শিরোনামঃ
‘বাবা নেই’ ভিডিও গানের মোড়ক উন্মোচন আগামী পাঁচ বছরে শীর্ষে থাকবে ইমপিরিয়াল লক্ষ্য প্রতিষ্ঠাতার মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ দেশ জনতা পার্টির আলোচনা সভা রহিম আল-হুসাইনি আগা খান পঞ্চম-এর অভিষেক অনুষ্ঠিত আগা খান ৪র্থ আসওয়ান ,মিশরে শায়িত হলেন শিয়া ইসমাইলি মুসলিমদের ৪৯তম ইমাম আগা খানের জানাজা অনুষ্ঠিত মোহাম্মদপুর এলাকায় একটি বাজারের ক্রয়কৃত দোকান দখল, থানায় অভিযোগ আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নে এখনো সক্রিয় সড়কের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মইনুল হাসান ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ ২০২৪ এর পুনর্জন্ম : উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ নারীর অগ্রগতি ও উন্নয়নে তথ্য অধিকার আইন চর্চার মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে হবে: উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ

নৈতিকতার চরম অবক্ষয়ে সোনালী সুদিন পরাহত 

#
news image

রাষ্ট্র ভয়াবহ সংকট অতিক্রান্ত করছে। অর্থনীতির? না। নৈতিকতার চরম সংকট দৃশ্যমান। সরকারি চাকুরির ক্ষেত্রে পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি) কর্তৃক সুপারিশকৃত ২৬ টি ক্যাডার সার্ভিসে চাকুরিকে বাংলাদেশের সার্বিক প্রেক্ষাপটে সবচেয়ে প্রেস্টিজিয়াস বা লোভনীয় মনে করা হয়। এর মধ্যে অভিজাত ক্যাডার (ফরেন, এডমিন, পুলিশ, কাষ্টমস) নিরীহ ক্যাডার( আনসার, সমবায়, ডাক, রেল) এবং বিষয়ভিত্তিক ক্যাডার(ডাক্তার, শিক্ষক) চাকুরি প্রার্থীদের প্রত্যাশা ও সামাজিক দৃষ্টিকোনে এভাবে ভাগ করা হয়। তবে ক্যাডার যেটাই হোক, তারা যে রাষ্ট্র বিনির্মানে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার তাতে বিন্দু মাত্র সন্দেহ নাই। এ কথা পুরোপুরি স্বীকার্য যে, যারা দেশে সরকারি চাকুরি প্রত্যাশী তারা সকলেই তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা দিয়ে নামের পাশে ক্যাডার পদ অলংকৃত করতে চায়। এ স্বপ্ন যাত্রায় বিপিএসসির প্রিলিমিনারী, লিখিত এবং ভাইভার দীর্ঘ যাত্রাপথের প্রতিটি স্টপেজে অগ্নি পরীক্ষার সম্মূখীন হয়ে অতিক্রম করতে হয়। কেননা ৪ লাখ পরীক্ষার্থীর সাথে প্রতিযোগিতা করে মাত্র দুই হাজার সাফল্যমন্ডিতের তালিকায় নিজেকে তুলতে পারা চাট্টিখানি কথা নয়। এ বেদনা তারাই অনুধাবন করতে পারে যারা রাতের পর রাত জেগে সাফল্য পেয়েছে কিংবা যে পরিশ্রমীরা ব্যর্থ হয়েছে। 
