রাজস্ব আদায়ে ই-পেমেন্ট, পদ্ধতি সহজ, সাড়া সন্তোষজনক

জাহিদ হোসেন বিপ্লব
২২ মে, ২০২২, 8:30 PM

রাজস্ব আদায়ে ই-পেমেন্ট, পদ্ধতি সহজ, সাড়া সন্তোষজনক
আমদানি-রপ্তানি পর্যায়ে শুল্ক্, করসহ সব ধরনের রাজস্ব লেনদেনে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে ই-পেমেন্ট (ইলেকট্রনিক পেমেন্ট) সিস্টেম। বর্তমানে প্রতি মাসে ই-পেমেন্টের মাধ্যমে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা সরকারি কোষাগারে জমা হচ্ছে। প্রতি মাসে জমার পরিমাণ বাড়ছে বলেও জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
ভ্যাট খাতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত ও ভ্যাটদাতাদের সময় সাশ্রয়ে ২০২০ সালে ই-পেমেন্ট সিস্টেম চালু করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
এনবিআরের ভ্যাট পলিসি বিভাগের সদস্য জাকিয়া সুলতানা বলেন, বর্তমানে ই-পেমেন্টের মাধ্যমে প্রতি মাসে প্রায় এক হাজার কোটি টাকার ভ্যাট সরকারি কোষাগারে জমা হচ্ছে। ই-পেমেন্টে সফটওয়্যারে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস বা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমেও ভ্যাট পরিশোধ করা যায়। এ ছাড়া ই-পেমেন্টে যেকোনো অঙ্কের ভ্যাট পরিশোধ করা যায়।
সহজ ও ঝামেলামুক্ত হওয়ায় ভ্যাট প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে ই-পেমেন্ট ব্যবস্থা দিন দিন জনপ্রিয়তা পাচ্ছে বলে জানান তিনি।
ভ্যাট অনলাইন প্রকল্প পরিচালক ও ঢাকা কাস্টমস বন্ড কমিশনার কাজী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ই-পেমেন্টে পরিশোধিত ভ্যাট আইভাস সিস্টেমে (ইন্টিগ্রেটেড ভ্যাট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সিস্টেম) সরকারি কোষাগারে জমা হয়। তবে কোনো প্রতিষ্ঠান ই-পেমেন্টের মাধ্যমে ভ্যাট পরিশোধ করলে তা সঙ্গে সঙ্গে আইভাস সিস্টেমে জমা হয় না।
ই-পেমেন্টে কোনো প্রতিষ্ঠান ভ্যাট পরিশোধ করলে তা বাংলাদেশ ব্যাংকের ট্রেজারিতে জমা হয়। তার এক দিন পর বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সিজিএ কার্যালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন হিসাবরক্ষণ অফিসে জমার তথ্য কাগজ (হার্ডকপি) আসে। পরে হিসাবরক্ষণ অফিসের কর্মকর্তারা তা আইভাসে এন্ট্রি দেয়। তবে আইভাসের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের ট্রেজারি শাখার ইন্টিগ্রেশন না হওয়ায় এক দিন সময় লেগে যায়।
আইভাস ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যে ইন্টিগ্রেশন হলে ই-পেমেন্টে পরিশোধিত ভ্যাট সঙ্গে সঙ্গে আইভাসে যোগ হয়ে যাবে বলে মনে করেন তিনি। এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ও আইভাসের মধ্যে দ্রুত ইন্টিগ্রেশন করার মত দেন এই ভ্যাট কর্মকর্তা।
তিনি আরো বলেন, সিস্টেম সহজ ও সময় সাশ্রয়ী হওয়ায় জনপ্রিয়তার সঙ্গে ভ্যাট পরিশোধের পরিমাণও বাড়ছে।
ভ্যাট অনলাইন সূত্রমতে, বর্তমানে ভ্যাট নিবন্ধনকারী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন লাখ। এর মধ্যে এই বছর মার্চ মাসে রিটার্ন (দাখিলপত্র) জমা দিয়েছে প্রায় দুই লাখ ৪৮ হাজার প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে ভ্যাটদাতারা অনলাইনে ভ্যাট নিবন্ধন, রিটার্ন দাখিল, ট্রেজারি জমা (ই-পেমেন্ট, এ-চালান), রিফান্ড আবেদন ও রিফান্ড গ্রহণ করতে পারেন।
