বিদ্যুতের দাম বাড়ানো এখন ঠিক নয়

নিজস্ব প্রতিবেদক
২৩ মে, ২০২২, 9:29 PM

বিদ্যুতের দাম বাড়ানো এখন ঠিক নয়
বিশ^ব্যাপী করোনার ধকল কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই রাসিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের দামামায় দেশে দেশে দেখা দিয়েছে মুদ্রাস্ফীতি। ফলে নিত্য পন্যের দাম বেড়ে জনজীবনে অস্থির করে তুলেছে। এর মধ্যে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়াবার প্রস্তাব মড়ার ওপর খাড়ার ঘা হিসেবে দেখা দিয়েছে। দেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায় এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধাচার করছে এবং বলছে, বিদ্যুৎ খাতের সর্বত্র অদক্ষতা, যথেষ্ট অনিয়ম ও অস্বচ্ছতা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। জ¦ালানী ও বিদ্যুৎ খাতের আমূল সংস্কার দরকার।
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে (বিইআরসি) বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব নিয়ে পর্যালোচনা চলছে। কমিশন গঠিত কারিগরি কমিটি বিদ্যুৎ এর দাম পাইকারি পর্যায়ে গড়ে ৫৮ শতাংশ বাড়ানের সুপাসিশ করেছ। এর আগে গত মার্চে গ্যাসের দাম ভোক্তা পর্যয়ে গড়ে ২০ শতাংশ বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়। গণ শুনানিতে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানোর তীব্র বিরোধীতা করে ব্যবসায়ী ও ভোক্তা আধিকার সংগঠনগুলো। এবার গত ২১ মে বাংলাদেশ শিষ্প ও বনিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই) সংবাদ সম্মেলন করে এ প্রস্থাবের বিপক্ষে তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করে। সংগঠনের সভাপতি মো: জসিম উদ্দিন বলেন, অলস বিদ্যুৎ কেন্দ্র জাতীয় স্বার্থ ক্ষুন্ন করে অব্যাহত রাখা হয়েছে। প্রায় হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার গ্যাস ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র অকার্যকর অবস্থায় পড়ে থাকার পরও জ¦লানি তেল ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বেশি চালানো হচ্ছে। একে ভূল পরিকল্পনা বলে অভিহিত করে বলা হয়, ভূল পরিকল্পনার জন্য ক্ষতি শিল্পখাত বহন করতে পারে না। জ¦লানি তেল ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের কারণে দাম বেড়েছে, যা মোটেই কাম্য নয়। শুধু মাত্র পিক আওয়ারে ডিজেল ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালানো যেতে পারে।
পাওয়ার সেল বলছে, দেশে এখন বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২৫ হাজার ৫৬৬ মেগাওয়াট। বিপরীতে সর্বোচ্চ উৎপাদন ১৪ হাজার ৭৮২ মেগাওয়াট (গত ১৬ এপ্রিল)। চুক্তি অনুসারে বেসরকারি খাতের বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলো উৎপাদন না করলেও ভাড়া দিতে হবে। গত এক দশক ৭০ হাজার কোটি টাকার বেশি দিতে হয়েছে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ভাড়া বাবদ। বেসরকারি গবেষনা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) গত মার্চে এক পর্যলোচনা প্রতিবেদনে বলেছে, সরকারি বড় বিদ্যুৎ কেন্দ্র আনতে না পারায় বেসকারি খাতে স্বল্প মেয়াদের ভাড়া ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র মেয়াদ শেষেও চালু রাখতে হয়েছে। ৯২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার এমন ১২ টি স্বল্প মেয়াদের বিদ্যুৎ কেন্দ্র এখনো চালু অছে।
বিদ্যুৎ বিভাগের তথ্য বলছে, ২০০৯ সালে বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর গত সাড়ে ১৩ বছর বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ১০ বার। আর গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে ৭ বার। ২০০৯ সালে দুই চুলার গ্যাসের বিল ছিল ৪০০ টাকা, যা এখন ৯৭৫ টাকা। এ দর বাড়াবারও প্রক্রিয়া চলছে।
এদিকে হু হু করে নিত্য পন্যের দাম বাড়ছে। জনমনে অসন্তোস বাড়ছে। তাই সরকার যাতে প্রস্তাবিত বিদ্যুতের দাম বাড়াবার প্রস্তাবে বেকায়দায় না পড়ে সেদিকে নজর দিতে হবে। ভর্তুকি দিয়ে হলেও জনগনের জীবন যাত্রায় শান্তির সুবাতাস বহাতে হবে।
নিজস্ব প্রতিবেদক
২৩ মে, ২০২২, 9:29 PM