সম্প্রতি প্রকাশিত ৪৪তম বিসিএসের প্রিলি. রেজাল্টে কয়েকটি কেন্দ্রে দৃষ্টিকটু অসংলগ্নতা প্রকাশ পেয়েছে। কিছু কেন্দ্র থেকে অনেক প্রার্থীর পাশ করা কিংবা রোলের সিরিয়ালে ধারাবাহিকভাবে অনেকের পাশ করা নিয়ে পরীক্ষার্থী ও সুধীজনের মধ্যে আলোচনা উঠেছে। পিএসসির সম্মানিত চেয়ারম্যানকে অবহিতকরণ, রাস্তায় প্রতিবাদ, পত্রিকা ও সামাজিক মাধ্যমে লেখালেখিতে পিএসসি বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে আমলে নিয়েছে। যে কারণে ২৪ জুলাই থেকে অনুষ্ঠেয় ৪৩তম বিএসএসের লিখিত পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীদের রোলসমূহ নতুনভাবে দৈবচয়নের ভিত্তিতে আসন বিন্যস্ত করার নোটিশ প্রকাশিত হয়েছে। যা পিএসসির কার্যকালে নতুন সিদ্ধান্ত। তড়িৎ সিদ্ধান্ত গ্রহনের কারনেই পিএসসির ওপর এদেশের লাখো তরুণের ভরসা আছে। বাংলাদেশের  অতীতের বিসিএসগুলোতেও যে আপত্তিকর কিছুই ঘটেনি সেটা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না কেননা ঢাকা কেন্দ্র ও ময়মনসিংহ কেন্দ্র নিয়ে পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ বেশ পুরোনো। কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক সিন্ডিকেট কিংবা একসময়ে আবেদনকারীরা পরীক্ষার হলে পাশাপাশি বসার সুযোগ পাওয়ার কারণে বিভিন্ন সময়েই নৈরাজ্য সৃষ্টি করে যা নিরীহ পরীক্ষার্থীদের বিরক্তির কারণ হয় এবং তাঁদের পরীক্ষা সন্তোষজনক হয় না। 
পিএসসি তার দায়িত্ব নির্ধারিতভাবে পালন করবেই। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, যে পরীক্ষার্থীরা বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে উত্তীর্ণ হয়ে রাষ্ট্রের সর্বগুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বসমূহ পালন করবে সেই তাদের যদি এত পাহারা দিয়ে অন্যায়-অপরাধ থেকে বিরত রাখতে হয়, তবে রাষ্ট্রের ভবিষ্যত কী? রাষ্ট্রের যারা পাহারাদার হবে সেই তাদের পাহারা দিতে গিয়ে যদি ঘাম ছুঁটে যায় তবে রাষ্ট্রের প্রাপ্তির খাতায় অনেক কিছু যোগ হওয়ার পর্যাপ্ত সম্ভাবনা আদৌ দশ্যমান কী? যে শিক্ষার্থীকে সমগ্র ছাত্রজীবনে নৈতিকতার চর্চায় সিদ্ধ করা গেলো না তার থেকে রাষ্ট্রের ভাগ্যে তেমন শুভ কিছু যোগ হবে বলে মনে হচ্ছে না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যতই  দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের ঘোষণা দেন না কেন, তাঁর বাস্তবায়নকারী প্রতিনিধিদের ওপর নজরদারি করতে যদি এজেন্সি নিয়োগ করা লাগে তবে প্রাপ্তির খাতায় শুণ্যই রইবে।  প্রশ্ন হচ্ছে, সবাই কী দুর্নীতিপরায়ণ বা দুর্নীতি করার মনোভাব দেখান? এদের সংখ্যা খুবই নগন্য কিন্তু এদের বিচরণ বিস্তৃত। বলা চলে, এদের কার্যকলাপে ভালোরা সব জিম্মি হয়ে পড়েন। 
