ইডেনে মধ্যরাতের উত্তাপ: ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১০

নিজস্ব প্রতিবেদক
২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২, 12:27 AM

ইডেনে মধ্যরাতের উত্তাপ: ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১০
ছাত্রলীগের কোন্দলে আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ইডেন মহিলা কলেজ। হলের সিট বাণিজ্য নিয়ে গণমাধ্যমে কথা বলায় ইডেন কলেজ ছাত্রলীগ সহসভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌসকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও অপর অংশের অনুসারীদের বিরুদ্ধে। চলমান উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গতকাল ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে এতে প্রায় ১০ নেতাকর্মী আহত হয়েছে। রোববার বিকেলে ইডেন কলেজের অডিটোরিয়ামের সামনে এ ঘটনা ঘটে। প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েন করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
পুলিশ জানিয়েছেন, ইডেন মহিলা কলেজে চলমান উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রিভা ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানা। পরে বিকেল সাড়ে পাঁটার দিকে সংবাদ সম্মেলন চলাকালে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। এতে আহত হয়েছে অন্তত ১০ জন। পরে ইডেন ছাত্রলীগের সংঘর্ষ সামাল দিতে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ। চলমান উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
এ নিয়ে ইডেন কলেজ ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীরা দিনভর বিক্ষোভ করেছেন। এ ঘটনার জন্য শিক্ষার্থীরা ‘ব্যর্থ’ কলেজ প্রশাসনের পদত্যাগ ও ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে বহিষ্কার করার দাবি জানান। তবে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলছেন, কলেজ প্রশাসন দুই পক্ষকে ঠেকাতে কোনো উদ্যোগ নেয়নি। গত শনিবার রাত ১১টার পর থেকে এসব ঘটনার সূত্রপাত হয়। এখনও উত্তপ্ত অবস্থায় রয়েছে কলেজ ক্যাম্পাস।
ইডেন কলেজের সহ-সভাপতি সানজিদা পারভীন চৌধুরী বলেন, আমরা রিভা-রাজিয়াকে চাই না। তারা অত্যাচারী, তারা ছাত্রলীগের কলঙ্ক। তারা আমাদের ওপর আগে হামলা চালিয়েছে। আমাদের চারজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এছাড়া আরও ৫-৬ জন আহত হয়েছেন। রিভা ক্যাম্পাস ছেড়েছে, আমরা চাই রাজিয়াও ক্যাম্পাসে ছেড়ে যাক। তাদের আমরা এই ক্যাম্পাসে দেখতে চাই না।
ক্যাম্পাস ছাড়ার আগে কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি রিভা সাংবাদিকদের বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সাংবাদিক সম্মেলন করতে এলে তারা পরিকল্পিতভাবে আমাদের ওপর হামলা চালায়। আমিসহ আমাদের বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার ভোরে ইডেন মহিলা কলেজে ছাত্রলীগের একাংশের নেতাকর্মীরা দলের সভাপতি তামান্না জেসমিন ওরফে রিভা ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানাকে দল থেকে বহিষ্কারের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। আরেক নেত্রী জান্নাতুল ফেরদৌসকে হয়রানি ও মারধরের অভিযোগে (অপর অংশ) তাদের বিরুদ্ধে এ বিক্ষোভ হয়। গত ২২ সেপ্টেম্বর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌস ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের আসন বাণিজ্য, চাঁদাবাজিসহ নানান অপকর্মের কথা তুলে ধরে গণমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দেন। সেই সাক্ষাৎকার দেখে ক্ষুব্ধ হন তামান্না ও রাজিয়াা। এরআগে গত শনিবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাতে কলেজ শাখার নেত্রী নুজহাত ফারিয়া ওরফে রোকসানা, আয়েশা ইসলাম ওরফে মীম ও কামরুন নাহার ওরফে জ্যোতিসহ তামান্না ও রাজিয়ার কয়েকজন সমর্থক জান্নাতুল ফেরদৌসকে কলেজের ছাত্রী নিবাস থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেয়। এ সময় তারা জান্নাতুলকে উত্ত্যক্ত ও মারধর করে। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হামলার ঘটনায় ওই রাতেই তামান্না ও রাজিয়াকে বহিষ্কারের দাবিতে মিছিল বের করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। একপর্যায়ে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীরা তাদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে কলেজ ক্যাম্পাসে পাল্টা মিছিল করে।
এদিকে ভুক্তভোগী ছাত্রলীগ নেত্রী জান্নাতুল সাংবাদিকদের জানান, তামান্না ও রাজিয়ার অনুসারীরা তাকে ইডেন কলেজের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলের একটি কক্ষে আটকে রেখে নির্যাতন করে। এমনকি, তারা তাকে বø্যাকমেইল করার জন্য তার আপত্তিকর ছবি তুলেছে রেখেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। ভুক্তভোগী ছাত্রলীগ নেত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, তারা আমাকে রুমে নির্যাতন করেছেন। আমি কথা বলতে পারছি না।
এ ব্যাপারে ইডেন কলেজের বঙ্গমাতা হলের প্রভোস্ট নাজমুন নাহার প্রভাতী খবরকে বলেন, ‘ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য আমরা চেষ্টা করেছি এবং বিবাদমান দুই পক্ষের বক্তব্য তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
নিজস্ব প্রতিবেদক
২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২, 12:27 AM

