শিরোনামঃ
ছাত্রলীগ নেতার নেতৃত্বে প্রবাসীর বাসা দখলের চেষ্টা , অর্ধকোটি টাকা চাঁদা দাবি ‘বাবা নেই’ ভিডিও গানের মোড়ক উন্মোচন আগামী পাঁচ বছরে শীর্ষে থাকবে ইমপিরিয়াল লক্ষ্য প্রতিষ্ঠাতার মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ দেশ জনতা পার্টির আলোচনা সভা রহিম আল-হুসাইনি আগা খান পঞ্চম-এর অভিষেক অনুষ্ঠিত আগা খান ৪র্থ আসওয়ান ,মিশরে শায়িত হলেন শিয়া ইসমাইলি মুসলিমদের ৪৯তম ইমাম আগা খানের জানাজা অনুষ্ঠিত মোহাম্মদপুর এলাকায় একটি বাজারের ক্রয়কৃত দোকান দখল, থানায় অভিযোগ আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নে এখনো সক্রিয় সড়কের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মইনুল হাসান ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ ২০২৪ এর পুনর্জন্ম : উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ

আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে নিহত সহস্রাধিক, আহত ১৫০০

#
news image

আফগানিস্তানে পাকতিকা প্রদেশে ভূমিকম্পে কমপক্ষে সহাস্রাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন।এছাড়া আহত হয়েছেন ১ হাজার ৫০০ জন।মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে । গতকাল বুধবার ভোরে দেশটিতে এ ভূকম্পন আঘাত হানে। যার গভীরতা ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে ৫১ কিলোমিটার। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল আফগানিস্তানের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় খোস্ত শহর থেকে ৪৪ কিলোমিটার দূরে বলে জানিয়েছে মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ৬ দশমিক ১ । তবে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন দেশটির কর্মকর্তারা। বুধবার গভীর রাতে আফগানিস্তানের পাকতিকা ও খোস্ত প্রদেশে এই ভূমিকম্পে আহত হয়েছেন আরও ৬০০ জনের বেশি।কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দুর্গম পার্বত্য গ্রাম থেকে তথ্য পেতে দেরি হচ্ছে। ফলে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে।
পাকতিকা প্রদেশের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আমিন হাজিফি বিবিসিকে জানান, ভূমিকম্পের ঘটনায় এখন পর্যন্ত এক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরো ১৫০০ জন। নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধানে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে উদ্ধারকারীরা।মারাত্মকভাবে আহত স্থানীয় এক সাংবাদিক বিবিসিকে বলেন, ‘পাকতিকার যে রাস্তায় আপনি যাবেন সেখানেই প্রিয়জন হারানোদের আর্তনাদ শুনতে পাবেন।  প্রতিটি বাড়িঘর একেবারেই ধ্বংস হয়ে গেছে।’অপর এক সাংবাদিক বলেন, ‘ভূমিকম্পের কারণে মোবাইল ফোনের টাওয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। সামনে মৃত্যুর সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।’
এদিকে তালেবান কর্মকর্তারা দেশটির পূর্বাঞ্চলে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় যাওয়ার জন্য বিভিন্ন সাহায্য সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।তালেবান নেতা হিবাতুল্লা আখুন্দজাদা বলেছেন, ভূমিকম্পে শতাধিক ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে। মৃতের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে।বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, পাকতিকা প্রদেশে মাটির তৈরি বাড়িগুলি ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। আহতদের উদ্ধারে তৎপর থাকতে দেখা গেছে উদ্ধারকারীদের। প্রত্যন্ত অঞ্চলে, হেলিকপ্টার দিয়ে হতাহতদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেখা গেছে।
স্থানীয় একজন চিকিৎসক বিবিসিকে জানান, বেশিরভাগ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে প্রদেশটির গায়ান ও বারমাল জেলায়। স্থানীয় মিডিয়া সাইট ইতিলাত-ই রোজ জানিয়েছে, গায়ানের একটি গ্রাম ভূমিকম্পে পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে।
