শিরোনামঃ
ছাত্রলীগ নেতার নেতৃত্বে প্রবাসীর বাসা দখলের চেষ্টা , অর্ধকোটি টাকা চাঁদা দাবি ‘বাবা নেই’ ভিডিও গানের মোড়ক উন্মোচন আগামী পাঁচ বছরে শীর্ষে থাকবে ইমপিরিয়াল লক্ষ্য প্রতিষ্ঠাতার মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ দেশ জনতা পার্টির আলোচনা সভা রহিম আল-হুসাইনি আগা খান পঞ্চম-এর অভিষেক অনুষ্ঠিত আগা খান ৪র্থ আসওয়ান ,মিশরে শায়িত হলেন শিয়া ইসমাইলি মুসলিমদের ৪৯তম ইমাম আগা খানের জানাজা অনুষ্ঠিত মোহাম্মদপুর এলাকায় একটি বাজারের ক্রয়কৃত দোকান দখল, থানায় অভিযোগ আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নে এখনো সক্রিয় সড়কের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মইনুল হাসান ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ ২০২৪ এর পুনর্জন্ম : উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ

দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি - অসহায় মধ্য ও নিম্নবিত্ত

#
news image

চলতি বছরের শুরু থেকে বাজার পরিস্থিতি লাগামহীন হয়ে পড়েছে। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির সাথে আয়ের বৈষম্য ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়ায় সব শ্রেণির মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিড়ম্বনায় পড়ছেন মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষ। তেলকান্ডের পর চালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় প্রায় সব পণ্য সাধারনের নাগালের বাইরে চলে গেছে।  
কারোনাকালে ব্র্যাকের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে দেশের ৯৫ শতাংশ মানুষের আয় কমেছে। বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষ কাজ হারিয়েছে ৬২ শতাংশ। পাশাপাশি পুরোপুরি কর্মহীন হয়েছেন ২৮ শতাংশ মানুষ। করোনার প্রকোপ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসায় মানুষ আবারও যখন আশার আলো দেখছেন। যখন সবকিছু পেছনে ফেলে নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন। ঠিক তখনই ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ হয় এবং তা চলমান হওয়ায় বিশ্বব্যাপি ভোগ্যপণ্যে সংকট দেখা দেয়। দেশে দেশে পণ্যের দাম বাড়তে থাকে। আমাদের দেশেও এর ব্যাতিক্রম হয়নি। পণ্যের বাড়তি দর ক্রেতাদের ভোগান্তিতে ফেলছে। আয়ের তুলনায় ব্যয় বাড়ায় তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। এক্ষেত্রে উচ্চবিত্ত সমন্বয় করলেও মধ্য ও নিন্ম আয়ের মানুষদের কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে। দেশের মধ্যবিত্ত ও নিন্ম আয়ের মানুষের অবস্থা শোচনীয়। এ অবস্থা উত্তরণে খুব বেশি কিছু করার নেই। বাজার পরিস্থিতি বিবেচনা করে কঠোরভাবে মনিটরিংয়ের আওতায় আনা গেলে ভোক্তার উপকার হবে। আর যে বা যারা অনৈতিক ভাবে পণ্যের দাম বাড়ায় তাদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তির আওতায় আনতে হবে। এতে এমন পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব হবে।
