রাইসির সঙ্গে বৈঠক করতে তেহরানে পুতিন-এরদোয়ান

প্রভাতী খবর ডেস্ক
২০ জুলাই, ২০২২, 12:18 AM

রাইসির সঙ্গে বৈঠক করতে তেহরানে পুতিন-এরদোয়ান
ইরানের রাজধানী তেহরানে পৌঁছেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান। এই সফরে তারা ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির সঙ্গে বৈঠক করবেন। খবর এপি, আল জাজিরার।
সিরিয়া ইস্যু নিয়ে আলোচনা করতেই এই তিন নেতার মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। তবে একই সঙ্গে যুদ্ধের কারণে ইউক্রেনের শস্য সংকট নিয়েও আলোচনা করবেন তারা।
আস্তানা প্ল্যাটফর্মের অধীনে ২০১৭ সাল থেকেই এই তিন দেশ বৈঠক করছে। সিরিয়া যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটানোর লক্ষ্যেই এসব বৈঠক হয়ে আসছে। যদিও এখনও পর্যন্ত এ ক্ষেত্রে তেমন কোনো সমাধান মেলেনি।
এর আগে ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে পুতিনের ইরান সফরের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। সে সময়ই জানানো হয় যে, মঙ্গলবার তিনি তেহরান সফর করবেন। এই সফরে ইরান এবং তুরস্কের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে তার।
এদিকে প্রেসিডেন্ট পুতিন ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপ এরদোগান ইউক্রেনের খাদ্য শস্য রপ্তানির বিশেষ কৌশল নিয়ে মঙ্গলবার তেহরানে আলোচনা করবেন। সোমবার ক্রেমলিন সূত্র এ কথা জানিয়েছে।
ইউক্রেন সংঘাতের ফলে খাদ্য পণ্য রপ্তানি করা বিভিন্ন জাহাজের শিপমেন্ট ব্যাপকভাবে বাধাগ্রস্ত হওয়ায় এ দুই নেতা তা নিয়ে ইরানের রাজধানী তেহরানে আলোচনা করবেন। গম ও অন্যান্য খাদ্য শস্যের বিশ্বের বৃহত্তম রপ্তানিকারক দেশগুলোর অন্যতম একটি দেশ হচ্ছে ইউক্রেন।
দেশটিতে রাশিয়ার আগ্রাসনের কারণে বৈশ্বিক খাদ্য ঘাটতির আশংকা ছড়িয়ে পড়েছে।
এর বাইরেও দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হবেন তিন নেতা ও তাঁদের প্রতিনিধিদল। এতে ইউক্রেন যুদ্ধ থেকে শুরু করে বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলোর সঙ্গে ২০১৫ সালে করা ইরানের পরমাণু চুক্তি নিয়েও আলোচনা হতে পারে।
এমন সময় তেহরান সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন সিরিয়া নিয়ে রাশিয়া ও ইরানের সঙ্গে তুরস্কের উত্তেজনা চলছে। ‘সন্ত্রাসী’ কুর্দি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে উত্তর সিরিয়ার অন্তত দুটি শহর লক্ষ্য করে শিগগিরই নতুন সামরিক অভিযান চালানো হবে বলে গত ১ জুন ঘোষণা দেয় তুরস্ক।
রাশিয়া ও ইরান সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সবচেয়ে বড় দুই সমর্থক। ১০ বছরেরও বেশি আগে শুরু হওয়া গৃহযুদ্ধে এখনো ক্ষমতা ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছেন তিনি।
তাল রিফাত ও মানবিজ থেকে কুর্দি যোদ্ধাদের বিতাড়িত করে চুক্তি অনুযায়ী ৩০ কিলোমিটার ‘নিরাপত্তা অঞ্চল’ বাস্তবায়নের কথা বলছেন এরদোয়ান। তবে হামলা থেকে বিরত থাকতে আঙ্কারার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে মস্কো ও তেহরান। তুরস্কের এ পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছে যুক্তরাষ্ট্রও।
