কৃচ্ছ্রসাধনে সরকারের সাশ্রয় ৯ হাজার কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক
২২ মে, ২০২২, 1:09 AM

কৃচ্ছ্রসাধনে সরকারের সাশ্রয় ৯ হাজার কোটি টাকা
অর্থনীতির আকাশে কালো মেঘের ছায়ার মধ্যেই চলতি অর্থবছরের (২০২১-২২) বাজেট ঘোষণা করেছিলেন অর্থমন্ত্রী। ধরেই নিয়েছেন একটি টানাপোড়েন প্রবাহের মধ্য দিয়েই শেষ করতে হবে এ যাত্রা। কারণ ওই সময় চলছিল করোনা মহামারি।
বিভিন্ন খাতে কৃচ্ছ সাধনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তখন বিধিনিষেধ দেওয়া হয় সরকারি চাকরিজীবীদের বিদেশ ভ্রমণ ও প্রকল্পের গাড়ি কেনার ওপর। বরাদ্দের ৫০ শতাংশের বেশি ব্যয় না করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে এসে সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পের বেঁচে যাওয়া অর্থ ভিন্ন খাতে স্থানান্তর না করতে নির্দেশনা দেওয়া হয় সব মন্ত্রণালয়কে।
সে পরিস্থিতি অতিক্রম করার আগেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে নতুন করে বৈশ্বিক সংকটের মুখে পড়ে দেশের অর্থনীতি। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সম্প্রতি সরকারি চাকরিজীবীদের সব ধরনের বিদেশ সফর বন্ধ ঘোষণা দেওয়া হয়। কৃচ্ছ সাধনের এসব পদক্ষেপ নেওয়ায় চলতি বাজেটে সরকারের সাশ্রয় হবে প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা। চূড়ান্ত হিসাবে এটি কমবেশি হতে পারে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে পাওয়া গেছে এসব তথ্য।
এদিকে বাংলাদেশের বৈশ্বিক ঝুঁকিগুলোর ক্ষেত্রে প্রয়োজনে আরও কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে সম্প্রতি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ কমাতে সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফর বন্ধ ও কম গুরুত্বপূর্ণ আমদানিনির্ভর প্রকল্পের বাস্তবায়ন পিছিয়ে দেওয়া হবে। বিশ্বের সঙ্গে একত্রিত হয়ে কাজ করতে হবে। বিশ্বের যে সামগ্রিক অবস্থা, তা বিবেচনায় নিয়ে এসব সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, এখনো অর্থবছর শেষ হতে আরও কিছু দিন বাকি আছে। ফলে বিগত সময়ে নেওয়া পদক্ষেপের কারণে সাশ্রয়কৃত মোট অর্থের হিসাব চূড়ান্তের প্রক্রিয়াধীন আছে। তবে চাকরিজীবীদের বিদেশ সফর, প্রশিক্ষণ, প্রকল্পের গাড়ি কেনা, পণ্য ও সেবা ক্রয়সহ কয়েকটি খাতে টাকা খরচের ব্যাপারে শর্ত দেওয়া ছিল।
এসব খাত থেকে বড় অঙ্কের অর্থ সাশ্রয় হবে। তবে প্রয়োজনে কৃষি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ক্ষেত্রে কিছুটা ছাড় দেওয়া হয়েছে। কিন্তু অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের ক্ষেত্রে সব শর্ত পুরোপুরি পালন করা হয়েছে।
জানতে চাইলে সাবেক সিনিয়র অর্থসচিব মাহবুব আহমেদ যুগান্তরকে বলেন, রাজস্ব বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রতি বছর বাজেটের সময় আলোচনা হয়। প্রতি বছর রাজস্ব বাড়ে, কিন্তু কাক্সিক্ষত মাত্রায় বাড়ে না। এজন্য অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রেও সমস্যা হয়। এজন্য অর্থ সাশ্রয়ের জন্য এই মুহূর্তে কিছু এরিয়াতে ব্যয় সংকোচন করতে হবে। কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে অর্থ ব্যয় কমাতে হবে। এদিক থেকে কিছু অর্থ সাশ্রয় হবে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, কৃচ্ছ সাধনের আওতায় চলতি বাজেটে আবর্তক ও মূলধন খাত থেকে ৭ হাজার ৫৯৩ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে। আর বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের পণ্য ও সেবা ক্রয় এবং সম্পদ সংগ্রহ ও পূর্তকাজ খাতে সাশ্রয় হয়েছে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা।