বিশ^ব্যাপী করোনার ধকল কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই রাসিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের দামামায় দেশে দেশে দেখা দিয়েছে মুদ্রাস্ফীতি। ফলে নিত্য পন্যের দাম বেড়ে জনজীবনে অস্থির করে তুলেছে। এর মধ্যে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়াবার প্রস্তাব মড়ার ওপর খাড়ার ঘা হিসেবে দেখা দিয়েছে। দেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায় এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধাচার করছে এবং বলছে, বিদ্যুৎ খাতের সর্বত্র অদক্ষতা, যথেষ্ট অনিয়ম ও অস্বচ্ছতা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। জ¦ালানী ও বিদ্যুৎ খাতের আমূল সংস্কার দরকার।
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে (বিইআরসি) বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব নিয়ে পর্যালোচনা চলছে। কমিশন গঠিত কারিগরি কমিটি বিদ্যুৎ এর দাম পাইকারি পর্যায়ে গড়ে ৫৮ শতাংশ বাড়ানের সুপাসিশ করেছ। এর আগে গত মার্চে গ্যাসের দাম ভোক্তা পর্যয়ে গড়ে ২০ শতাংশ বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়। গণ শুনানিতে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানোর তীব্র বিরোধীতা করে ব্যবসায়ী ও ভোক্তা আধিকার সংগঠনগুলো। এবার গত ২১ মে বাংলাদেশ শিষ্প ও বনিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই) সংবাদ সম্মেলন করে এ প্রস্থাবের বিপক্ষে তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করে। সংগঠনের সভাপতি মো: জসিম উদ্দিন বলেন, অলস বিদ্যুৎ কেন্দ্র জাতীয় স্বার্থ ক্ষুন্ন করে অব্যাহত রাখা হয়েছে। প্রায় হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার গ্যাস ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র অকার্যকর অবস্থায় পড়ে থাকার পরও জ¦লানি তেল ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বেশি চালানো হচ্ছে। একে ভূল পরিকল্পনা বলে অভিহিত করে বলা হয়, ভূল পরিকল্পনার জন্য ক্ষতি শিল্পখাত বহন করতে পারে না। জ¦লানি তেল ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের কারণে দাম বেড়েছে, যা মোটেই কাম্য নয়। শুধু মাত্র পিক আওয়ারে ডিজেল ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালানো যেতে পারে।
পাওয়ার সেল বলছে, দেশে এখন বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২৫ হাজার ৫৬৬ মেগাওয়াট। বিপরীতে সর্বোচ্চ উৎপাদন ১৪ হাজার ৭৮২ মেগাওয়াট (গত ১৬ এপ্রিল)। চুক্তি অনুসারে বেসরকারি খাতের বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলো উৎপাদন না করলেও ভাড়া দিতে হবে। গত এক দশক ৭০ হাজার কোটি টাকার বেশি দিতে হয়েছে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ভাড়া বাবদ। বেসরকারি গবেষনা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) গত মার্চে এক পর্যলোচনা প্রতিবেদনে বলেছে, সরকারি বড় বিদ্যুৎ কেন্দ্র আনতে না পারায় বেসকারি খাতে স্বল্প মেয়াদের ভাড়া ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র মেয়াদ শেষেও চালু রাখতে হয়েছে। ৯২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার এমন ১২ টি স্বল্প মেয়াদের বিদ্যুৎ কেন্দ্র এখনো চালু অছে।
বিদ্যুৎ বিভাগের তথ্য বলছে, ২০০৯ সালে বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর গত সাড়ে ১৩ বছর বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ১০ বার। আর গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে ৭ বার। ২০০৯ সালে দুই চুলার গ্যাসের বিল ছিল ৪০০ টাকা, যা এখন ৯৭৫ টাকা। এ দর বাড়াবারও প্রক্রিয়া চলছে।
এদিকে হু হু করে নিত্য পন্যের দাম বাড়ছে। জনমনে অসন্তোস বাড়ছে। তাই সরকার যাতে প্রস্তাবিত বিদ্যুতের দাম বাড়াবার প্রস্তাবে বেকায়দায় না পড়ে সেদিকে নজর দিতে হবে। ভর্তুকি দিয়ে হলেও জনগনের জীবন যাত্রায় শান্তির সুবাতাস বহাতে হবে।