তালেবান সরকারের মুখপাত্র বিলাল করিমি এক টুইট বার্তায় লেখেন, দুর্ভাগ্যবশত, গতরাতে পাকতিকা প্রদেশের ৪টি জেলায় একটি প্রবল ভূমিকম্প হয়েছে, যার ফলে আমাদের শতাধিক দেশবাসী নিহত ও আহত হয়েছে এবং বহু ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে। আমরা আরও বিপর্যয় এড়াতে অবিলম্বে এসব এলাকায় দল পাঠানোর জন্য সব সাহায্য সংস্থাকে অনুরোধ করছি।তিনি আরো বলেন, ‘বিপর্যয় এড়াতে আমরা ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাগুলোতে প্রতিনিধি পাঠাতে প্রতিটি সাহায্যকারী সংস্থাকে অনুরোধ জানিয়েছি।’
জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয়ের কার্যালয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১০ বছরে আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে সাত হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। জাতিসংঘের মানবিক কল্যাণবিষয়ক সমন্বয় কার্যালয় (ইউএনওসিএইচএ) বলেছে, মানবিক সংস্থাগুলোকে উদ্ধার প্রচেষ্টায় সহায়তা করার অনুরোধ জানিয়েছে আফগানিস্তান। সংস্থার উদ্ধারকারী দলগুলোকে ভূমিকম্প-বিধ্বস্ত এলাকায় পাঠানো হচ্ছে।
এদিকে জিও নিউজ জানিয়েছে, ইসলামাবাদ, মুলতান, ভাক্কর, ফলিয়ে, পেশোয়ার, মালাকান্দ, সোয়াট, মিয়ানওয়ালি, পাকপত্তন, বুনেরসহ পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে কম্পন অনুভূত হয়েছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে এতে পাকিস্তানে কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা সালাউদ্দিন আইয়ুবি জানিয়েছেন, আহতদের উদ্ধারে এবং খাবার ও জরুরি চিকিৎসা পণ্য পরিবহনে হেলিকপ্টার মোতায়েন করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘কিছু গ্রাম পাহাড়ের দুর্গম অঞ্চলে থাকায় মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে এবং বিস্তারিত সংগ্রহ করতে কিছুটা সময় লাগবে’।
২০০২ সালের পর আফগানিস্তানের সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্প হয়েছে বুধবার ভোরে। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির উৎপত্তি হয়েছে পাকিস্তান সীমান্তবর্তী দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ খোস্ত থেকে প্রায় ৪৪ কিলোমিটার দূরে।সবচেয়ে বেশি নিহতের ঘটনা নিশ্চিত হওয়া গেছে পাকতিকা প্রদেশে। সেখানে ২৫৫ জন নিহত এবং আরও দুই শতাধিক মানুষ আহতের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে বলে জানান সালাউদ্দিন আইয়ুবি। এছাড়া খোস্ত প্রদেশে আরও ২৫ জন নিহত এবং ৯০ জনকে হাসপাতালে নেওয়ার তথ্য জানান তিনি।ক্ষমতাসীন তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা এক বিবৃতিতে ভূমিকম্পে হতাহতদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তারা বলেছেন, প্রত্যন্ত পার্বত্য অঞ্চলের গ্রামগুলোর ক্ষয়ক্ষতির তথ্য পেতে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। যে কারণে ভূমিকম্পে হতাহতের সংখ্যা আরও অনেক বাড়তে পারে। আফগানিস্তানের গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যাচ্ছে, ভূমিকম্পের আঘাতে অনেক ঘরবাড়ি একেবারে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং কম্বলে ঢাকা কিছু মরদেহ মাটিতে পড়ে আছে।
দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা সালাহউদ্দিন আইয়ুবী বলেছেন, উদ্ধার কাজ পরিচালনা, আহতদের কাছে চিকিৎসা সামগ্রী এবং খাদ্য পৌঁছানোর জন্য হেলিকপ্টার মোতায়েন করা হয়েছে। তিনি বলেছেন, কিছু গ্রাম পাহাড়ের প্রত্যন্ত অঞ্চলে হওয়ায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে এবং এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করতেও কিছুটা সময় লাগবে।২০০২ সালের পর বুধবারের এই ভূমিকম্পটি আফগানিস্তানে সবচেয়ে প্রাণঘাতী। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) বলছে, বুধবার ভোরের দিকে আফগানিস্তানের দক্ষিণপূর্বাঞ্চলের প্রত্যন্ত পার্বত্যাঞ্চলীয় খোস্ত প্রদেশ থেকে ৪৪ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে পাকিস্তান সীমান্তের কাছে ভূপৃষ্ঠের ৫০ দশমিক ৮ কিলোমিটার গভীরে ভূমিকম্পটির উৎপত্তি হয়েছে।
