শিরোনামঃ
আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নে এখনো সক্রিয় সড়কের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মইনুল হাসান ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ ২০২৪ এর পুনর্জন্ম : উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ নারীর অগ্রগতি ও উন্নয়নে তথ্য অধিকার আইন চর্চার মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে হবে: উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ যশোর, বাগেরহাট ও নড়াইলের ছাত্রদলের কমিটি গঠনের দায়িত্ব পেলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের তিন নেতা ইডিসিএল গিলে খাচ্ছে জগলুল জুড়ীতে ভূয়া রশিদ দিয়ে কুরবানীর পশু বিক্রির অভিযোগ মোমিনের বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা বৃদ্ধির প্রস্তাব অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে নাকচ করায় মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদের বিক্ষোভ মিছিল বর্হিবিশ্বে লন্ডনে স্হাপিত জাতির পিতার ভাস্কর্যে শ্রদ্ধা নিবেদন করলেন গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডঃ সামন্তলাল সেন সহকর্মীর শ্লীলতাহানীর পরও বহাল তবিয়তে এলজিইডির উপ সহকারী প্রকৌশলী আশরাফ বিটিএ’র পক্ষ থেকে নব নিযুক্ত পরিচালককে অভিনন্দন

জনবল সংকটে বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তরের কার্যক্রম স্থবির

#
news image

তীব্র জনবল সংকটের কারণে পরিবেশ অধিদপ্তরের রংপুর বিভাগীয় কার্যালয়ে কার্যক্রম পুরোপুরি স্থবির হয়ে পড়েছে। মোট জনবল আছে তিন ভাগের এক ভাগ মাত্র। তার ওপর বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে অন্যত্র ডেপুটেশনে নিয়ে যাওয়ায় পরিবেশবিরোধী অভিযানসহ সব কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে।

রংপুর বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে এই কার্যালয়ে পরিচালক, উপ-পরিচালকসহ অনুমোদিত ২০ পদের বিপরীতে জনবল থাকার কথা ২৬ জন। কিন্তু বাস্তবে বর্তমানে কর্মরত আছেন মাত্র ৬ জন।

বিভাগীয় কার্যালয়টিতে একমাত্র প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটসহ তিনজন অন্যত্র প্রেষণে দায়িত্ব পালন করছেন। অনুমোদিত ১৩ পদে কোন জনবলই নেই। এই ১৩ পদসহ জনবলশূন্য রয়েছে মোট ১৭ জন।

বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তরা বলছেন অনুমোদিত জনবল অনুযায়ী রংপুর বিভাগীয় কার্যালয়ে প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটের পদ রয়েছে মাত্র একটি। এ পদে দায়িত্বে রয়েছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আলী রাজীব মাহমুদ। কিন্তু তিনি প্রেষণে দায়িত্ব পালন করছেন পরিবেশ অধিদপ্তরের ঢাকা সদর দপ্তরে।

এ কারণে অভিযান পরিচালনা করা বন্ধ হয়ে গেছে। একমাত্র ল্যাব অ্যাটেনডেন্ট পাবনায় এবং অফিস সহায়ক দিনাজপুর জেলা কার্যালয়ে সংযুক্ত করে তারা সেখানে দায়িত্ব পালন করছে প্রধান কার্যালয়ের আদেশে অথচ ওই দুটো পদে রংপুর বিভাগীয় কার্যালয়ে কাউকেই নিয়োগ দেয়া হয়নি।

এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে সিনিয়র কেমিস্ট, জুনিয়র কেমিস্ট, হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা, সিনিয়র টেকনিশিয়ান, সাঁটলিপিকার কাম কম্পিউটার অপারেটর, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর, স্টোরকিপার, প্রসেস সার্ভার, অফিস সহায়ক, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, নমুনা সংগ্রহ সহকারীর দুটি, নিরাপত্তা প্রহরীর দুটি এবং পরিদর্শকের তিনটি পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা জানান পরিবেশ অধিদপ্তরকে শিল্প প্রতিষ্ঠানের দূষণ জরিপ, দূষণকারী শিল্প প্রতিষ্ঠান চিহ্নিতকরণসহ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা, প্রয়োজন অনুসারে বিধিলঙ্ঘনকারী ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা, মামলা দায়ের, পরিবেশ দূষণকারীদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়, জলবায়ুর পরিবর্তনজনিত প্রভাব মোকাবিলায় জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন, শিল্পকারখানা পরিদর্শন ও পরিবেশগত ছাড়পত্র প্রদান, পরিবেশ দূষণ সংক্রান্ত অভিযোগ গ্রহণ, বিভিন্ন এলাকার পুকুর টিউবওয়েল ও খাবার পানির গুণগত মান নির্ণয়ের জন্য নিয়মিত নমুনাসংগ্রহ, পরিবেশগত গণসচেতনতা সৃষ্টি, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও জীব নিরাপত্তায় কার্যক্রম গ্রহণ, পরিবেশগত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বিভিন্ন প্রকল্প ও গবেষণাকর্ম গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন শপিং ব্যাগ উৎপাদন ও বাজারজাতকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণসহ পরিবেশ সংরক্ষণ সংক্রান্ত বিভিন্ন কাজ নিয়মিত পরিচালনা করতে হয়।