বাজেটে মূলধন ও আবর্তক ব্যয়ের মধ্যে রয়েছে সরকারি চাকরিজীবীদের ভ্রমণ খাত, প্রশিক্ষণ ব্যয়, পরিবহণ কেনা। চলতি বাজেট বাস্তবায়ন শুরু হয় ২০২১ সালের পহেলা জুলাই। বাজেট বাস্তবায়নের পরের দিন সরকারি চাকিরজীবীদের বিদেশ ভ্রমণ খাতে বরাদ্দ ৫০ শতাংশ বেশি ব্যয় করা যাবে না এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় কৃচ্ছ সাধনের অংশ হিসাবে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে অর্থ বিভাগ।
এর ফলে ভ্রমণ ব্যয় খাতে সাশ্রয় হবে ১ হাজার ৬৬ কোটি টাকা। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে বিদেশ ভ্রমণ খাতে মোট বরাদ্দ ছিল ২ হাজার ১৩৩ কোটি টাকা। ওই সময় চলমান বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) এর প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় সরকারের অগ্রাধিকার খাতগুলোতে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার কারণে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
পাশাপাশি সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা ও উন্নয়ন বাজেট (অর্থনৈতিক কোড-৩২৪৪১০১) ভ্রমণ ব্যয় খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয় শুধু জরুরি ও অপরিহার্যের ক্ষেত্রে বিবেচনায় রাখা হয়। তবে চাকরিজীবীদের সব ধরনের রুটিন ভ্রমণ পরিহার করার নির্দেশ দেওয়া হয়। এদিকে বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলায় সম্প্রতি সরকারি চাকরিজীবীদের বিদেশ সফরের নিষেধাজ্ঞা আরও কড়াকড়ি করে দিয়ে পরিপত্র জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
সেখানে বলা হয়, সব ধরনের এক্সপোজার ভিজিট, শিক্ষা সফর, এপিএ ও ইনোভেশনের আওতাভুক্ত ভ্রমণ এবং কর্মশালা ও সেমিনারসহ সব ধরনের বিদেশ সফর বন্ধ থাকবে। সেখানে বলা হয়, কোভিড-১৯ পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার এবং বর্তমান বৈশ্বিক সংকট প্রেক্ষাপটে পরবর্তী আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত বৈদেশিক ভ্রমণ বন্ধ থাকবে। এ আদেশ উন্নয়ন ও পরিচালনা বাজেট উভয় ক্ষেত্রে কার্যকর হবে।
এই পদক্ষেপের মাধ্যমে ভ্রমণ খাতে ব্যয়ের সাশ্রয় আরও বাড়বে। এছাড়া উন্নয়ন প্রকল্পে ৫০ শতাংশের বেশি গাড়ি কেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এছাড়া সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানকে পরিবহণ কেনা ও প্রতিস্থাপনে বরাদ্দের ৫০ শতাংশের বেশি ব্যয় করা যাবে না এমন নির্দেশ দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। এ নির্দেশনার ফলে এসব খাতে সম্ভাব্য ৪ হাজার ৭০৪ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। বাজেটে পরিবহণ কেনাকাটা খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয় ৯ হাজার ৪০৮ কোটি টাকা।
এছাড়া দ্বিতীয় প্রান্তিকে এসে মন্ত্রণালয়গুলোকে টাকা খরচের ব্যাপারে নানা দিকনির্দেশনা দিয়েছে অর্থ বিভাগ। এর মধ্যে রয়েছে কোনোভাবেই অতিরিক্ত বরাদ্দ দাবি ও উন্নয়ন ব্যয়ের সাশ্রয় হওয়া অর্থ পরিচালনা বাজেটে স্থানান্তর করা যাবে না। যেসব প্রকল্প অনুমোদন হয়নি সেসব স্কিমে অর্থ বরাদ্দের প্রস্তাব দেওয়া যাবে না। আর ভিন্ন খাতে স্থানান্তর করা যাবে না উন্নয়ন প্রকল্পের সাশ্রয়কৃত অর্থ।
নির্দেশনায় বলা হয়, মূল বাজেটে সংস্থান ছিল না, এমন কোনো সম্পদ সংগ্রহের নতুন অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হবে না। আর সরবরাহ ও সেবা খাতে বরাদ্দ বাড়ানো যাবে না। অপ্রত্যাশিত খাত থেকে কোনো অর্থ বরাদ্দ হয়ে থাকলে সংশোধিত বাজেটে তার প্রতিফলন নিশ্চিত করতে হবে।
অর্থ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, এ বছর উন্নয়ন প্রকল্পের কোনো অর্থ আটক রাখা হয়নি। কারণ উন্নয়ন না হলে বিনিয়োগ হবে না। আর বিনিয়োগ না হলে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে না। এসব দিকও বিবেচনা করা হয়েছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক
২২ মে, ২০২২, 1:09 AM

অর্থনীতির আকাশে কালো মেঘের ছায়ার মধ্যেই চলতি অর্থবছরের (২০২১-২২) বাজেট ঘোষণা করেছিলেন অর্থমন্ত্রী। ধরেই নিয়েছেন একটি টানাপোড়েন প্রবাহের মধ্য দিয়েই শেষ করতে হবে এ যাত্রা। কারণ ওই সময় চলছিল করোনা মহামারি।
বিভিন্ন খাতে কৃচ্ছ সাধনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তখন বিধিনিষেধ দেওয়া হয় সরকারি চাকরিজীবীদের বিদেশ ভ্রমণ ও প্রকল্পের গাড়ি কেনার ওপর। বরাদ্দের ৫০ শতাংশের বেশি ব্যয় না করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে এসে সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পের বেঁচে যাওয়া অর্থ ভিন্ন খাতে স্থানান্তর না করতে নির্দেশনা দেওয়া হয় সব মন্ত্রণালয়কে।
সে পরিস্থিতি অতিক্রম করার আগেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে নতুন করে বৈশ্বিক সংকটের মুখে পড়ে দেশের অর্থনীতি। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সম্প্রতি সরকারি চাকরিজীবীদের সব ধরনের বিদেশ সফর বন্ধ ঘোষণা দেওয়া হয়। কৃচ্ছ সাধনের এসব পদক্ষেপ নেওয়ায় চলতি বাজেটে সরকারের সাশ্রয় হবে প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা। চূড়ান্ত হিসাবে এটি কমবেশি হতে পারে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে পাওয়া গেছে এসব তথ্য।
এদিকে বাংলাদেশের বৈশ্বিক ঝুঁকিগুলোর ক্ষেত্রে প্রয়োজনে আরও কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে সম্প্রতি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ কমাতে সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফর বন্ধ ও কম গুরুত্বপূর্ণ আমদানিনির্ভর প্রকল্পের বাস্তবায়ন পিছিয়ে দেওয়া হবে। বিশ্বের সঙ্গে একত্রিত হয়ে কাজ করতে হবে। বিশ্বের যে সামগ্রিক অবস্থা, তা বিবেচনায় নিয়ে এসব সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, এখনো অর্থবছর শেষ হতে আরও কিছু দিন বাকি আছে। ফলে বিগত সময়ে নেওয়া পদক্ষেপের কারণে সাশ্রয়কৃত মোট অর্থের হিসাব চূড়ান্তের প্রক্রিয়াধীন আছে। তবে চাকরিজীবীদের বিদেশ সফর, প্রশিক্ষণ, প্রকল্পের গাড়ি কেনা, পণ্য ও সেবা ক্রয়সহ কয়েকটি খাতে টাকা খরচের ব্যাপারে শর্ত দেওয়া ছিল।
এসব খাত থেকে বড় অঙ্কের অর্থ সাশ্রয় হবে। তবে প্রয়োজনে কৃষি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ক্ষেত্রে কিছুটা ছাড় দেওয়া হয়েছে। কিন্তু অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের ক্ষেত্রে সব শর্ত পুরোপুরি পালন করা হয়েছে।
জানতে চাইলে সাবেক সিনিয়র অর্থসচিব মাহবুব আহমেদ যুগান্তরকে বলেন, রাজস্ব বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রতি বছর বাজেটের সময় আলোচনা হয়। প্রতি বছর রাজস্ব বাড়ে, কিন্তু কাক্সিক্ষত মাত্রায় বাড়ে না। এজন্য অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রেও সমস্যা হয়। এজন্য অর্থ সাশ্রয়ের জন্য এই মুহূর্তে কিছু এরিয়াতে ব্যয় সংকোচন করতে হবে। কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে অর্থ ব্যয় কমাতে হবে। এদিক থেকে কিছু অর্থ সাশ্রয় হবে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, কৃচ্ছ সাধনের আওতায় চলতি বাজেটে আবর্তক ও মূলধন খাত থেকে ৭ হাজার ৫৯৩ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে। আর বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের পণ্য ও সেবা ক্রয় এবং সম্পদ সংগ্রহ ও পূর্তকাজ খাতে সাশ্রয় হয়েছে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা।