যারা দুর্নীতির মাধ্যমে রাষ্ট্রের সেবা দেয়ার জন্য প্রবেশ করবে তারা আদৌ রাষ্ট্রের সেবা করবে নাকি সর্বনাশ করবে তা বিশ্লেষণ করে নির্ধারণ করার দরকার হয় না। কাজেই রাষ্ট্রযন্ত্রকে নতুন করে শিক্ষানীতির ত্রুটি কিংবা দুর্বলতা নিয়ে ভাবতে হবে। কেন একজন শিক্ষার্থী ২২/২৩ বছর ব্যাপী প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহনের পরেও নিজের মধ্যে নৈতিকতার চর্চা করতে পারে না। অপরাধীর জন্য আইনকে আরো শানিত করতে হবে যাতে অপরাধ করে কেউ মুক্ত স্থানে ঘোরাঘুরির সুযোগ না পায়। কিন্তু সেই নৈতিকতা চর্চা করানোর জন্য রাষ্ট্র যে মানুষগুলোকে নিয়োগ দিতে চায় তাদের মধ্যে যে নৈতিকতার চরম অবক্ষয় থাকে তবে সোনালী সুদিন পরাহত। একজন ফরেন সার্ভিসের তরুন অফিসার যদি দুর্নীতগ্রস্থ হন তবে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে রাষ্ট্রের সীমাহীন দুর্নাম হবে। একজন প্রশাসক কিংবা পুলিশ কর্মকর্তা যদি নিজে সৎ না হন তবে আপরাধের  লাঘাম টাানার সাধ্য কার? একজন চিকিৎস যদি নৈতিকভাবে রোগীর চিকিৎসা না দেন তবে রাষ্ট্র সুস্থ থাকবে বলে মনে হয় না। একজন শিক্ষক জাতি গড়ার কারিগর। তিনি নিজে সৎ না হলে ক্লাসরুমে কিংবা ব্যক্তিজীবনে তার সংস্পর্শে  আসা মানুষগুলোকে কীভাবে সততা, নৈতিকতার কথা বলবেন? একজন অসৎ মানুষ সততার বুলি আওড়ালে মানুষ হাসে, পাছে গালি দেয়। 
আমি মহান গ্রীক দার্শনিক মহামতি প্লেটোর, ‘দ্য রিপাবলিক’ থেকে উদ্ধৃতি দিতে ভালোবাসি। তিনি ন্যায় সম্পর্কে বলেছেন, ‘প্রত্যেটি ব্যক্তি যদি নিজ নিজ কাজ সঠিকভাবে পালন করে তবে সেটাই হচ্ছে ন্যায়।’ কাজেই পরিক্ষার্থীর দায়িত্ব সঠিকভাবে পড়াশুনা করে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করে সফল হওয়া। কোন অন্যায় রাস্তা ধরে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা কোন ভাবেই জাতির বিবেকদের থেকে কাম্য নয়। হয়তো কখনো কখনো দুর্নীতিপরায়নরাও সফল হয়। তবে যখন পতন অবশ্যম্ভাবী হয় তখন তা রোধ করার সাধ্য কারোই থাকে না। যে শুণ্য দিয়ে শুরু হয়েছিল তার থেকেও আরও ভয়ানক গভীরে তলিয়ে যেতে হয়। বৃটিশ দার্শনিক জর্জ এডওয়ার্ড ম্যূর তাঁর আদর্শনিষ্ঠ নীতিবিদ্যা, ব্যবহারিক নীতিবিদ্যা ও পরানীতিবিদ্যায় কেবল ‘ভালো’র কথাই বলেছেন। যা কিছু শুভ তা অল্প হলেও তৃপ্তির কিন্তু অশুভ কোনদিন অকল্যান বহি কিছুই বহন করেনি।     

