বিদেশি বন্ধু সেজে আন্তর্জাতিক ফাঁদ: পার্সেল প্রতারণায় ‘কুলি থেকে কোটিপতি বিপ্লব লস্কর’
এসএম শামসুজ্জোহা
০৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২, 11:49 PM
বিদেশি বন্ধু সেজে আন্তর্জাতিক ফাঁদ: পার্সেল প্রতারণায় ‘কুলি থেকে কোটিপতি বিপ্লব লস্কর’
বিদেশি বন্ধু সেজে পার্সেল পাঠানোর নামে চলছে প্রতারণা। বিদেশি প্রতারকদের ফাঁদে পা দিয়ে লাখ লাখ টাকা খোয়াচ্ছেন দেশের অনেক মধ্যবিত্ত থেকে ধনাঢ্য ব্যক্তি। নাইজেরিয়ান, অ্যাঙ্গোলিয়ান ও কম্বোডিয়ানসহ বেশকিছু আন্তর্জাতিক প্রতারকরা হাতিয়ে নিচ্ছে বাংলাদেশিদের বিপুল অঙ্কের টাকা।
পুলিশ বলছে, দেশে বসেই ফেসবুক, মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপ চালাত তারা। কিন্তু পরিচয় দিত তারা বিদেশে থাকে। বিদেশি বন্ধু হিসেবে ইংরেজিতে কথাবার্তা ও চ্যাটিংও করত। বিশ^াসযোগ্যতা অর্জনের জন্য সে রকম ছবিও ব্যবহার করত তারা। বিভিন্ন উপায়ে সাধারণ মানুষের ফেসবুক আইডি, হোয়াটসঅ্যাপ, ই-মেইল সংগ্রহ করে ইউএস আর্মি, আমেরিকা-কানাডা দূতাবাস, জাতিসংঘ, কাস্টম অফিস, বিভিন্ন ব্যাংক ও ইউএস নেভিসহ নানান পরিচয়ে বার্তা পাঠানো হয়। টার্গেট করা ব্যক্তিদের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে তোলে প্রতারকরা। এক পর্যায়ে স্বর্ণ, মূল্যবান পাথর, হিরা, বিশাল অংকের বৈদেশিক মুদ্রা, ডলার বা ইউরো ইত্যাদি পাঠানোর কথা বলে ফাঁদে ফেলে আন্তর্জাতিক প্রতারক চক্রটি।
এমন অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার রাতে পার্সেল প্রতারণা চক্রটির মূলহোতা বিপ্লব লস্করসহ ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ। গতকাল দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি প্রধান) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এসব তথ্য জানান।
এ সময় তাদের কাছ থেকে বিদেশি পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলি, একটি ম্যাগজিন, ২৮টি মোবাইল, একটি কম্পিউটার, ৪৯১টি এটিএম কার্ড, ২৬টি চেক বই, তিনটি ওয়ারলেস পকেট রাউটার, একটি প্রাইভেটকার, সাড়ে ৩ লাখ জাল টাকা, নগদ ১১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ও ২৬৩টি সিমকার্ড জব্দ করা হয়। গ্রেফতাররা হলেন- বাংলাদেশি মূলহোতা বিপ্লব লস্কর (৩৪) ও তার সহযোগী সুমন হোসেন ওরফে ইমরান (৩১), মোহসিন হোসেন ওরফে শাওন (৩০), ইমরান হাসান ওরফে ইকবাল (৩০), নাজমুল হক রনি (৩০), মোসা. নুসরাত জাহান (২৪)। এছাড়া নাইজেরিয়ান নাগরিক চিডি (৪০), ইমানুয়েল (২৬), জন (৩১), অ্যাঙ্গোলিয়ান নাগরিক উইলসন ডে কনসিকাউ (৩৫), ক্যামেরুনের নাগরিক গুলগ্নি পাপিনিকে (৩২) গ্রেফতার করা হয়।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিদেশি পরিচয় দিয়ে ফেসবুকের মাধ্যমে বন্ধুত্ব করে উপহার হিসেবে পার্সেলে ইউএস ডলার পাঠানোর কথা বলে চক্রটি। পরে তারা পার্সেল সংগ্রহ, লিগালাইজেশন, ইন্টারন্যাশনাল মর্টগেজের কথা বলে ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে মোট ৬ লাখ ৭৩ হাজার টাকা প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ করে। চক্রের মূলহোতা গ্রেফতার এড়াতে গাড়িতে ও তার সঙ্গে সবসময় ‘নেটওয়ার্ক জ্যামার’ ব্যবহার করতেন। এ কারণে দীর্ঘদিন ধরেও তাকে গ্রেফতার করা যায়নি। এভাবে টাকা কামিয়ে কুলি থেকে ‘কোটিপতি’ হয়েছেন বিপ্লব লস্কর। রাজধানীতে তার রয়েছে একাধিক ফ্ল্যাট ও প্লট। বিদেশিদের প্রতারণার শতাধিক ঘটনার সঙ্গে বিপ্লব লস্করের সম্পৃক্ততার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পেয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা অপরাধ স্বীকার করে। তবে পলাতক আসামিদের মধ্যে রয়েছে- হারুন অর রশিদ কামাল, জসিম সিকদার, হৃদয় আহমেদ, মহসিন, ওসমান গণি, আয়েশা আক্তার রত্না, রেহানা আক্তার, মাহমুদুল হাছান, হালিম ও কাউছার হাসানসহ অজ্ঞাতনামা দেশি-বিদেশিসহ আরও কয়েকজন ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার জানিয়েছে।
পার্সেল প্রতারণার শিকার বনানীর হাবিবুর রহমান প্রভাতী খবরকে বলেন, ২০২২ সালের এপ্রিলে আমার ফেসবুকে জেসিকা ওকার নামের আইডি থেকে একটি রিকোয়েস্ট আসে। রিকোয়েস্ট গ্রহণ করার পর ওই ব্যক্তি জানান, তিনি আফগানিস্তানে থাকেন। পরে তার সঙ্গে আমার হোয়াটসঅ্যাপেও কথা হয়। একদিন জানায়, তার কাছে এক মিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি টাকায় আট কোটি ৫০ লাখ) আছে। সেগুলো বাংলাদেশে আমার মাধ্যমে খরচ করার ইচ্ছা পোষণ করেন। আমি সরল বিশ্বাসে রাজি হলে পার্সেল প্রতারণার মাধ্যমে প্রতারকচক্রের সদস্যরা আমার কাছ থেকে ২১ কোটি ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
পার্সেল প্রতারণার আরেক শিকার উত্তরার বাসিন্দা জামিল হোসেন বলেন, বিদেশি বন্ধু সেজে পার্সেল প্রতারণায় ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা খোয়ানোর পর গত বছরের ২১ জানুয়ারি পল্টন থানায় মামলা করেছি। মামলাটির তদন্ত করছে ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম ইউনিট।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার ও ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদ বলেন, কয়েক বছর ধরে পার্সেল প্রতারণার যেসব ঘটনা ঘটছে, সেগুলোর সবকটিতেই বিপ্লব লস্করের নাম জড়িত। আমরা তাকে অনেকদিন ধরেই খুঁজছি। মূল হোতাসহ কয়েকজনকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, কুলি থেকে কোটিপতি হয়েছে গ্রেফতার বিপ্লব লস্কর। রাজধানীতে তার একাধিক ফ্ল্যাট ও প্লট রয়েছে। বিদেশিদের প্রতারণার শতাধিক ঘটনার সঙ্গে বিপ্লব লস্করের সম্পৃক্ততার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে। গ্রেফতার এড়াতে গাড়িতে ও সঙ্গে সব সময় নেটওয়ার্ক জ্যামার ব্যবহার করতো সে।
ডিবি প্রধান বলেন, বিদেশি প্রতারক চক্রটি গ্রেফতার নুসরাতের মতো বহু বাংলাদেশির সহায়তায় দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে আসছিল। চক্রটি বিভিন্ন ব্যক্তির পাসপোর্ট জাল করে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে শত শত অ্যাকাউন্ট ও ক্রেডিট কার্ড নিতো। এসব ব্যাংকের চেক ও এটিএম কার্ড ব্যবহার করে প্রতারণার মাধ্যমে অর্জিত টাকা তুলে নিতো তারা। টাকা তোলা ও টাকা ভাগাভাগির কাজটি করতো বিপ্লব লস্কর। সে বিদেশি নম্বর ব্যবহার করে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে সবকিছু সরাসরি তদারকি করতো।
গ্রেফতার হওয়া বিপ্লব লস্করের বিরুদ্ধে ঢাকার মোহাম্মদপুর, খিলক্ষেত ও কাফরুল থানায় মানি লন্ডারিংয়ের একাধিক মামলা রয়েছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে বনানী থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাসহ দেশের বিভিন্ন থানায় শতাধিক মামলা রয়েছে।
