল জারি করেন।

২০২০ সালের ১৪ জুন এ বিষয়ে বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসের রেজিস্ট্রার জাফর রাজা চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেছিলেন, ‘শেখ আবদুল হাকিমের দাবি করা ২৬০টি মাসুদ রানার বইয়ের মধ্যে একটি ও কুয়াশার ৫০টি বইয়ের মধ্যে ছয়টিতে লেখক হিসেবে তার নামে কপিরাইট করা আছে। বাকিগুলোর কপিরাইট করা নেই। তবে সেগুলো তার লেখা এটি তিনি প্রমাণ করেছেন। কিন্তু কপিরাইট অন্তর্ভুক্তির কারণে তাকে প্রতিটি বইয়ের জন্য আলাদা করে আবেদন করতে হবে। এরপর প্রতিটি বইয়ের লেখক হিসেবে তার নাম যাওয়ার পাশাপাশি, কপিরাইটও তার হয়ে যাবে। ’

বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসের রায়ে বলা হয়েছে, সুষ্ঠু সমাধান ও ন্যায়বিচারের স্বার্থে কপিরাইট বোর্ড বা বিজ্ঞ আদালত থেকে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগ পর্যন্ত আবেদনকারীর দাবি করা ও তালিকাভুক্ত বইগুলোর প্রকাশ বা বাণিজ্যিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার জন্য প্রতিপক্ষকে নির্দেশনা দেওয়া হলো। এছাড়া প্রতিপক্ষকে আবেদনকারীর কপিরাইট রেজিস্ট্রেশন করা প্রকাশিত বইগুলোর সংস্করণ ও বিক্রিত কপির সংখ্যা এবং বিক্রয় মূল্যের হিসাব বিবরণী এ আদেশ জারির তারিখের পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসে দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হলো।