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি রেজওয়ান রহমান বলেন, ই-পেমেন্ট সিস্টেম ব্যবসায়ীদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শুল্ক কর পরিশোধ করতেই ব্যবসায়ীদের অনেক সময়ক্ষেপণ হতো। এখন এই সংকট কেটে গেছে।
ই-পেমেন্ট করতে ছয় ধরনের তথ্য প্রয়োজন হয়। বিল অব এন্ট্রি নম্বর, অর্থবছর, কাস্টম হাউজের অফিস কোড, পরিশোধকৃত শুল্কের পরিমাণ, এআইএন নম্বর এবং ফোন নম্বর। যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে শুল্ক পরিশোধ করা হলে আমদানিকারকের ফোন নম্বরে শুল্ক পরিশোধ সংক্রান্ত কনফার্মেশন এসএমএস পৌঁছে যাবে। আর স্বয়ংক্রিয়ভাবে এসাইকুডা সফটওয়্যার নেটওয়ার্কে শুল্ক পরিশোধ সংক্রান্ত তথ্য আপডেট হবে।
ভ্যাট অনলাইন প্রকল্প এনবিআরের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। ব্যবসায়ীরা ভ্যাটসংক্রান্ত সব কর (ভ্যাট, টার্নওভার কর, সম্পূরক শুল্ক, জরিমানা, সুদ প্রভৃতি) ই-পেমেন্ট সিস্টেম ব্যবহার করে পরিশোধ করতে পারবেন।
অন্যদিকে, ই-পেমেন্ট ব্যবস্থাকে আরও জনপ্রিয় করতে ৫০ লাখ বা তার বেশি ভ্যাটের টাকা ই-পেমেন্টের মাধ্যমে পরিশোধ করা বাধ্যতামূলক করতে আদেশ জারি করা হয় চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে যাতে বলা হয়, ভ্যাট ব্যবস্থা অনলাইন নির্ভর করতে কাজ করছে এনবিআর।
এরই অংশ হিসেবে নতুন ভ্যাট আইন ও বিধিমালা অনুযায়ী যেকোনো একক ট্রেজারি চালানের বিপরীতে ৫০ লাখ বা তার বেশি ভ্যাট ই-পেমেন্ট বা এ-চালানের মাধ্যমে পরিশোধ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
আধুনিক ই-পেমেন্ট বা এ-চালান পদ্ধতি ব্যবহার করে ব্যবসায়ীরা নির্বিঘ্নে দ্রুততম সময়ে রাজস্ব পরিশোধ করতে পারবে এবং এর মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে রাজস্ব জমা নিশ্চিত হবে।
জাহিদ হোসেন বিপ্লব
২২ মে, ২০২২, 8:30 PM

আমদানি-রপ্তানি পর্যায়ে শুল্ক্, করসহ সব ধরনের রাজস্ব লেনদেনে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে ই-পেমেন্ট (ইলেকট্রনিক পেমেন্ট) সিস্টেম। বর্তমানে প্রতি মাসে ই-পেমেন্টের মাধ্যমে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা সরকারি কোষাগারে জমা হচ্ছে। প্রতি মাসে জমার পরিমাণ বাড়ছে বলেও জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
ভ্যাট খাতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত ও ভ্যাটদাতাদের সময় সাশ্রয়ে ২০২০ সালে ই-পেমেন্ট সিস্টেম চালু করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
এনবিআরের ভ্যাট পলিসি বিভাগের সদস্য জাকিয়া সুলতানা বলেন, বর্তমানে ই-পেমেন্টের মাধ্যমে প্রতি মাসে প্রায় এক হাজার কোটি টাকার ভ্যাট সরকারি কোষাগারে জমা হচ্ছে। ই-পেমেন্টে সফটওয়্যারে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস বা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমেও ভ্যাট পরিশোধ করা যায়। এ ছাড়া ই-পেমেন্টে যেকোনো অঙ্কের ভ্যাট পরিশোধ করা যায়।
সহজ ও ঝামেলামুক্ত হওয়ায় ভ্যাট প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে ই-পেমেন্ট ব্যবস্থা দিন দিন জনপ্রিয়তা পাচ্ছে বলে জানান তিনি।
ভ্যাট অনলাইন প্রকল্প পরিচালক ও ঢাকা কাস্টমস বন্ড কমিশনার কাজী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ই-পেমেন্টে পরিশোধিত ভ্যাট আইভাস সিস্টেমে (ইন্টিগ্রেটেড ভ্যাট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সিস্টেম) সরকারি কোষাগারে জমা হয়। তবে কোনো প্রতিষ্ঠান ই-পেমেন্টের মাধ্যমে ভ্যাট পরিশোধ করলে তা সঙ্গে সঙ্গে আইভাস সিস্টেমে জমা হয় না।