এসএম শামসুজ্জোহা
০৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২, 11:49 PM
বিদেশি বন্ধু সেজে পার্সেল পাঠানোর নামে চলছে প্রতারণা। বিদেশি প্রতারকদের ফাঁদে পা দিয়ে লাখ লাখ টাকা খোয়াচ্ছেন দেশের অনেক মধ্যবিত্ত থেকে ধনাঢ্য ব্যক্তি। নাইজেরিয়ান, অ্যাঙ্গোলিয়ান ও কম্বোডিয়ানসহ বেশকিছু আন্তর্জাতিক প্রতারকরা হাতিয়ে নিচ্ছে বাংলাদেশিদের বিপুল অঙ্কের টাকা।
পুলিশ বলছে, দেশে বসেই ফেসবুক, মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপ চালাত তারা। কিন্তু পরিচয় দিত তারা বিদেশে থাকে। বিদেশি বন্ধু হিসেবে ইংরেজিতে কথাবার্তা ও চ্যাটিংও করত। বিশ^াসযোগ্যতা অর্জনের জন্য সে রকম ছবিও ব্যবহার করত তারা। বিভিন্ন উপায়ে সাধারণ মানুষের ফেসবুক আইডি, হোয়াটসঅ্যাপ, ই-মেইল সংগ্রহ করে ইউএস আর্মি, আমেরিকা-কানাডা দূতাবাস, জাতিসংঘ, কাস্টম অফিস, বিভিন্ন ব্যাংক ও ইউএস নেভিসহ নানান পরিচয়ে বার্তা পাঠানো হয়। টার্গেট করা ব্যক্তিদের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে তোলে প্রতারকরা। এক পর্যায়ে স্বর্ণ, মূল্যবান পাথর, হিরা, বিশাল অংকের বৈদেশিক মুদ্রা, ডলার বা ইউরো ইত্যাদি পাঠানোর কথা বলে ফাঁদে ফেলে আন্তর্জাতিক প্রতারক চক্রটি।
এমন অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার রাতে পার্সেল প্রতারণা চক্রটির মূলহোতা বিপ্লব লস্করসহ ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ। গতকাল দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি প্রধান) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এসব তথ্য জানান।
এ সময় তাদের কাছ থেকে বিদেশি পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলি, একটি ম্যাগজিন, ২৮টি মোবাইল, একটি কম্পিউটার, ৪৯১টি এটিএম কার্ড, ২৬টি চেক বই, তিনটি ওয়ারলেস পকেট রাউটার, একটি প্রাইভেটকার, সাড়ে ৩ লাখ জাল টাকা, নগদ ১১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ও ২৬৩টি সিমকার্ড জব্দ করা হয়। গ্রেফতাররা হলেন- বাংলাদেশি মূলহোতা বিপ্লব লস্কর (৩৪) ও তার সহযোগী সুমন হোসেন ওরফে ইমরান (৩১), মোহসিন হোসেন ওরফে শাওন (৩০), ইমরান হাসান ওরফে ইকবাল (৩০), নাজমুল হক রনি (৩০), মোসা. নুসরাত জাহান (২৪)। এছাড়া নাইজেরিয়ান নাগরিক চিডি (৪০), ইমানুয়েল (২৬), জন (৩১), অ্যাঙ্গোলিয়ান নাগরিক উইলসন ডে কনসিকাউ (৩৫), ক্যামেরুনের নাগরিক গুলগ্নি পাপিনিকে (৩২) গ্রেফতার করা হয়।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিদেশি পরিচয় দিয়ে ফেসবুকের মাধ্যমে বন্ধুত্ব করে উপহার হিসেবে পার্সেলে ইউএস ডলার পাঠানোর কথা বলে চক্রটি। পরে তারা পার্সেল সংগ্রহ, লিগালাইজেশন, ইন্টারন্যাশনাল মর্টগেজের কথা বলে ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে মোট ৬ লাখ ৭৩ হাজার টাকা প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ করে। চক্রের মূলহোতা গ্রেফতার এড়াতে গাড়িতে ও তার সঙ্গে সবসময় ‘নেটওয়ার্ক জ্যামার’ ব্যবহার করতেন। এ কারণে দীর্ঘদিন ধরেও তাকে গ্রেফতার করা যায়নি। এভাবে টাকা কামিয়ে কুলি থেকে ‘কোটিপতি’ হয়েছেন বিপ্লব লস্কর। রাজধানীতে তার রয়েছে একাধিক ফ্ল্যাট ও প্লট। বিদেশিদের