 লেখক: কলামিষ্ট

রাজু আহমেদ

২১ জুলাই, ২০২২,  11:49 PM

news image

রাষ্ট্র ভয়াবহ সংকট অতিক্রান্ত করছে। অর্থনীতির? না। নৈতিকতার চরম সংকট দৃশ্যমান। সরকারি চাকুরির ক্ষেত্রে পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি) কর্তৃক সুপারিশকৃত ২৬ টি ক্যাডার সার্ভিসে চাকুরিকে বাংলাদেশের সার্বিক প্রেক্ষাপটে সবচেয়ে প্রেস্টিজিয়াস বা লোভনীয় মনে করা হয়। এর মধ্যে অভিজাত ক্যাডার (ফরেন, এডমিন, পুলিশ, কাষ্টমস) নিরীহ ক্যাডার( আনসার, সমবায়, ডাক, রেল) এবং বিষয়ভিত্তিক ক্যাডার(ডাক্তার, শিক্ষক) চাকুরি প্রার্থীদের প্রত্যাশা ও সামাজিক দৃষ্টিকোনে এভাবে ভাগ করা হয়। তবে ক্যাডার যেটাই হোক, তারা যে রাষ্ট্র বিনির্মানে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার তাতে বিন্দু মাত্র সন্দেহ নাই। এ কথা পুরোপুরি স্বীকার্য যে, যারা দেশে সরকারি চাকুরি প্রত্যাশী তারা সকলেই তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা দিয়ে নামের পাশে ক্যাডার পদ অলংকৃত করতে চায়। এ স্বপ্ন যাত্রায় বিপিএসসির প্রিলিমিনারী, লিখিত এবং ভাইভার দীর্ঘ যাত্রাপথের প্রতিটি স্টপেজে অগ্নি পরীক্ষার সম্মূখীন হয়ে অতিক্রম করতে হয়। কেননা ৪ লাখ পরীক্ষার্থীর সাথে প্রতিযোগিতা করে মাত্র দুই হাজার সাফল্যমন্ডিতের তালিকায় নিজেকে তুলতে পারা চাট্টিখানি কথা নয়। এ বেদনা তারাই অনুধাবন করতে পারে যারা রাতের পর রাত জেগে সাফল্য পেয়েছে কিংবা যে পরিশ্রমীরা ব্যর্থ হয়েছে। 
সম্প্রতি প্রকাশিত ৪৪তম বিসিএসের প্রিলি. রেজাল্টে কয়েকটি কেন্দ্রে দৃষ্টিকটু অসংলগ্নতা প্রকাশ পেয়েছে। কিছু কেন্দ্র থেকে অনেক প্রার্থীর পাশ করা কিংবা রোলের সিরিয়ালে ধারাবাহিকভাবে অনেকের পাশ করা নিয়ে পরীক্ষার্থী ও সুধীজনের মধ্যে আলোচনা উঠেছে। পিএসসির সম্মানিত চেয়ারম্যানকে অবহিতকরণ, রাস্তায় প্রতিবাদ, পত্রিকা ও সামাজিক মাধ্যমে লেখালেখিতে পিএসসি বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে আমলে নিয়েছে। যে কারণে ২৪ জুলাই থেকে অনুষ্ঠেয় ৪৩তম বিএসএসের লিখিত পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীদের রোলসমূহ নতুনভাবে দৈবচয়নের ভিত্তিতে আসন বিন্যস্ত করার নোটিশ প্রকাশিত হয়েছে। যা পিএসসির কার্যকালে নতুন সিদ্ধান্ত। তড়িৎ সিদ্ধান্ত গ্রহনের কারনেই পিএসসির ওপর এদেশের লাখো তরুণের ভরসা আছে। বাংলাদেশের  অতীতের বিসিএসগুলোতেও যে আপত্তিকর কিছুই ঘটেনি সেটা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না কেননা ঢাকা কেন্দ্র ও ময়মনসিংহ কেন্দ্র নিয়ে পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ বেশ পুরোনো। কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক সিন্ডিকেট কিংবা একসময়ে আবেদনকারীরা পরীক্ষার হলে পাশাপাশি বসার সুযোগ পাওয়ার কারণে বিভিন্ন সময়েই নৈরাজ্য সৃষ্টি করে যা নিরীহ পরীক্ষার্থীদের বিরক্তির কারণ হয় এবং তাঁদের পরীক্ষা সন্তোষজনক হয় না। 