বাজারে সব ধরনের চালের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকার পরও চলতি বছরের পুরোটা সময় চালের দাম বাড়তি ছিল। পরিস্থিতি এমন যে, প্রতি মাসে কেজিতে ৩-৪ টাকা করে দাম বাড়ানো হয়েছে। এটা স্পষ্ট যে, জাতিকে বেকায়দায় ফেলতে হটকারির এই দাম বৃদ্ধির পেছনে মিল মালিকদের কারসাজি ছিল; তাদের রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হওয়ার প্রবণতাও এর জন্য দায়ি। তারা বিভিন্ন সময় নানা অজুহাতে চালের দাম মিলপর্যায় থেকে বাড়িয়ে বিক্রি করেছেন। ফলে পাইকারি ও খুচরা বাজারে চালের দাম সমন্বয় করতে হয়েছে। যার প্রভাব পড়েছে ভোক্তা পর্যায়ে। বর্তমানে আমন মৌসুমেও যেখানে বাজারে নতুন ধানের চাল বিক্রি শুরু হয়েছে, সেখানে আবারও নতুন করে কারসাজি করে মিল মালিকরা চালের দাম বাড়িয়েছেন। ফলে রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতি কেজি মোটা চালের দাম আবারও ৫২-৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৪৯ টাকা। আর এক মাস আগে বিক্রি হয়েছে ৪৮ টাকা। আমনের ভরা মৌসুমেও মিল মালিকদের কারসাজিতে চালের দাম বাড়াতে শুরু করেছে। মিলপর্যায়ে দাম বাড়ায় পাইকারি ও খুচরা বাজারে চালের দাম বেড়েছে। যা অযৌক্তিক। বছরের পুরোটা সময় মিল মালিকদের কারসাজিতে চালের দাম বাড়তি ছিল। কথায় কথায় তারা নানা অজুহাতে চালের দাম বাড়িয়েছেন। কিন্তু দেশে চালের পর্যাপ্ত মজুত ও সরবরাহ আছে।
প্রতিকেজি ছোট আকারের মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৩০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগেও ১১৫ টাকা ছিল। আর এক মাস আগে একই দামে বিক্রি হয়েছে। মাঝারি আকারের মসুর ডাল কেজিপ্রতি বিক্রি হয়েছে ১০০-১০৫ টাকা, যা এক মাস আগে ছিল ৯৫-১০০ টাকা। অন্যদিকে ভোজ্যতেলের দামে গত দেড় বছর ধরে ক্রেতার নাভিশ্বাস উঠছে। গত বছর এ সময় পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ছিল ৫৮০ টাকা, যা বৃহস্পতিবার ৭০০-৭৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এছাড়া খুচরাবাজারে প্রতিকেজি খোলা আটা বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকা, যা এক মাস আগে ছিল ৪০-৪৫ টাকা। আমি একজন নতুন প্রজন্মের রাজনীতি সচেতন নাগরিক হিসেবে বাজারে গিয়ে আলাপ করছিলাম, একজন ভোক্তার সাথে। তিনি বললেন, এখন বাজারে এলেই কান্না আসে। বাড়িতে তিন ছেলে-মেয়ে, স্ত্রী ও বৃদ্ধ মা আমার আয়ের ওপর নির্ভরশীল। মাসের বেতন পেয়ে বাজারে এলে অর্ধেকের বেশি টাকা খরচ হয়ে যায়। এরপর বাসা ভাড়া থেকে শুরু করে ছেলেমেয়ের লেখাপড়াসহ অন্যান্য খরচ করার মতো টাকা থাকে না। বাজারে সব ধরনের পণ্য আছে, কিন্তু বিক্রেতাদের অসাধুতার কারণে দাম বেশি। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের তদারকিও চোখে পড়ে না। যে কারণে বিক্রেতারা ক্রেতার পকেট কাটছে। আর এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে না খেয়ে মরতে হবে।
কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) নামক একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে কেবল ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করা আর রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন সভা সেমিনারে গিয়ে তোতা পাখির মত বলা বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি একেবারেই অযৌক্তিক। করোনাকালে সব শ্রেণির মানুষের আয় কমেছে। তবে ব্যয় বেড়েছে অনেক। আর এ ব্যয় বৃদ্ধির প্রধান কারণ হচ্ছে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি। তাই বাজারে অসাধুদের রোধে কঠোর মনিটরিং করতে হবে। প্রয়োজন হলে নতুন বছর থেকে ভোক্তার স্বার্থে বাজার ব্যবস্থাপনা নতুন করে ঢেলে সাজাতে হবে। কিন্তু আমি যখন নতুন প্রজন্মের রাজনীতিক হিসেবে বাজারে যাই, ব্যথিত করে আমাকে। কোন ব্যবস্থাপনা নেই দ্রব্যমূল্য কমানোর জন্য। যা আছে, তা কেবল হু হু করে বেড়ে যাওয়া মূল্যকে মনিটরিং-এর নামে মানুষের কাঁধে চাপিয়ে দেয়ার অপচেষ্টা। 
ভয়ংকর দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির রাস্তায় অগ্রসর হতে থাকলে হয়তো আবারো আফরোজার আত্মহত্যার সংবাদ পড়তে হবে পত্রিকার পাতায়। যেখাবে ক্ষুধার জ্বালা সহ্য করতে না পেরে সিরাজগঞ্জের বেলকুচি পৌর এলাকায় আফরোজা খাতুন (১০) নামে এক শিশু আত্মহত্যা করেছিলো, সেভাবে আর কোন ১০ বছরের শিশুর আত্মহত্যার সংবাদ পত্রিকার পাতায় দেখতে চাই না। যতদূর জেনেছি- আফরোজার বাবা আলম শেখ পেশায় তাঁত শ্রমিক। থাকেন কামারপাড়া ওয়াপদা বাঁধে। দুস্থ পরিবারটির সন্তান আফরোজা আত্মহত্যা করেছে মূলত ক্ষুধার জ্বালা সহ্য করতে না পেরে। সে কয়েক দফা খাবার চেয়েছে বাবার কাছে। কিন্তু খাবারের বদলে ধমক শুনতে হয়েছে শিশুকে। বেশ কয়েকদিন ধরে অনাহারে রয়েছে পরিবারটি। খাবারের জন্য কান্নাকাটি করায় বাবা ধমক দেন আফরোজাকে। তারপরই ঘটে আত্মহত্যার ঘটনা। গণমাধ্যমে এসেছিলো যে, স্বজনদের দাবি- তাঁত শ্রমিক আলম শেখের কারখানা বন্ধ ১০ দিন। জমা টাকায় ৪-৫ দিন সংসার চললেও কয়েকদিন কার্যত অনাহারে ছিলেন শিশুসহ পরিবারের সদস্যরা। এ সময়ে আলম পাননি সরকারি অথবা বেসরকারি সহায়তা। 
এমন ঘটনার পূনরাবৃত্তি চাই না। আর চাই রাষ্ট্রীয়ভাবে পদক্ষেপ। যাতে করে দ্রব্যমূল্য কমানোর জন্য কথা কম বলে কার্যত ব্যবস্থা নেয়া হয়। মনিটরিং টিম যেন দ্রব্যমূল্য কমানোর তদারকি করে। রাষ্ট্র যেন হয় জনবান্ধব, ব্যবসায়ী বান্ধব নয়। এমন প্রত্যয়ে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদৃষ্টি চায় আমজনতা...

নিজস্ব প্রতিবেদক

১২ জুন, ২০২২,  11:45 PM

news image

চলতি বছরের শুরু থেকে বাজার পরিস্থিতি লাগামহীন হয়ে পড়েছে। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির সাথে আয়ের বৈষম্য ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়ায় সব শ্রেণির মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিড়ম্বনায় পড়ছেন মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষ। তেলকান্ডের পর চালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় প্রায় সব পণ্য সাধারনের নাগালের বাইরে চলে গেছে।  
কারোনাকালে ব্র্যাকের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে দেশের ৯৫ শতাংশ মানুষের আয় কমেছে। বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষ কাজ হারিয়েছে ৬২ শতাংশ। পাশাপাশি পুরোপুরি কর্মহীন হয়েছেন ২৮ শতাংশ মানুষ। করোনার প্রকোপ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসায় মানুষ আবারও যখন আশার আলো দেখছেন। যখন সবকিছু পেছনে ফেলে নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন। ঠিক তখনই ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ হয় এবং তা চলমান হওয়ায় বিশ্বব্যাপি ভোগ্যপণ্যে সংকট দেখা দেয়। দেশে দেশে পণ্যের দাম বাড়তে থাকে। আমাদের দেশেও এর ব্যাতিক্রম হয়নি। পণ্যের বাড়তি দর ক্রেতাদের ভোগান্তিতে ফেলছে। আয়ের তুলনায় ব্যয় বাড়ায় তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। এক্ষেত্রে উচ্চবিত্ত সমন্বয় করলেও মধ্য ও নিন্ম আয়ের মানুষদের কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে। দেশের মধ্যবিত্ত ও নিন্ম আয়ের মানুষের অবস্থা শোচনীয়। এ অবস্থা উত্তরণে খুব বেশি কিছু করার নেই। বাজার পরিস্থিতি বিবেচনা করে কঠোরভাবে মনিটরিংয়ের আওতায় আনা গেলে ভোক্তার উপকার হবে। আর যে বা যারা অনৈতিক ভাবে পণ্যের দাম বাড়ায় তাদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তির আওতায় আনতে হবে। এতে এমন পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব হবে।
বাজারে সব ধরনের চালের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকার পরও চলতি বছরের পুরোটা সময় চালের দাম বাড়তি ছিল। পরিস্থিতি এমন যে, প্রতি মাসে কেজিতে ৩-৪ টাকা করে দাম বাড়ানো হয়েছে। এটা স্পষ্ট যে, জাতিকে বেকায়দায় ফেলতে হটকারির এই দাম বৃদ্ধির পেছনে মিল মালিকদের কারসাজি ছিল; তাদের রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হওয়ার প্রবণতাও এর জন্য দায়ি। তারা বিভিন্ন সময় নানা অজুহাতে চালের দাম মিলপর্যায় থেকে বাড়িয়ে বিক্রি করেছেন। ফলে পাইকারি ও খুচরা বাজারে চালের দাম সমন্বয় করতে হয়েছে। যার প্রভাব পড়েছে ভোক্তা পর্যায়ে। বর্তমানে আমন মৌসুমেও যেখানে বাজারে নতুন ধানের চাল বিক্রি শুরু হয়েছে, সেখানে আবারও নতুন করে কারসাজি করে মিল মালিকরা চালের দাম বাড়িয়েছেন। ফলে রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতি কেজি মোটা চালের দাম আবারও ৫২-৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৪৯ টাকা। আর এক মাস আগে বিক্রি হয়েছে ৪৮ টাকা। আমনের ভরা মৌসুমেও মিল মালিকদের কারসাজিতে চালের দাম বাড়াতে শুরু করেছে। মিলপর্যায়ে দাম বাড়ায় পাইকারি ও খুচরা বাজারে চালের দাম বেড়েছে। যা অযৌক্তিক। বছরের পুরোটা সময় মিল মালিকদের কারসাজিতে চালের দাম বাড়তি ছিল। কথায় কথায় তারা নানা অজুহাতে চালের দাম বাড়িয়েছেন। কিন্তু দেশে চালের পর্যাপ্ত মজুত ও সরবরাহ আছে।
প্রতিকেজি ছোট আকারের মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৩০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগেও ১১৫ টাকা ছিল। আর এক মাস আগে একই দামে বিক্রি হয়েছে। মাঝারি আকারের মসুর ডাল কেজিপ্রতি বিক্রি হয়েছে ১০০-১০৫ টাকা, যা এক মাস আগে ছিল ৯৫-১০০ টাকা। অন্যদিকে ভোজ্যতেলের দামে গত দেড় বছর ধরে ক্রেতার নাভিশ্বাস উঠছে। গত বছর এ সময় পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ছিল ৫৮০ টাকা, যা বৃহস্পতিবার ৭০০-৭৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এছাড়া খুচরাবাজারে প্রতিকেজি খোলা আটা বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকা, যা এক মাস আগে ছিল ৪০-৪৫ টাকা। আমি একজন নতুন প্রজন্মের রাজনীতি সচেতন নাগরিক হিসেবে বাজারে গিয়ে আলাপ করছিলাম, একজন ভোক্তার সাথে। তিনি বললেন, এখন বাজারে এলেই কান্না আসে। বাড়িতে তিন ছেলে-মেয়ে, স্ত্রী ও বৃদ্ধ মা আমার আয়ের ওপর নির্ভরশীল। মাসের বেতন পেয়ে বাজারে এলে অর্ধেকের বেশি টাকা খরচ হয়ে যায়। এরপর বাসা ভাড়া থেকে শুরু করে ছেলেমেয়ের লেখাপড়াসহ অন্যান্য খরচ করার মতো টাকা থাকে না। বাজারে সব ধরনের পণ্য আছে, কিন্তু বিক্রেতাদের অসাধুতার কারণে দাম বেশি। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের তদারকিও চোখে পড়ে না। যে কারণে বিক্রেতারা ক্রেতার পকেট কাটছে। আর এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে না খেয়ে মরতে হবে।
কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) নামক একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে কেবল ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করা আর রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন সভা সেমিনারে গিয়ে তোতা পাখির মত বলা বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি একেবারেই অযৌক্তিক। করোনাকালে সব শ্রেণির মানুষের আয় কমেছে। তবে ব্যয় বেড়েছে অনেক। আর এ ব্যয় বৃদ্ধির প্রধান কারণ হচ্ছে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি। তাই বাজারে অসাধুদের রোধে কঠোর মনিটরিং করতে হবে। প্রয়োজন হলে নতুন বছর থেকে ভোক্তার স্বার্থে বাজার ব্যবস্থাপনা নতুন করে ঢেলে সাজাতে হবে। কিন্তু আমি যখন নতুন প্রজন্মের রাজনীতিক হিসেবে বাজারে যাই, ব্যথিত করে আমাকে। কোন ব্যবস্থাপনা নেই দ্রব্যমূল্য কমানোর জন্য। যা আছে, তা কেবল হু হু করে বেড়ে যাওয়া মূল্যকে মনিটরিং-এর নামে মানুষের কাঁধে চাপিয়ে দেয়ার অপচেষ্টা। 
ভয়ংকর দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির রাস্তায় অগ্রসর হতে থাকলে হয়তো আবারো আফরোজার আত্মহত্যার সংবাদ পড়তে হবে পত্রিকার পাতায়। যেখাবে ক্ষুধার জ্বালা সহ্য করতে না পেরে সিরাজগঞ্জের বেলকুচি পৌর এলাকায় আফরোজা খাতুন (১০) নামে এক শিশু আত্মহত্যা করেছিলো, সেভাবে আর কোন ১০ বছরের শিশুর আত্মহত্যার সংবাদ পত্রিকার পাতায় দেখতে চাই না। যতদূর জেনেছি- আফরোজার বাবা আলম শেখ পেশায় তাঁত শ্রমিক। থাকেন কামারপাড়া ওয়াপদা বাঁধে। দুস্থ পরিবারটির সন্তান আফরোজা আত্মহত্যা করেছে মূলত ক্ষুধার জ্বালা সহ্য করতে না পেরে। সে কয়েক দফা খাবার চেয়েছে বাবার কাছে। কিন্তু খাবারের বদলে ধমক শুনতে হয়েছে শিশুকে। বেশ কয়েকদিন ধরে অনাহারে রয়েছে পরিবারটি। খাবারের জন্য কান্নাকাটি করায় বাবা ধমক দেন আফরোজাকে। তারপরই ঘটে আত্মহত্যার ঘটনা। গণমাধ্যমে এসেছিলো যে, স্বজনদের দাবি- তাঁত শ্রমিক আলম শেখের কারখানা বন্ধ ১০ দিন। জমা টাকায় ৪-৫ দিন সংসার চললেও কয়েকদিন কার্যত অনাহারে ছিলেন শিশুসহ পরিবারের সদস্যরা। এ সময়ে আলম পাননি সরকারি অথবা বেসরকারি সহায়তা। 
এমন ঘটনার পূনরাবৃত্তি চাই না। আর চাই রাষ্ট্রীয়ভাবে পদক্ষেপ। যাতে করে দ্রব্যমূল্য কমানোর জন্য কথা কম বলে কার্যত ব্যবস্থা নেয়া হয়। মনিটরিং টিম যেন দ্রব্যমূল্য কমানোর তদারকি করে। রাষ্ট্র যেন হয় জনবান্ধব, ব্যবসায়ী বান্ধব নয়। এমন প্রত্যয়ে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদৃষ্টি চায় আমজনতা...