প্রতারণার শতাধিক ঘটনার সঙ্গে বিপ্লব লস্করের সম্পৃক্ততার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পেয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা অপরাধ স্বীকার করে। তবে পলাতক আসামিদের মধ্যে রয়েছে- হারুন অর রশিদ কামাল, জসিম সিকদার, হৃদয় আহমেদ, মহসিন, ওসমান গণি, আয়েশা আক্তার রত্না, রেহানা আক্তার, মাহমুদুল হাছান, হালিম ও কাউছার হাসানসহ অজ্ঞাতনামা দেশি-বিদেশিসহ আরও কয়েকজন ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার জানিয়েছে।
পার্সেল প্রতারণার শিকার বনানীর হাবিবুর রহমান প্রভাতী খবরকে বলেন, ২০২২ সালের এপ্রিলে আমার ফেসবুকে জেসিকা ওকার নামের আইডি থেকে একটি রিকোয়েস্ট আসে। রিকোয়েস্ট গ্রহণ করার পর ওই ব্যক্তি জানান, তিনি আফগানিস্তানে থাকেন। পরে তার সঙ্গে আমার হোয়াটসঅ্যাপেও কথা হয়। একদিন জানায়, তার কাছে এক মিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি টাকায় আট কোটি ৫০ লাখ) আছে। সেগুলো বাংলাদেশে আমার মাধ্যমে খরচ করার ইচ্ছা পোষণ করেন। আমি সরল বিশ্বাসে রাজি হলে পার্সেল প্রতারণার মাধ্যমে প্রতারকচক্রের সদস্যরা আমার কাছ থেকে ২১ কোটি ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
পার্সেল প্রতারণার আরেক শিকার উত্তরার বাসিন্দা জামিল হোসেন বলেন, বিদেশি বন্ধু সেজে পার্সেল প্রতারণায় ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা খোয়ানোর পর গত বছরের ২১ জানুয়ারি পল্টন থানায় মামলা করেছি। মামলাটির তদন্ত করছে ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম ইউনিট।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার ও ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদ বলেন, কয়েক বছর ধরে পার্সেল প্রতারণার যেসব ঘটনা ঘটছে, সেগুলোর সবকটিতেই বিপ্লব লস্করের নাম জড়িত। আমরা তাকে অনেকদিন ধরেই খুঁজছি। মূল হোতাসহ কয়েকজনকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, কুলি থেকে কোটিপতি হয়েছে গ্রেফতার বিপ্লব লস্কর। রাজধানীতে তার একাধিক ফ্ল্যাট ও প্লট রয়েছে। বিদেশিদের প্রতারণার শতাধিক ঘটনার সঙ্গে বিপ্লব লস্করের সম্পৃক্ততার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে। গ্রেফতার এড়াতে গাড়িতে ও সঙ্গে সব সময় নেটওয়ার্ক জ্যামার ব্যবহার করতো সে।
ডিবি প্রধান বলেন, বিদেশি প্রতারক চক্রটি গ্রেফতার নুসরাতের মতো বহু বাংলাদেশির সহায়তায় দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে আসছিল। চক্রটি বিভিন্ন ব্যক্তির পাসপোর্ট জাল করে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে শত শত অ্যাকাউন্ট ও ক্রেডিট কার্ড নিতো। এসব ব্যাংকের চেক ও এটিএম কার্ড ব্যবহার করে প্রতারণার মাধ্যমে অর্জিত টাকা তুলে নিতো তারা। টাকা তোলা ও টাকা ভাগাভাগির কাজটি করতো বিপ্লব লস্কর। সে বিদেশি নম্বর ব্যবহার করে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে সবকিছু সরাসরি তদারকি করতো।
গ্রেফতার হওয়া বিপ্লব লস্করের বিরুদ্ধে ঢাকার মোহাম্মদপুর, খিলক্ষেত ও কাফরুল থানায় মানি লন্ডারিংয়ের একাধিক মামলা রয়েছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে বনানী থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাসহ দেশের বিভিন্ন থানায় শতাধিক মামলা রয়েছে।