ভূমিকম্পে নিশ্চিত মৃত্যুর বেশিরভাগই পূর্বাঞ্চলীয় পাকতিকা প্রদেশের। এই প্রদেশে ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত ২৫৫ জন নিহত এবং আরও ২০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন আইয়ুবী। এছাড়া খোস্ত প্রদেশে আরও ২৫ জন নিহত এবং ৯০ জনকে আহত অবস্থায় উদ্ধারের পর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
রয়টার্স বলছে, গত আগস্টে বিদেশি সৈন্যদের বিদায়ের পর সশস্ত্র এই গোষ্ঠী ক্ষমতায় আসায় আফগানিস্তানের সঙ্গে বেশির ভাগ দাতব্য সংস্থার সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন রয়েছে। যে কারণে প্রাকৃতিক এই দুযোর্গ মোকাবিলা তালেবান সরকারের জন্য বড় ধরনের পরীক্ষা হতে পারে।
এক টুইট ইউরোপীয় ভূমধ্যসাগরীয় ভূমিকম্প কেন্দ্র (ইএমএসসি) বার্তায় বলেছে, পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং ভারতের প্রায় ১১ কোটি ৯০ লাখ মানুষ কম্পন অনুভব করেছেন। তবে পাকিস্তান এবং ভারতে তাৎক্ষণিকভাবে কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
তালেবান ক্ষমতা নেওয়ার পর আফগানিস্তান যখন তীব্র অর্থনৈতিক সংকটে ধুকছে, তখনই প্রাকৃতিক এই দুর্যোগ আঘাত হেনেছে। দুই দশকের যুদ্ধ শেষে মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা জোট সৈন্যদের প্রত্যাহার করে নেওয়ায় গত আগস্টে দেশটির ক্ষমতায় আসে এই গোষ্ঠী।তালেবানের ক্ষমতাগ্রহণের প্রতিক্রিয়ায় অনেক দেশ আফগানিস্তানের ব্যাংক খাতের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এছাড়া অনেক দেশ ও সংস্থা আফগানিস্তানে কোটি কোটি ডলারের উন্নয়ন সহায়তা স্থগিত করেছে। তবে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক কিছু সংস্থা এখনও দেশটিতে মানবিক সহায়তা অব্যাহত রেখেছে।
আফগানিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছেন, তারা আন্তর্জাতিক সহায়তায় স্বাগত জানাবে। প্রতিবেশী দেশটিতে সহায়তার জন্য কাজ চলছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তান।এর আগে, ২০১৫ সালে দেশটির উত্তরপূর্বাঞ্চলে শক্তিশালী এক ভূমিকম্পে পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানে ২০০ জনের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে। ২০০২ সালে ৬ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্পে আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলে প্রাণ যায় প্রায় ১ হাজার মানুষের। এছাড়া ১৯৯৮ সালে একই মাত্রার ভূমিকম্পে দেশটির উত্তরপূর্বাঞ্চলে কমপক্ষে সাড়ে ৪ হাজার মানুষ নিহত হন।

প্রভাতী খবর ডেস্ক

২৩ জুন, ২০২২,  12:52 AM

news image

আফগানিস্তানে পাকতিকা প্রদেশে ভূমিকম্পে কমপক্ষে সহাস্রাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন।এছাড়া আহত হয়েছেন ১ হাজার ৫০০ জন।মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে । গতকাল বুধবার ভোরে দেশটিতে এ ভূকম্পন আঘাত হানে। যার গভীরতা ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে ৫১ কিলোমিটার। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল আফগানিস্তানের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় খোস্ত শহর থেকে ৪৪ কিলোমিটার দূরে বলে জানিয়েছে মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ৬ দশমিক ১ । তবে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন দেশটির কর্মকর্তারা। বুধবার গভীর রাতে আফগানিস্তানের পাকতিকা ও খোস্ত প্রদেশে এই ভূমিকম্পে আহত হয়েছেন আরও ৬০০ জনের বেশি।কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দুর্গম পার্বত্য গ্রাম থেকে তথ্য পেতে দেরি হচ্ছে। ফলে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে।
পাকতিকা প্রদেশের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আমিন হাজিফি বিবিসিকে জানান, ভূমিকম্পের ঘটনায় এখন পর্যন্ত এক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরো ১৫০০ জন। নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধানে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে উদ্ধারকারীরা।মারাত্মকভাবে আহত স্থানীয় এক সাংবাদিক বিবিসিকে বলেন, ‘পাকতিকার যে রাস্তায় আপনি যাবেন সেখানেই প্রিয়জন হারানোদের আর্তনাদ শুনতে পাবেন।  প্রতিটি বাড়িঘর একেবারেই ধ্বংস হয়ে গেছে।’অপর এক সাংবাদিক বলেন, ‘ভূমিকম্পের কারণে মোবাইল ফোনের টাওয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। সামনে মৃত্যুর সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।’
