শিরোনামঃ
সহকর্মীর শ্লীলতাহানীর পরও বহাল তবিয়তে এলজিইডির উপ সহকারী প্রকৌশলী আশরাফ বিটিএ’র পক্ষ থেকে নব নিযুক্ত পরিচালককে অভিনন্দন বিকাশ দেওয়ান ছিলেন একজন সফল এমডি জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থার উদ্যোগে ইফতার সামগ্রী বিতরণ সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা ফেরতের দাবিতে বিক্ষোভ কক্সবাজার বঙ্গবন্ধু বীচ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা বীচ বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে অবস্থান ও বিক্ষোভ মিছিল বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেল শ্রমিক নেতৃবৃন্দের শ্রদ্ধা সুচনাকে মেয়র হিসেবে গ্রহন করলেন ঢাকাস্থ কুমিল্লা মহানগর নাগরিক ফোরাম কক্সবাজারের সুগন্ধা বিচের নতুন নাম ‘বঙ্গবন্ধু বিচ’ করায় ধন্যবাদ জ্ঞাপন গ্রীস ফেরত অসুস্থ বেলায়েত হোসেনের পাশে প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক ও ব্র্যাক

জলবায়ু অভিবাসীবান্ধব আদর্শ শহর মোংলা

#
news image

জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারে এমন শহরের মডেল হিসেবে বিশ্ব মিডিয়ায় আলোচিত নাম দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলা বাগেরহাটের উপজেলা শহর মোংলা। সুন্দরবন সংলগ্ন উপকূলীয় এ শহরটি জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট অভিবাসনের সম্মুখীন দেশগুলোর জন্য বিকল্প হিসেবে তুলে ধরছে নিজেকে। মোংলাকে এখন বলা হচ্ছে জলবায়ু উদ্বাস্তুদের বিশ্বের অন্যতম আদর্শ শহর।

জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভ্যালেতে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বঙ্গোপসাগরের উপকূলে অবস্থিত বাংলাদেশের বন্দর নগরী মোংলা জলবায়ু সংকটের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে বিশ্বে যে শহরগুলো রয়েছে তাদের এক রোল মডেল।

১১ কিলোমিটার দীর্ঘ বাঁধ, নতুন পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা, পানি শোধনাগার, সেই সঙ্গে ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়ে বাসিন্দাদের সতর্ক করতে লাউড স্পিকারসহ শহরটিতে যেসব অবকাঠামোতে সরকার বিনিয়োগ করছে তার মাধ্যমে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় সহনীয় শহর হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে।

শহরটিতে এত পরিমাণ বিনিয়োগের উদ্দেশ্য হচ্ছে আগামী বছরগুলোতে নিকটবর্তী উপকূলীয় এলাকার হাজার হাজার বাস্তুচ্যুত জলবায়ু অভিবাসীকে আকৃষ্ট করে নিয়ে আসা। ফলে নতুন নতুন অভিবাসীরা মোংলার অর্থনীতিকে চাঙ্গা করে একটি সমৃদ্ধ শিল্পকেন্দ্রে রূপান্তর করতে পারবে।

জলবায়ু অভিবাসীদের দরুন রাজধানী ঢাকার ওপর চাপ না পড়ে ছোট ছোট শহরে সুষম বন্টন হয় সে পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই মোংলা নিয়ে কাজ করছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইসিসিসিএডি)। এ জন্য আইসিসিসিএডি মোংলার মেয়র, স্থানীয় মানুষ এবং এনজিওদের সঙ্গে কাজ করছে যেন শহরটিকে এমনভাবে গড়ে তোলা যাতে আগামী বছরগুলোতে অন্তত এক কোটি অভিবাসীর স্থান সংকুলান হয়।

জলবায়ু পরিবর্তন সারাদেশে অভিবাসনের হারকে ত্বরান্বিত করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২০১৮ সালের বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিবেদনেও ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে, বাংলাদেশে ১ কোটি ৩০ লাখের বেশি মানুষ বা প্রতি সাত জনের একজন ২০৫০ সালের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাস্তুচ্যুত হবে।