সম্প্রতি ন্যাটোর সদস্যপদ কাজে লাগিয়ে সিরিয়ার কুর্দি যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে নিজের অবস্থান আরও পোক্ত করেছেন এরদোয়ান। ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের ন্যাটোতে যোগদানে সমর্থন দিয়েছে আঙ্কারা। বিনিময়ে কুর্দি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর প্রতি সমর্থন বন্ধ এবং তুরস্ক সন্ত্রাসী মনে করে এমন কয়েক ডজন ব্যক্তিকে প্রত্যর্পণের শর্ত দেওয়া হয়েছে।
নুর-সুলতান সংলাপের পাশাপাশি তিন নেতা গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় সংলাপেও বসতে পারেন। কাজাখস্তানের নতুন রাজধানী নুর-সুলতান। আগে রাজধানীর নাম ছিল আস্তানা। তখন এটি আস্তানা সংলাপ নামে পরিচিত ছিল।
ইউক্রেন থেকে নিরাপদে শস্য রপ্তানিসহ পুতিন ও এরদোয়ান জ্বালানি, বাণিজ্য ও সম্পর্কোন্নয়নে অন্যান্য উপায় নিয়ে আলোচনা করতে পারেন।
একই সময়ে দুই দেশের সঙ্গেই ২০ বছর মেয়াদি সহযোগিতা চুক্তি সইয়ে আগ্রহী ইরান। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে এ প্রস্তাব দিয়ে আসছিল তেহরান।
ওয়াশিংটনের কঠোর নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরানের অর্থনীতি ভুগছে। এর প্রভাব মোকাবিলায় আঞ্চলিক কূটনৈতিক পদক্ষেপের ওপর জোর দিচ্ছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট। রাশিয়া ও তুরস্কের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে চায় ইরান। মস্কোর সঙ্গে দেশীয় মুদ্রা ব্যবহারের বিষয়েও আলোচনা করছেন কর্মকর্তারা।
প্রভাতী খবর ডেস্ক
২০ জুলাই, ২০২২, 12:18 AM

ইরানের রাজধানী তেহরানে পৌঁছেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান। এই সফরে তারা ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির সঙ্গে বৈঠক করবেন। খবর এপি, আল জাজিরার।
সিরিয়া ইস্যু নিয়ে আলোচনা করতেই এই তিন নেতার মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। তবে একই সঙ্গে যুদ্ধের কারণে ইউক্রেনের শস্য সংকট নিয়েও আলোচনা করবেন তারা।
আস্তানা প্ল্যাটফর্মের অধীনে ২০১৭ সাল থেকেই এই তিন দেশ বৈঠক করছে। সিরিয়া যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটানোর লক্ষ্যেই এসব বৈঠক হয়ে আসছে। যদিও এখনও পর্যন্ত এ ক্ষেত্রে তেমন কোনো সমাধান মেলেনি।
এর আগে ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে পুতিনের ইরান সফরের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। সে সময়ই জানানো হয় যে, মঙ্গলবার তিনি তেহরান সফর করবেন। এই সফরে ইরান এবং তুরস্কের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে তার।
এদিকে প্রেসিডেন্ট পুতিন ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপ এরদোগান ইউক্রেনের খাদ্য শস্য রপ্তানির বিশেষ কৌশল নিয়ে মঙ্গলবার তেহরানে আলোচনা করবেন। সোমবার ক্রেমলিন সূত্র এ কথা জানিয়েছে।
ইউক্রেন সংঘাতের ফলে খাদ্য পণ্য রপ্তানি করা বিভিন্ন জাহাজের শিপমেন্ট ব্যাপকভাবে বাধাগ্রস্ত হওয়ায় এ দুই নেতা তা নিয়ে ইরানের রাজধানী তেহরানে আলোচনা করবেন। গম ও অন্যান্য খাদ্য শস্যের বিশ্বের বৃহত্তম রপ্তানিকারক দেশগুলোর অন্যতম একটি দেশ হচ্ছে ইউক্রেন।