এদিকে তালেবান কর্মকর্তারা দেশটির পূর্বাঞ্চলে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় যাওয়ার জন্য বিভিন্ন সাহায্য সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।তালেবান নেতা হিবাতুল্লা আখুন্দজাদা বলেছেন, ভূমিকম্পে শতাধিক ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে। মৃতের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে।বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, পাকতিকা প্রদেশে মাটির তৈরি বাড়িগুলি ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। আহতদের উদ্ধারে তৎপর থাকতে দেখা গেছে উদ্ধারকারীদের। প্রত্যন্ত অঞ্চলে, হেলিকপ্টার দিয়ে হতাহতদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেখা গেছে।
স্থানীয় একজন চিকিৎসক বিবিসিকে জানান, বেশিরভাগ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে প্রদেশটির গায়ান ও বারমাল জেলায়। স্থানীয় মিডিয়া সাইট ইতিলাত-ই রোজ জানিয়েছে, গায়ানের একটি গ্রাম ভূমিকম্পে পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে।
তালেবান সরকারের মুখপাত্র বিলাল করিমি এক টুইট বার্তায় লেখেন, দুর্ভাগ্যবশত, গতরাতে পাকতিকা প্রদেশের ৪টি জেলায় একটি প্রবল ভূমিকম্প হয়েছে, যার ফলে আমাদের শতাধিক দেশবাসী নিহত ও আহত হয়েছে এবং বহু ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে। আমরা আরও বিপর্যয় এড়াতে অবিলম্বে এসব এলাকায় দল পাঠানোর জন্য সব সাহায্য সংস্থাকে অনুরোধ করছি।তিনি আরো বলেন, ‘বিপর্যয় এড়াতে আমরা ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাগুলোতে প্রতিনিধি পাঠাতে প্রতিটি সাহায্যকারী সংস্থাকে অনুরোধ জানিয়েছি।’
জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয়ের কার্যালয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১০ বছরে আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে সাত হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। জাতিসংঘের মানবিক কল্যাণবিষয়ক সমন্বয় কার্যালয় (ইউএনওসিএইচএ) বলেছে, মানবিক সংস্থাগুলোকে উদ্ধার প্রচেষ্টায় সহায়তা করার অনুরোধ জানিয়েছে আফগানিস্তান। সংস্থার উদ্ধারকারী দলগুলোকে ভূমিকম্প-বিধ্বস্ত এলাকায় পাঠানো হচ্ছে।
এদিকে জিও নিউজ জানিয়েছে, ইসলামাবাদ, মুলতান, ভাক্কর, ফলিয়ে, পেশোয়ার, মালাকান্দ, সোয়াট, মিয়ানওয়ালি, পাকপত্তন, বুনেরসহ পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে কম্পন অনুভূত হয়েছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে এতে পাকিস্তানে কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা সালাউদ্দিন আইয়ুবি জানিয়েছেন, আহতদের উদ্ধারে এবং খাবার ও জরুরি চিকিৎসা পণ্য পরিবহনে হেলিকপ্টার মোতায়েন করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘কিছু গ্রাম পাহাড়ের দুর্গম অঞ্চলে থাকায় মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে এবং বিস্তারিত সংগ্রহ করতে কিছুটা সময় লাগবে’।
২০০২ সালের পর আফগানিস্তানের সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্প হয়েছে বুধবার ভোরে। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির উৎপত্তি হয়েছে পাকিস্তান সীমান্তবর্তী দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ খোস্ত থেকে প্রায় ৪৪ কিলোমিটার দূরে।সবচেয়ে বেশি নিহতের ঘটনা নিশ্চিত হওয়া গেছে পাকতিকা প্রদেশে। সেখানে ২৫৫ জন নিহত এবং আরও দুই শতাধিক মানুষ আহতের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে বলে জানান সালাউদ্দিন আইয়ুবি। এছাড়া খোস্ত প্রদেশে আরও ২৫ জন নিহত এবং ৯০ জনকে হাসপাতালে নেওয়ার তথ্য জানান তিনি।