ওই কর্মকর্তা আরও জানান, রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় শিল্প প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ইটভাটা রয়েছে ৯৫৩টি। এর মধ্যে অবৈধ ইটভাটা রয়েছে ৮১৯টি। অটোরাইস মিল আছে ৫২১টি।

বিভাগীয় কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জনবলের অভাবে অবৈধ ইটভাটাগুলোতে অভিযান পরিচালনা করা বা পরিবেশ সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ সম্ভব হচ্ছে না। তবুও বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তর ২০২১ সালে ১১০টি অবৈধ ইটভাটায় ২৪টি অভিযান পরিচালনা করে ৪ কোটি ৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা এবং চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ৩২টি ইটভাটায় পাঁচটি অভিযান চালিয়ে ১ কোটি ৪২ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা সম্ভব হয়েছে।

রংপুর বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তরের কার্যালয়ে কোন এক্সকাভেটর যন্ত্র নেই। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় অবৈধ কোন ইটভাটা বা পরিবেশের ক্ষতিকারক অবৈধ অন্য কোন স্থাপনা উচ্ছেদ করতে এক্সকাভেটর যন্ত্র অপরিহার্য হয়ে পড়ে। এক্ষেত্রে এক্সকাভেটর ভাড়া করতে হয়।

এ ব্যাপারে রংপুর বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক সৈয়দ ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘পরিবেশ অধিদপ্তরের কাজ অনেক। বিভাগীয় কার্যালয়ে জনবল থাকার কথা ২৬ জন। বাস্তবে আছে মাত্র ৬ জন। কার্যালয়ের একমাত্র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থেকেও নেই। আমাদের নিজস্ব এক্সকাভেটর যন্ত্র নেই। ভাড়া নিয়ে অভিযান চালাতে হয়। এমন প্রতিকূল অবস্থায় পরিবেশ সংরক্ষণে রংপুর বিভাগে সঠিকভাবে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে স্বীকার করেন তিনি।

জেলা প্রতিনিধি, রংপুর

১৮ মে, ২০২২,  11:19 PM

news image

তীব্র জনবল সংকটের কারণে পরিবেশ অধিদপ্তরের রংপুর বিভাগীয় কার্যালয়ে কার্যক্রম পুরোপুরি স্থবির হয়ে পড়েছে। মোট জনবল আছে তিন ভাগের এক ভাগ মাত্র। তার ওপর বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে অন্যত্র ডেপুটেশনে নিয়ে যাওয়ায় পরিবেশবিরোধী অভিযানসহ সব কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে।

রংপুর বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে এই কার্যালয়ে পরিচালক, উপ-পরিচালকসহ অনুমোদিত ২০ পদের বিপরীতে জনবল থাকার কথা ২৬ জন। কিন্তু বাস্তবে বর্তমানে কর্মরত আছেন মাত্র ৬ জন।

বিভাগীয় কার্যালয়টিতে একমাত্র প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটসহ তিনজন অন্যত্র প্রেষণে দায়িত্ব পালন করছেন। অনুমোদিত ১৩ পদে কোন জনবলই নেই। এই ১৩ পদসহ জনবলশূন্য রয়েছে মোট ১৭ জন।

বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তরা বলছেন অনুমোদিত জনবল অনুযায়ী রংপুর বিভাগীয় কার্যালয়ে প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটের পদ রয়েছে মাত্র একটি। এ পদে দায়িত্বে রয়েছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আলী রাজীব মাহমুদ। কিন্তু তিনি প্রেষণে দায়িত্ব পালন করছেন পরিবেশ অধিদপ্তরের ঢাকা সদর দপ্তরে।