দেশটিতে রাশিয়ার আগ্রাসনের কারণে বৈশ্বিক খাদ্য ঘাটতির আশংকা ছড়িয়ে পড়েছে।
এর বাইরেও দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হবেন তিন নেতা ও তাঁদের প্রতিনিধিদল। এতে ইউক্রেন যুদ্ধ থেকে শুরু করে বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলোর সঙ্গে ২০১৫ সালে করা ইরানের পরমাণু চুক্তি নিয়েও আলোচনা হতে পারে।
এমন সময় তেহরান সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন সিরিয়া নিয়ে রাশিয়া ও ইরানের সঙ্গে তুরস্কের উত্তেজনা চলছে। ‘সন্ত্রাসী’ কুর্দি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে উত্তর সিরিয়ার অন্তত দুটি শহর লক্ষ্য করে শিগগিরই নতুন সামরিক অভিযান চালানো হবে বলে গত ১ জুন ঘোষণা দেয় তুরস্ক।
রাশিয়া ও ইরান সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সবচেয়ে বড় দুই সমর্থক। ১০ বছরেরও বেশি আগে শুরু হওয়া গৃহযুদ্ধে এখনো ক্ষমতা ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছেন তিনি।
তাল রিফাত ও মানবিজ থেকে কুর্দি যোদ্ধাদের বিতাড়িত করে চুক্তি অনুযায়ী ৩০ কিলোমিটার ‘নিরাপত্তা অঞ্চল’ বাস্তবায়নের কথা বলছেন এরদোয়ান। তবে হামলা থেকে বিরত থাকতে আঙ্কারার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে মস্কো ও তেহরান। তুরস্কের এ পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছে যুক্তরাষ্ট্রও।
সম্প্রতি ন্যাটোর সদস্যপদ কাজে লাগিয়ে সিরিয়ার কুর্দি যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে নিজের অবস্থান আরও পোক্ত করেছেন এরদোয়ান। ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের ন্যাটোতে যোগদানে সমর্থন দিয়েছে আঙ্কারা। বিনিময়ে কুর্দি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর প্রতি সমর্থন বন্ধ এবং তুরস্ক সন্ত্রাসী মনে করে এমন কয়েক ডজন ব্যক্তিকে প্রত্যর্পণের শর্ত দেওয়া হয়েছে।
নুর-সুলতান সংলাপের পাশাপাশি তিন নেতা গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় সংলাপেও বসতে পারেন। কাজাখস্তানের নতুন রাজধানী নুর-সুলতান। আগে রাজধানীর নাম ছিল আস্তানা। তখন এটি আস্তানা সংলাপ নামে পরিচিত ছিল।
ইউক্রেন থেকে নিরাপদে শস্য রপ্তানিসহ পুতিন ও এরদোয়ান জ্বালানি, বাণিজ্য ও সম্পর্কোন্নয়নে অন্যান্য উপায় নিয়ে আলোচনা করতে পারেন।
একই সময়ে দুই দেশের সঙ্গেই ২০ বছর মেয়াদি সহযোগিতা চুক্তি সইয়ে আগ্রহী ইরান। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে এ প্রস্তাব দিয়ে আসছিল তেহরান।
ওয়াশিংটনের কঠোর নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরানের অর্থনীতি ভুগছে। এর প্রভাব মোকাবিলায় আঞ্চলিক কূটনৈতিক পদক্ষেপের ওপর জোর দিচ্ছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট। রাশিয়া ও তুরস্কের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে চায় ইরান। মস্কোর সঙ্গে দেশীয় মুদ্রা ব্যবহারের বিষয়েও আলোচনা করছেন কর্মকর্তারা।