পরিকল্পিত উদ্যোগের সঙ্গে দরকার সচেতনতা

নিজস্ব প্রতিবেদক
২৩ জুলাই, ২০২২, 9:17 PM

পরিকল্পিত উদ্যোগের সঙ্গে দরকার সচেতনতা
দুর্ঘটনা যেন কোনোভাবেই এ দেশের মানুষের পিছু ছাড়ছে না। নানাভাবে মানুষের অকাল মৃত্যু হচ্ছে। এই অকাল মৃত্যু রোধ করা যাচ্ছে না। মানুষ পানিতে, রাজপথে, বন্যায়, ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে, ঘূর্ণিঝড়ে, নৌ-রেলপথে, সড়ক দুর্ঘটনায়, গ্যাস বিস্ফোরণে মারা যাচ্ছে। আর করোনায় মৃত্যুর কথা তো বলাই বাহুল্য। বাংলাদেশে এখন আর স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা নেই। যাদের এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার কথা তারা রয়েছে চরম উদাসীন। এক মৃত্যুর রেশ না কাটতেই আরেক মৃত্যু এসে হাজির হয়। আমরা শোকগ্রস্ত ও হতাশ হই। এটাই বাংলাদেশের সমাজ বাস্তবতা। বাংলাদেশের মানুষের নিয়তি। অন্যান্য দুর্ঘটনার পাশাপাশি ইদানীং এসি ও গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। বিস্ফোরণ অধিদফতরের সূত্রমতে বাংলাদেশে বর্তমানে ৬০ লাখের বেশি গ্রাহক এলপিজি সিলিন্ডার ব্যবহার করছেন। গ্রামাঞ্চলে এই গ্রাহকের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। বাজারে সরকারি বেসরকারি মিলিয়ে মোট ৩০টি কোম্পানির অন্তত দুই কোটি সিলিন্ডার রয়েছে বলে জানিয়েছেন অধিদফতরের কর্মকর্তারা। তাদের মতে, বাজারে রান্নার জন্য যেসব গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি হয়, সেগুলো যথেষ্ট নিরাপদ। কারণ এলপিজি গ্যাস যে চাপ তৈরি করে, তার চেয়ে অন্তত চার গুণ বেশি চাপ ধারণ করার ক্ষমতা এসব সিলিন্ডারের থাকে। তাই সিলিন্ডার বিস্ফোরণের কোন ঝুঁকিই নেই বলে বলছে বিস্ফোরণ অধিদফতর। তারপরও যেসব বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে, তার মূলে রয়েছে এই সিলিন্ডারগুলো যথাযথভাবে পরিবহন, মজুদ ও ব্যবহার না করা। সিলিন্ডারে দুর্ঘটনাগুলো মূলত গ্যাসের লিকেজ থেকে ঘটে। হোস পাইপ, রেগুলেটর, গ্যাস ভালভ ইত্যাদিতে দুর্বলতার কারণে যে কোন সময় গ্যাস লিক হতে পারে। সেই লিকেজ থেকে গ্যাস বেরিয়ে জমতে থাকে। সামান্য আগুন এমনকি স্ফুলিঙ্গের সংস্পর্শে আসার সাথে সাথে এই জমে থাকা গ্যাসে ঘটতে পারে ভয়াবহ বিস্ফোরণ। পাঁচ থেকে সাত বছর আগেও এসি বা গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে এত আহত হওয়া এবং মৃত্যুর ঘটনা ঘটত না। কিছুদিন আগে, চট্টগ্রামের পাথরঘাটা এলাকায় গ্যাসের পাইপলাইন বিস্ফোরণে দেয়াল ধসে ৭ জন নিহত এবং ১০ জন দগ্ধ হয়েছিল। এখানেই শেষ নয়, রাজধানীর রূপনগরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ৭ শিশুর মৃত্যু আমাদের হৃদয়ে দাগ কেটে আছে। বাসাবাড়িতে গ্যাস সংযোগে বা গ্যাসের চুলার ব্যবহারে অসাবধানতা ও অসচেতনতা, গ্যাসের সিলিন্ডার পরীক্ষা না করা এবং সরবরাহকৃত গ্যাসলাইনের ত্রম্নটির কারণে বিপদ এবং মর্মান্তিক পরিণতি ডেকে আনতে পারে তার দৃষ্টান্ত এসব দুর্ঘটনা। এ ক্ষেত্রে সরকারকে হাত গুটিয়ে বসে থাকলে চলবে না। মেয়াদোত্তীর্ণ এসি, গ্যাস সিলিন্ডারসহ দুর্ঘটনাপ্রবল সব বিষয়ে মনোযোগ বাড়াতে হবে। মনে রাখতে হবে, এসব দুর্ঘটনা রোধে ব্যক্তি সচেতনতা বাড়ানোসহ এ ব্যাপারে রাষ্ট্রেরও গভীরভাবে মনোযোগ দিতে হবে। সরকারের পরিকল্পিত উদ্যোগই কেবল পারে মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। এছাড়া সচেতনতাও বাঁচাতে পারে মূল্যবান জীবন।
নিজস্ব প্রতিবেদক
২৩ জুলাই, ২০২২, 9:17 PM