ক্ষমতাসীন তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা এক বিবৃতিতে ভূমিকম্পে হতাহতদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তারা বলেছেন, প্রত্যন্ত পার্বত্য অঞ্চলের গ্রামগুলোর ক্ষয়ক্ষতির তথ্য পেতে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। যে কারণে ভূমিকম্পে হতাহতের সংখ্যা আরও অনেক বাড়তে পারে। আফগানিস্তানের গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যাচ্ছে, ভূমিকম্পের আঘাতে অনেক ঘরবাড়ি একেবারে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং কম্বলে ঢাকা কিছু মরদেহ মাটিতে পড়ে আছে।
দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা সালাহউদ্দিন আইয়ুবী বলেছেন, উদ্ধার কাজ পরিচালনা, আহতদের কাছে চিকিৎসা সামগ্রী এবং খাদ্য পৌঁছানোর জন্য হেলিকপ্টার মোতায়েন করা হয়েছে। তিনি বলেছেন, কিছু গ্রাম পাহাড়ের প্রত্যন্ত অঞ্চলে হওয়ায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে এবং এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করতেও কিছুটা সময় লাগবে।২০০২ সালের পর বুধবারের এই ভূমিকম্পটি আফগানিস্তানে সবচেয়ে প্রাণঘাতী। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) বলছে, বুধবার ভোরের দিকে আফগানিস্তানের দক্ষিণপূর্বাঞ্চলের প্রত্যন্ত পার্বত্যাঞ্চলীয় খোস্ত প্রদেশ থেকে ৪৪ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে পাকিস্তান সীমান্তের কাছে ভূপৃষ্ঠের ৫০ দশমিক ৮ কিলোমিটার গভীরে ভূমিকম্পটির উৎপত্তি হয়েছে।
ভূমিকম্পে নিশ্চিত মৃত্যুর বেশিরভাগই পূর্বাঞ্চলীয় পাকতিকা প্রদেশের। এই প্রদেশে ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত ২৫৫ জন নিহত এবং আরও ২০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন আইয়ুবী। এছাড়া খোস্ত প্রদেশে আরও ২৫ জন নিহত এবং ৯০ জনকে আহত অবস্থায় উদ্ধারের পর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
রয়টার্স বলছে, গত আগস্টে বিদেশি সৈন্যদের বিদায়ের পর সশস্ত্র এই গোষ্ঠী ক্ষমতায় আসায় আফগানিস্তানের সঙ্গে বেশির ভাগ দাতব্য সংস্থার সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন রয়েছে। যে কারণে প্রাকৃতিক এই দুযোর্গ মোকাবিলা তালেবান সরকারের জন্য বড় ধরনের পরীক্ষা হতে পারে।
এক টুইট ইউরোপীয় ভূমধ্যসাগরীয় ভূমিকম্প কেন্দ্র (ইএমএসসি) বার্তায় বলেছে, পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং ভারতের প্রায় ১১ কোটি ৯০ লাখ মানুষ কম্পন অনুভব করেছেন। তবে পাকিস্তান এবং ভারতে তাৎক্ষণিকভাবে কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
তালেবান ক্ষমতা নেওয়ার পর আফগানিস্তান যখন তীব্র অর্থনৈতিক সংকটে ধুকছে, তখনই প্রাকৃতিক এই দুর্যোগ আঘাত হেনেছে। দুই দশকের যুদ্ধ শেষে মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা জোট সৈন্যদের প্রত্যাহার করে নেওয়ায় গত আগস্টে দেশটির ক্ষমতায় আসে এই গোষ্ঠী।তালেবানের ক্ষমতাগ্রহণের প্রতিক্রিয়ায় অনেক দেশ আফগানিস্তানের ব্যাংক খাতের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এছাড়া অনেক দেশ ও সংস্থা আফগানিস্তানে কোটি কোটি ডলারের উন্নয়ন সহায়তা স্থগিত করেছে। তবে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক কিছু সংস্থা এখনও দেশটিতে মানবিক সহায়তা অব্যাহত রেখেছে।
আফগানিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছেন, তারা আন্তর্জাতিক সহায়তায় স্বাগত জানাবে। প্রতিবেশী দেশটিতে সহায়তার জন্য কাজ চলছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তান।এর আগে, ২০১৫ সালে দেশটির উত্তরপূর্বাঞ্চলে শক্তিশালী এক ভূমিকম্পে পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানে ২০০ জনের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে। ২০০২ সালে ৬ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্পে আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলে প্রাণ যায় প্রায় ১ হাজার মানুষের। এছাড়া ১৯৯৮ সালে একই মাত্রার ভূমিকম্পে দেশটির উত্তরপূর্বাঞ্চলে কমপক্ষে সাড়ে ৪ হাজার মানুষ নিহত হন।