আইসিসিসিএডির পরিচালক অধ্যাপক সলিমুল হক বলেন, ‘অনেক আগে থেকেই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে অভিবাসীরা ঢাকায় এসেছে। কিন্তু বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল মেগাসিটিগুলোর একটি ঢাকায় সক্ষমতার চেয়ে কয়েকগুন বেশি মানুষ ধারন করছে। দুর্বল অবকাঠামোর কারণে দেশের ক্রমবর্ধমান অভিবাসন সংকট মোকাবিলার সামর্থ্য ঢাকার নেই। শহরের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষ বস্তিতে বসবাস করছে।

ফলে ঢাকা শহরের বস্তিতে আরও এক কোটি জলবায়ু অভিবাসীর আগমন সামাল দেওয়া খুব কঠিন হবে। আমরা চেষ্টা করছি এই সমস্যা আগে ভাগে বোঝার অন্য উপায় আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা এবং সংকটে পরিনত হওয়ার আগেই মোকাবিলা করা।

আইসিসিসিএডি প্রায় পাঁচ লাখ অভিবাসীকে আশ্রয় দিতে পারে এমন কয়েক ডজন স্যাটেলাইট শহর দেশে বাছাই করেছে। বন্দর বা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের মতো অর্থনৈতিক কেন্দ্রগুলোর কাছেপিঠে এমন বিবেচনায় শহরগুলো বাছাই করা হয়।

অধ্যাপক সলিমুল হক বলেন, স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে বাইরে থেকে আসা অভিবাসীদের সহাবস্থান নিশ্চিত করতে আবাসন এবং স্কুল দীর্ঘমেয়াদে গুরুত্বপূর্ণ হলেও, প্রথমেই দরকার অর্থনৈতিক সংস্থান। সেদিক থেকে মোংলা আইসিসিসিএডির সুপারিশ গ্রহণকারী প্রথম শহর, এখন যা জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে শহুরে অভিযোজন কেমন হতে পারে তার একটি মডেল হিসেবে কাজ করছে। বিশাল রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল এবং ক্রমবর্ধমান অর্থনীতির কারনে হাজার হাজার জলবায়ু অভিবাসীদের টেকসই কর্মসংস্থানের নিশ্চিত গন্তব্য মোংলা। 

মোংলার মেয়র শেখ আবদুর রহমান বলেন, নতুন রেললাইন নির্মাণ ও বন্দরে বড় জাহাজের জন্য চ্যানেল প্রশস্তকরণে ড্রেজিংয়ের মতো প্রকল্পগুলো সম্পন্ন হলে মোংলার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বেড়ে যাবে। এখানে আরও অনেক কারখানা গড়ে উঠবে। তখন অনেক অভিবাসী এখানে চাকরি পাবেন। গত এক দশকে মোংলা শহরে বিশাল পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। দশ বছর আগেও এখানে কিছুই ছিল না। এখন রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে ১০ হাজার শ্রমিক কাজ করছে।

 

অনলাইন ডেস্ক

২১ অক্টোবর, ২০২২,  12:47 AM

news image

জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারে এমন শহরের মডেল হিসেবে বিশ্ব মিডিয়ায় আলোচিত নাম দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলা বাগেরহাটের উপজেলা শহর মোংলা। সুন্দরবন সংলগ্ন উপকূলীয় এ শহরটি জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট অভিবাসনের সম্মুখীন দেশগুলোর জন্য বিকল্প হিসেবে তুলে ধরছে নিজেকে। মোংলাকে এখন বলা হচ্ছে জলবায়ু উদ্বাস্তুদের বিশ্বের অন্যতম আদর্শ শহর।

জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভ্যালেতে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বঙ্গোপসাগরের উপকূলে অবস্থিত বাংলাদেশের বন্দর নগরী মোংলা জলবায়ু সংকটের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে বিশ্বে যে শহরগুলো রয়েছে তাদের এক রোল মডেল।

১১ কিলোমিটার দীর্ঘ বাঁধ, নতুন পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা, পানি শোধনাগার, সেই সঙ্গে ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়ে বাসিন্দাদের সতর্ক করতে লাউড স্পিকারসহ শহরটিতে যেসব অবকাঠামোতে সরকার বিনিয়োগ করছে তার মাধ্যমে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় সহনীয় শহর হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে।