দুর্ঘটনা যেন কোনোভাবেই এ দেশের মানুষের পিছু ছাড়ছে না। নানাভাবে মানুষের অকাল মৃত্যু হচ্ছে। এই অকাল মৃত্যু রোধ করা যাচ্ছে না। মানুষ পানিতে, রাজপথে, বন্যায়, ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে, ঘূর্ণিঝড়ে, নৌ-রেলপথে, সড়ক দুর্ঘটনায়, গ্যাস বিস্ফোরণে মারা যাচ্ছে। আর করোনায় মৃত্যুর কথা তো বলাই বাহুল্য। বাংলাদেশে এখন আর স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা নেই। যাদের এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার কথা তারা রয়েছে চরম উদাসীন। এক মৃত্যুর রেশ না কাটতেই আরেক মৃত্যু এসে হাজির হয়। আমরা শোকগ্রস্ত ও হতাশ হই। এটাই বাংলাদেশের সমাজ বাস্তবতা। বাংলাদেশের মানুষের নিয়তি। অন্যান্য দুর্ঘটনার পাশাপাশি ইদানীং এসি ও গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। বিস্ফোরণ অধিদফতরের সূত্রমতে বাংলাদেশে বর্তমানে ৬০ লাখের বেশি গ্রাহক এলপিজি সিলিন্ডার ব্যবহার করছেন। গ্রামাঞ্চলে এই গ্রাহকের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। বাজারে সরকারি বেসরকারি মিলিয়ে মোট ৩০টি কোম্পানির অন্তত দুই কোটি সিলিন্ডার রয়েছে বলে জানিয়েছেন অধিদফতরের কর্মকর্তারা। তাদের মতে, বাজারে রান্নার জন্য যেসব গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি হয়, সেগুলো যথেষ্ট নিরাপদ। কারণ এলপিজি গ্যাস যে চাপ তৈরি করে, তার চেয়ে অন্তত চার গুণ বেশি চাপ ধারণ করার ক্ষমতা এসব সিলিন্ডারের থাকে। তাই সিলিন্ডার বিস্ফোরণের কোন ঝুঁকিই নেই বলে বলছে বিস্ফোরণ অধিদফতর। তারপরও যেসব বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে, তার মূলে রয়েছে এই সিলিন্ডারগুলো যথাযথভাবে পরিবহন, মজুদ ও ব্যবহার না করা। সিলিন্ডারে দুর্ঘটনাগুলো মূলত গ্যাসের লিকেজ থেকে ঘটে। হোস পাইপ, রেগুলেটর, গ্যাস ভালভ ইত্যাদিতে দুর্বলতার কারণে যে কোন সময় গ্যাস লিক হতে পারে। সেই লিকেজ থেকে গ্যাস বেরিয়ে জমতে থাকে। সামান্য আগুন এমনকি স্ফুলিঙ্গের সংস্পর্শে আসার সাথে সাথে এই জমে থাকা গ্যাসে ঘটতে পারে ভয়াবহ বিস্ফোরণ। পাঁচ থেকে সাত বছর আগেও এসি বা গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে এত আহত হওয়া এবং মৃত্যুর ঘটনা ঘটত না। কিছুদিন আগে, চট্টগ্রামের পাথরঘাটা এলাকায় গ্যাসের পাইপলাইন বিস্ফোরণে দেয়াল ধসে ৭ জন নিহত এবং ১০ জন দগ্ধ হয়েছিল। এখানেই শেষ নয়, রাজধানীর রূপনগরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ৭ শিশুর মৃত্যু আমাদের হৃদয়ে দাগ কেটে আছে। বাসাবাড়িতে গ্যাস সংযোগে বা গ্যাসের চুলার ব্যবহারে অসাবধানতা ও অসচেতনতা, গ্যাসের সিলিন্ডার পরীক্ষা না করা এবং সরবরাহকৃত গ্যাসলাইনের ত্রম্নটির কারণে বিপদ এবং মর্মান্তিক পরিণতি ডেকে আনতে পারে তার দৃষ্টান্ত এসব দুর্ঘটনা। এ ক্ষেত্রে সরকারকে হাত গুটিয়ে বসে থাকলে চলবে না। মেয়াদোত্তীর্ণ এসি, গ্যাস সিলিন্ডারসহ দুর্ঘটনাপ্রবল সব বিষয়ে মনোযোগ বাড়াতে হবে। মনে রাখতে হবে, এসব দুর্ঘটনা রোধে ব্যক্তি সচেতনতা বাড়ানোসহ এ ব্যাপারে রাষ্ট্রেরও গভীরভাবে মনোযোগ দিতে হবে। সরকারের পরিকল্পিত উদ্যোগই কেবল পারে মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। এছাড়া সচেতনতাও বাঁচাতে পারে মূল্যবান জীবন।