ছাত্রলীগের কোন্দলে আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ইডেন মহিলা কলেজ। হলের সিট বাণিজ্য নিয়ে গণমাধ্যমে কথা বলায় ইডেন কলেজ ছাত্রলীগ সহসভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌসকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও অপর অংশের অনুসারীদের বিরুদ্ধে। চলমান উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গতকাল ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে এতে প্রায় ১০ নেতাকর্মী আহত হয়েছে। রোববার বিকেলে ইডেন কলেজের অডিটোরিয়ামের সামনে এ ঘটনা ঘটে। প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েন করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
পুলিশ জানিয়েছেন, ইডেন মহিলা কলেজে চলমান উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রিভা ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানা। পরে বিকেল সাড়ে পাঁটার দিকে সংবাদ সম্মেলন চলাকালে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। এতে আহত হয়েছে অন্তত ১০ জন। পরে ইডেন ছাত্রলীগের সংঘর্ষ সামাল দিতে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ। চলমান উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
এ নিয়ে ইডেন কলেজ ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীরা দিনভর বিক্ষোভ করেছেন। এ ঘটনার জন্য শিক্ষার্থীরা ‘ব্যর্থ’ কলেজ প্রশাসনের পদত্যাগ ও ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে বহিষ্কার করার দাবি জানান। তবে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলছেন, কলেজ প্রশাসন দুই পক্ষকে ঠেকাতে কোনো উদ্যোগ নেয়নি। গত শনিবার রাত ১১টার পর থেকে এসব ঘটনার সূত্রপাত হয়। এখনও উত্তপ্ত অবস্থায় রয়েছে কলেজ ক্যাম্পাস।
ইডেন কলেজের সহ-সভাপতি সানজিদা পারভীন চৌধুরী বলেন, আমরা রিভা-রাজিয়াকে চাই না। তারা অত্যাচারী, তারা ছাত্রলীগের কলঙ্ক। তারা আমাদের ওপর আগে হামলা চালিয়েছে। আমাদের চারজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এছাড়া আরও ৫-৬ জন আহত হয়েছেন। রিভা ক্যাম্পাস ছেড়েছে, আমরা চাই রাজিয়াও ক্যাম্পাসে ছেড়ে যাক। তাদের আমরা এই ক্যাম্পাসে দেখতে চাই না।
ক্যাম্পাস ছাড়ার আগে কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি রিভা সাংবাদিকদের বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সাংবাদিক সম্মেলন করতে এলে তারা পরিকল্পিতভাবে আমাদের ওপর হামলা চালায়। আমিসহ আমাদের বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার ভোরে ইডেন মহিলা কলেজে ছাত্রলীগের একাংশের নেতাকর্মীরা দলের সভাপতি তামান্না জেসমিন ওরফে রিভা ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানাকে দল থেকে বহিষ্কারের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। আরেক নেত্রী জান্নাতুল ফেরদৌসকে হয়রানি ও মারধরের অভিযোগে (অপর অংশ) তাদের বিরুদ্ধে এ বিক্ষোভ হয়। গত ২২ সেপ্টেম্বর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌস ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের আসন বাণিজ্য, চাঁদাবাজিসহ নানান অপকর্মের কথা তুলে ধরে গণমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দেন। সেই সাক্ষাৎকার দেখে ক্ষুব্ধ হন তামান্না ও রাজিয়াা। এরআগে গত শনিবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাতে কলেজ শাখার নেত্রী নুজহাত ফারিয়া ওরফে রোকসানা, আয়েশা ইসলাম ওরফে মীম ও কামরুন নাহার ওরফে জ্যোতিসহ তামান্না ও রাজিয়ার কয়েকজন সমর্থক জান্নাতুল ফেরদৌসকে কলেজের ছাত্রী নিবাস থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেয়। এ সময় তারা জান্নাতুলকে উত্ত্যক্ত ও মারধর করে। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হামলার ঘটনায় ওই রাতেই তামান্না ও রাজিয়াকে বহিষ্কারের দাবিতে মিছিল বের করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। একপর্যায়ে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীরা তাদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে কলেজ ক্যাম্পাসে পাল্টা মিছিল করে।
এদিকে ভুক্তভোগী ছাত্রলীগ নেত্রী জান্নাতুল সাংবাদিকদের জানান, তামান্না ও রাজিয়ার অনুসারীরা তাকে ইডেন কলেজের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলের একটি কক্ষে আটকে রেখে নির্যাতন করে। এমনকি, তারা তাকে বø্যাকমেইল করার জন্য তার আপত্তিকর ছবি তুলেছে রেখেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। ভুক্তভোগী ছাত্রলীগ নেত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, তারা আমাকে রুমে নির্যাতন করেছেন। আমি কথা বলতে পারছি না।
এ ব্যাপারে ইডেন কলেজের বঙ্গমাতা হলের প্রভোস্ট নাজমুন নাহার প্রভাতী খবরকে বলেন, ‘ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য আমরা চেষ্টা করেছি এবং বিবাদমান দুই পক্ষের বক্তব্য তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’