পিএসসি তার দায়িত্ব নির্ধারিতভাবে পালন করবেই। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, যে পরীক্ষার্থীরা বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে উত্তীর্ণ হয়ে রাষ্ট্রের সর্বগুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বসমূহ পালন করবে সেই তাদের যদি এত পাহারা দিয়ে অন্যায়-অপরাধ থেকে বিরত রাখতে হয়, তবে রাষ্ট্রের ভবিষ্যত কী? রাষ্ট্রের যারা পাহারাদার হবে সেই তাদের পাহারা দিতে গিয়ে যদি ঘাম ছুঁটে যায় তবে রাষ্ট্রের প্রাপ্তির খাতায় অনেক কিছু যোগ হওয়ার পর্যাপ্ত সম্ভাবনা আদৌ দশ্যমান কী? যে শিক্ষার্থীকে সমগ্র ছাত্রজীবনে নৈতিকতার চর্চায় সিদ্ধ করা গেলো না তার থেকে রাষ্ট্রের ভাগ্যে তেমন শুভ কিছু যোগ হবে বলে মনে হচ্ছে না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যতই  দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের ঘোষণা দেন না কেন, তাঁর বাস্তবায়নকারী প্রতিনিধিদের ওপর নজরদারি করতে যদি এজেন্সি নিয়োগ করা লাগে তবে প্রাপ্তির খাতায় শুণ্যই রইবে।  প্রশ্ন হচ্ছে, সবাই কী দুর্নীতিপরায়ণ বা দুর্নীতি করার মনোভাব দেখান? এদের সংখ্যা খুবই নগন্য কিন্তু এদের বিচরণ বিস্তৃত। বলা চলে, এদের কার্যকলাপে ভালোরা সব জিম্মি হয়ে পড়েন। 
যারা দুর্নীতির মাধ্যমে রাষ্ট্রের সেবা দেয়ার জন্য প্রবেশ করবে তারা আদৌ রাষ্ট্রের সেবা করবে নাকি সর্বনাশ করবে তা বিশ্লেষণ করে নির্ধারণ করার দরকার হয় না। কাজেই রাষ্ট্রযন্ত্রকে নতুন করে শিক্ষানীতির ত্রুটি কিংবা দুর্বলতা নিয়ে ভাবতে হবে। কেন একজন শিক্ষার্থী ২২/২৩ বছর ব্যাপী প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহনের পরেও নিজের মধ্যে নৈতিকতার চর্চা করতে পারে না। অপরাধীর জন্য আইনকে আরো শানিত করতে হবে যাতে অপরাধ করে কেউ মুক্ত স্থানে ঘোরাঘুরির সুযোগ না পায়। কিন্তু সেই নৈতিকতা চর্চা করানোর জন্য রাষ্ট্র যে মানুষগুলোকে নিয়োগ দিতে চায় তাদের মধ্যে যে নৈতিকতার চরম অবক্ষয় থাকে তবে সোনালী সুদিন পরাহত। একজন ফরেন সার্ভিসের তরুন অফিসার যদি দুর্নীতগ্রস্থ হন তবে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে রাষ্ট্রের সীমাহীন দুর্নাম হবে। একজন প্রশাসক কিংবা পুলিশ কর্মকর্তা যদি নিজে সৎ না হন তবে আপরাধের  লাঘাম টাানার সাধ্য কার? একজন চিকিৎস যদি নৈতিকভাবে রোগীর চিকিৎসা না দেন তবে রাষ্ট্র সুস্থ থাকবে বলে মনে হয় না। একজন শিক্ষক জাতি গড়ার কারিগর। তিনি নিজে সৎ না হলে ক্লাসরুমে কিংবা ব্যক্তিজীবনে তার সংস্পর্শে  আসা মানুষগুলোকে কীভাবে সততা, নৈতিকতার কথা বলবেন? একজন অসৎ মানুষ সততার বুলি আওড়ালে মানুষ হাসে, পাছে গালি দেয়। 
আমি মহান গ্রীক দার্শনিক মহামতি প্লেটোর, ‘দ্য রিপাবলিক’ থেকে উদ্ধৃতি দিতে ভালোবাসি। তিনি ন্যায় সম্পর্কে বলেছেন, ‘প্রত্যেটি ব্যক্তি যদি নিজ নিজ কাজ সঠিকভাবে পালন করে তবে সেটাই হচ্ছে ন্যায়।’ কাজেই পরিক্ষার্থীর দায়িত্ব সঠিকভাবে পড়াশুনা করে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করে সফল হওয়া। কোন অন্যায় রাস্তা ধরে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা কোন ভাবেই জাতির বিবেকদের থেকে কাম্য নয়। হয়তো কখনো কখনো দুর্নীতিপরায়নরাও সফল হয়। তবে যখন পতন অবশ্যম্ভাবী হয় তখন তা রোধ করার সাধ্য কারোই থাকে না। যে শুণ্য দিয়ে শুরু হয়েছিল তার থেকেও আরও ভয়ানক গভীরে তলিয়ে যেতে হয়। বৃটিশ দার্শনিক জর্জ এডওয়ার্ড ম্যূর তাঁর আদর্শনিষ্ঠ নীতিবিদ্যা, ব্যবহারিক নীতিবিদ্যা ও পরানীতিবিদ্যায় কেবল ‘ভালো’র কথাই বলেছেন। যা কিছু শুভ তা অল্প হলেও তৃপ্তির কিন্তু অশুভ কোনদিন অকল্যান বহি কিছুই বহন করেনি।     

 লেখক: কলামিষ্ট