ই-পেমেন্টে কোনো প্রতিষ্ঠান ভ্যাট পরিশোধ করলে তা বাংলাদেশ ব্যাংকের ট্রেজারিতে জমা হয়। তার এক দিন পর বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সিজিএ কার্যালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন হিসাবরক্ষণ অফিসে জমার তথ্য কাগজ (হার্ডকপি) আসে। পরে হিসাবরক্ষণ অফিসের কর্মকর্তারা তা আইভাসে এন্ট্রি দেয়। তবে আইভাসের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের ট্রেজারি শাখার ইন্টিগ্রেশন না হওয়ায় এক দিন সময় লেগে যায়।
আইভাস ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যে ইন্টিগ্রেশন হলে ই-পেমেন্টে পরিশোধিত ভ্যাট সঙ্গে সঙ্গে আইভাসে যোগ হয়ে যাবে বলে মনে করেন তিনি। এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ও আইভাসের মধ্যে দ্রুত ইন্টিগ্রেশন করার মত দেন এই ভ্যাট কর্মকর্তা।
তিনি আরো বলেন, সিস্টেম সহজ ও সময় সাশ্রয়ী হওয়ায় জনপ্রিয়তার সঙ্গে ভ্যাট পরিশোধের পরিমাণও বাড়ছে।
ভ্যাট অনলাইন সূত্রমতে, বর্তমানে ভ্যাট নিবন্ধনকারী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন লাখ। এর মধ্যে এই বছর মার্চ মাসে রিটার্ন (দাখিলপত্র) জমা দিয়েছে প্রায় দুই লাখ ৪৮ হাজার প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে ভ্যাটদাতারা অনলাইনে ভ্যাট নিবন্ধন, রিটার্ন দাখিল, ট্রেজারি জমা (ই-পেমেন্ট, এ-চালান), রিফান্ড আবেদন ও রিফান্ড গ্রহণ করতে পারেন।
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি রেজওয়ান রহমান বলেন, ই-পেমেন্ট সিস্টেম ব্যবসায়ীদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শুল্ক কর পরিশোধ করতেই ব্যবসায়ীদের অনেক সময়ক্ষেপণ হতো। এখন এই সংকট কেটে গেছে।
ই-পেমেন্ট করতে ছয় ধরনের তথ্য প্রয়োজন হয়। বিল অব এন্ট্রি নম্বর, অর্থবছর, কাস্টম হাউজের অফিস কোড, পরিশোধকৃত শুল্কের পরিমাণ, এআইএন নম্বর এবং ফোন নম্বর। যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে শুল্ক পরিশোধ করা হলে আমদানিকারকের ফোন নম্বরে শুল্ক পরিশোধ সংক্রান্ত কনফার্মেশন এসএমএস পৌঁছে যাবে। আর স্বয়ংক্রিয়ভাবে এসাইকুডা সফটওয়্যার নেটওয়ার্কে শুল্ক পরিশোধ সংক্রান্ত তথ্য আপডেট হবে।
ভ্যাট অনলাইন প্রকল্প এনবিআরের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। ব্যবসায়ীরা ভ্যাটসংক্রান্ত সব কর (ভ্যাট, টার্নওভার কর, সম্পূরক শুল্ক, জরিমানা, সুদ প্রভৃতি) ই-পেমেন্ট সিস্টেম ব্যবহার করে পরিশোধ করতে পারবেন।
অন্যদিকে, ই-পেমেন্ট ব্যবস্থাকে আরও জনপ্রিয় করতে ৫০ লাখ বা তার বেশি ভ্যাটের টাকা ই-পেমেন্টের মাধ্যমে পরিশোধ করা বাধ্যতামূলক করতে আদেশ জারি করা হয় চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে যাতে বলা হয়, ভ্যাট ব্যবস্থা অনলাইন নির্ভর করতে কাজ করছে এনবিআর।
এরই অংশ হিসেবে নতুন ভ্যাট আইন ও বিধিমালা অনুযায়ী যেকোনো একক ট্রেজারি চালানের বিপরীতে ৫০ লাখ বা তার বেশি ভ্যাট ই-পেমেন্ট বা এ-চালানের মাধ্যমে পরিশোধ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
আধুনিক ই-পেমেন্ট বা এ-চালান পদ্ধতি ব্যবহার করে ব্যবসায়ীরা নির্বিঘ্নে দ্রুততম সময়ে রাজস্ব পরিশোধ করতে পারবে এবং এর মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে রাজস্ব জমা নিশ্চিত হবে।