বাজেটে মূলধন ও আবর্তক ব্যয়ের মধ্যে রয়েছে সরকারি চাকরিজীবীদের ভ্রমণ খাত, প্রশিক্ষণ ব্যয়, পরিবহণ কেনা। চলতি বাজেট বাস্তবায়ন শুরু হয় ২০২১ সালের পহেলা জুলাই। বাজেট বাস্তবায়নের পরের দিন সরকারি চাকিরজীবীদের বিদেশ ভ্রমণ খাতে বরাদ্দ ৫০ শতাংশ বেশি ব্যয় করা যাবে না এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় কৃচ্ছ সাধনের অংশ হিসাবে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে অর্থ বিভাগ।
এর ফলে ভ্রমণ ব্যয় খাতে সাশ্রয় হবে ১ হাজার ৬৬ কোটি টাকা। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে বিদেশ ভ্রমণ খাতে মোট বরাদ্দ ছিল ২ হাজার ১৩৩ কোটি টাকা। ওই সময় চলমান বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) এর প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় সরকারের অগ্রাধিকার খাতগুলোতে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার কারণে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
পাশাপাশি সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা ও উন্নয়ন বাজেট (অর্থনৈতিক কোড-৩২৪৪১০১) ভ্রমণ ব্যয় খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয় শুধু জরুরি ও অপরিহার্যের ক্ষেত্রে বিবেচনায় রাখা হয়। তবে চাকরিজীবীদের সব ধরনের রুটিন ভ্রমণ পরিহার করার নির্দেশ দেওয়া হয়। এদিকে বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলায় সম্প্রতি সরকারি চাকরিজীবীদের বিদেশ সফরের নিষেধাজ্ঞা আরও কড়াকড়ি করে দিয়ে পরিপত্র জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
সেখানে বলা হয়, সব ধরনের এক্সপোজার ভিজিট, শিক্ষা সফর, এপিএ ও ইনোভেশনের আওতাভুক্ত ভ্রমণ এবং কর্মশালা ও সেমিনারসহ সব ধরনের বিদেশ সফর বন্ধ থাকবে। সেখানে বলা হয়, কোভিড-১৯ পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার এবং বর্তমান বৈশ্বিক সংকট প্রেক্ষাপটে পরবর্তী আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত বৈদেশিক ভ্রমণ বন্ধ থাকবে। এ আদেশ উন্নয়ন ও পরিচালনা বাজেট উভয় ক্ষেত্রে কার্যকর হবে।
এই পদক্ষেপের মাধ্যমে ভ্রমণ খাতে ব্যয়ের সাশ্রয় আরও বাড়বে। এছাড়া উন্নয়ন প্রকল্পে ৫০ শতাংশের বেশি গাড়ি কেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এছাড়া সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানকে পরিবহণ কেনা ও প্রতিস্থাপনে বরাদ্দের ৫০ শতাংশের বেশি ব্যয় করা যাবে না এমন নির্দেশ দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। এ নির্দেশনার ফলে এসব খাতে সম্ভাব্য ৪ হাজার ৭০৪ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। বাজেটে পরিবহণ কেনাকাটা খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয় ৯ হাজার ৪০৮ কোটি টাকা।
এছাড়া দ্বিতীয় প্রান্তিকে এসে মন্ত্রণালয়গুলোকে টাকা খরচের ব্যাপারে নানা দিকনির্দেশনা দিয়েছে অর্থ বিভাগ। এর মধ্যে রয়েছে কোনোভাবেই অতিরিক্ত বরাদ্দ দাবি ও উন্নয়ন ব্যয়ের সাশ্রয় হওয়া অর্থ পরিচালনা বাজেটে স্থানান্তর করা যাবে না। যেসব প্রকল্প অনুমোদন হয়নি সেসব স্কিমে অর্থ বরাদ্দের প্রস্তাব দেওয়া যাবে না। আর ভিন্ন খাতে স্থানান্তর করা যাবে না উন্নয়ন প্রকল্পের সাশ্রয়কৃত অর্থ।
নির্দেশনায় বলা হয়, মূল বাজেটে সংস্থান ছিল না, এমন কোনো সম্পদ সংগ্রহের নতুন অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হবে না। আর সরবরাহ ও সেবা খাতে বরাদ্দ বাড়ানো যাবে না। অপ্রত্যাশিত খাত থেকে কোনো অর্থ বরাদ্দ হয়ে থাকলে সংশোধিত বাজেটে তার প্রতিফলন নিশ্চিত করতে হবে।
অর্থ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, এ বছর উন্নয়ন প্রকল্পের কোনো অর্থ আটক রাখা হয়নি। কারণ উন্নয়ন না হলে বিনিয়োগ হবে না। আর বিনিয়োগ না হলে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে না। এসব দিকও বিবেচনা করা হয়েছে।