শহরটিতে এত পরিমাণ বিনিয়োগের উদ্দেশ্য হচ্ছে আগামী বছরগুলোতে নিকটবর্তী উপকূলীয় এলাকার হাজার হাজার বাস্তুচ্যুত জলবায়ু অভিবাসীকে আকৃষ্ট করে নিয়ে আসা। ফলে নতুন নতুন অভিবাসীরা মোংলার অর্থনীতিকে চাঙ্গা করে একটি সমৃদ্ধ শিল্পকেন্দ্রে রূপান্তর করতে পারবে।

জলবায়ু অভিবাসীদের দরুন রাজধানী ঢাকার ওপর চাপ না পড়ে ছোট ছোট শহরে সুষম বন্টন হয় সে পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই মোংলা নিয়ে কাজ করছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইসিসিসিএডি)। এ জন্য আইসিসিসিএডি মোংলার মেয়র, স্থানীয় মানুষ এবং এনজিওদের সঙ্গে কাজ করছে যেন শহরটিকে এমনভাবে গড়ে তোলা যাতে আগামী বছরগুলোতে অন্তত এক কোটি অভিবাসীর স্থান সংকুলান হয়।

জলবায়ু পরিবর্তন সারাদেশে অভিবাসনের হারকে ত্বরান্বিত করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২০১৮ সালের বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিবেদনেও ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে, বাংলাদেশে ১ কোটি ৩০ লাখের বেশি মানুষ বা প্রতি সাত জনের একজন ২০৫০ সালের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাস্তুচ্যুত হবে।

আইসিসিসিএডির পরিচালক অধ্যাপক সলিমুল হক বলেন, ‘অনেক আগে থেকেই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে অভিবাসীরা ঢাকায় এসেছে। কিন্তু বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল মেগাসিটিগুলোর একটি ঢাকায় সক্ষমতার চেয়ে কয়েকগুন বেশি মানুষ ধারন করছে। দুর্বল অবকাঠামোর কারণে দেশের ক্রমবর্ধমান অভিবাসন সংকট মোকাবিলার সামর্থ্য ঢাকার নেই। শহরের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষ বস্তিতে বসবাস করছে।

ফলে ঢাকা শহরের বস্তিতে আরও এক কোটি জলবায়ু অভিবাসীর আগমন সামাল দেওয়া খুব কঠিন হবে। আমরা চেষ্টা করছি এই সমস্যা আগে ভাগে বোঝার অন্য উপায় আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা এবং সংকটে পরিনত হওয়ার আগেই মোকাবিলা করা।

আইসিসিসিএডি প্রায় পাঁচ লাখ অভিবাসীকে আশ্রয় দিতে পারে এমন কয়েক ডজন স্যাটেলাইট শহর দেশে বাছাই করেছে। বন্দর বা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের মতো অর্থনৈতিক কেন্দ্রগুলোর কাছেপিঠে এমন বিবেচনায় শহরগুলো বাছাই করা হয়।

অধ্যাপক সলিমুল হক বলেন, স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে বাইরে থেকে আসা অভিবাসীদের সহাবস্থান নিশ্চিত করতে আবাসন এবং স্কুল দীর্ঘমেয়াদে গুরুত্বপূর্ণ হলেও, প্রথমেই দরকার অর্থনৈতিক সংস্থান। সেদিক থেকে মোংলা আইসিসিসিএডির সুপারিশ গ্রহণকারী প্রথম শহর, এখন যা জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে শহুরে অভিযোজন কেমন হতে পারে তার একটি মডেল হিসেবে কাজ করছে। বিশাল রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল এবং ক্রমবর্ধমান অর্থনীতির কারনে হাজার হাজার জলবায়ু অভিবাসীদের টেকসই কর্মসংস্থানের নিশ্চিত গন্তব্য মোংলা। 

মোংলার মেয়র শেখ আবদুর রহমান বলেন, নতুন রেললাইন নির্মাণ ও বন্দরে বড় জাহাজের জন্য চ্যানেল প্রশস্তকরণে ড্রেজিংয়ের মতো প্রকল্পগুলো সম্পন্ন হলে মোংলার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বেড়ে যাবে। এখানে আরও অনেক কারখানা গড়ে উঠবে। তখন অনেক অভিবাসী এখানে চাকরি পাবেন। গত এক দশকে মোংলা শহরে বিশাল পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। দশ বছর আগেও এখানে কিছুই ছিল না। এখন রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে ১০ হাজার শ্রমিক কাজ করছে।