এ কারণে অভিযান পরিচালনা করা বন্ধ হয়ে গেছে। একমাত্র ল্যাব অ্যাটেনডেন্ট পাবনায় এবং অফিস সহায়ক দিনাজপুর জেলা কার্যালয়ে সংযুক্ত করে তারা সেখানে দায়িত্ব পালন করছে প্রধান কার্যালয়ের আদেশে অথচ ওই দুটো পদে রংপুর বিভাগীয় কার্যালয়ে কাউকেই নিয়োগ দেয়া হয়নি।

এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে সিনিয়র কেমিস্ট, জুনিয়র কেমিস্ট, হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা, সিনিয়র টেকনিশিয়ান, সাঁটলিপিকার কাম কম্পিউটার অপারেটর, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর, স্টোরকিপার, প্রসেস সার্ভার, অফিস সহায়ক, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, নমুনা সংগ্রহ সহকারীর দুটি, নিরাপত্তা প্রহরীর দুটি এবং পরিদর্শকের তিনটি পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা জানান পরিবেশ অধিদপ্তরকে শিল্প প্রতিষ্ঠানের দূষণ জরিপ, দূষণকারী শিল্প প্রতিষ্ঠান চিহ্নিতকরণসহ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা, প্রয়োজন অনুসারে বিধিলঙ্ঘনকারী ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা, মামলা দায়ের, পরিবেশ দূষণকারীদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়, জলবায়ুর পরিবর্তনজনিত প্রভাব মোকাবিলায় জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন, শিল্পকারখানা পরিদর্শন ও পরিবেশগত ছাড়পত্র প্রদান, পরিবেশ দূষণ সংক্রান্ত অভিযোগ গ্রহণ, বিভিন্ন এলাকার পুকুর টিউবওয়েল ও খাবার পানির গুণগত মান নির্ণয়ের জন্য নিয়মিত নমুনাসংগ্রহ, পরিবেশগত গণসচেতনতা সৃষ্টি, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও জীব নিরাপত্তায় কার্যক্রম গ্রহণ, পরিবেশগত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বিভিন্ন প্রকল্প ও গবেষণাকর্ম গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন শপিং ব্যাগ উৎপাদন ও বাজারজাতকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণসহ পরিবেশ সংরক্ষণ সংক্রান্ত বিভিন্ন কাজ নিয়মিত পরিচালনা করতে হয়।

ওই কর্মকর্তা আরও জানান, রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় শিল্প প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ইটভাটা রয়েছে ৯৫৩টি। এর মধ্যে অবৈধ ইটভাটা রয়েছে ৮১৯টি। অটোরাইস মিল আছে ৫২১টি।

বিভাগীয় কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জনবলের অভাবে অবৈধ ইটভাটাগুলোতে অভিযান পরিচালনা করা বা পরিবেশ সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ সম্ভব হচ্ছে না। তবুও বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তর ২০২১ সালে ১১০টি অবৈধ ইটভাটায় ২৪টি অভিযান পরিচালনা করে ৪ কোটি ৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা এবং চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ৩২টি ইটভাটায় পাঁচটি অভিযান চালিয়ে ১ কোটি ৪২ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা সম্ভব হয়েছে।

রংপুর বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তরের কার্যালয়ে কোন এক্সকাভেটর যন্ত্র নেই। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় অবৈধ কোন ইটভাটা বা পরিবেশের ক্ষতিকারক অবৈধ অন্য কোন স্থাপনা উচ্ছেদ করতে এক্সকাভেটর যন্ত্র অপরিহার্য হয়ে পড়ে। এক্ষেত্রে এক্সকাভেটর ভাড়া করতে হয়।

এ ব্যাপারে রংপুর বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক সৈয়দ ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘পরিবেশ অধিদপ্তরের কাজ অনেক। বিভাগীয় কার্যালয়ে জনবল থাকার কথা ২৬ জন। বাস্তবে আছে মাত্র ৬ জন। কার্যালয়ের একমাত্র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থেকেও নেই। আমাদের নিজস্ব এক্সকাভেটর যন্ত্র নেই। ভাড়া নিয়ে অভিযান চালাতে হয়। এমন প্রতিকূল অবস্থায় পরিবেশ সংরক্ষণে রংপুর বিভাগে সঠিকভাবে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে স্বীকার করেন তিনি।