শেখ হাসিনার ভারত সফর ঢাকা-দিল্লী সম্পর্ক গভীর হওয়ার ইঙ্গিত: ভারতীয় গণমাধ্যম

অনলাইন ডেস্ক
১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২, 12:28 AM

শেখ হাসিনার ভারত সফর ঢাকা-দিল্লী সম্পর্ক গভীর হওয়ার ইঙ্গিত: ভারতীয় গণমাধ্যম
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক চার দিনের ভারত সফর প্রতিবেশী দেশের গণমাধ্যমের ব্যাপক মনযোগ আকর্ষণ করেছে। ভারতীয় পত্রিকাগুলো এই সফরকে একটি ‘সফল সফর’ হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেছে, ‘এই সফর ঢাকা-দিল্লী সম্পর্ক গভীর হওয়ার ইঙ্গিত বহন করে।’
এই সফরের সাফল্য তুলে ধরে দেশব্যাপী ভারতীয় বিভিন্ন পত্রিকা, সংবাদ সংস্থা ও অনলাইন পোর্টালে হিন্দি, ইংরেজি ও বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষায় প্রখ্যাত সাংবাদিকদের হার্ড স্টোরির পাশাপাশি সম্পাদকীয়, উপ-সম্পাদকীয় ও নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর এই সফরটি এনডিটিভি, টাইমস নাও টিভি, রিপাবলিক টিভি ও সংসদ টিভির মতো ভারতীয় ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায়ও গুরুত্ব দিয়ে সম্প্রচার করা হয়। এই চ্যানেলগুলোতে প্রধানমন্ত্রীর সফরের ওপর অনুষ্ঠান ও টক শো সম্প্রচার করে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেপ্টেম্বরের ৫ তারিখ থেকে ৮ তারিখ পর্যন্ত ভারতে চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফর করেন।
এই সফরকালে যোগযোগ, পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা, বাণিজ্য, রপ্তানি ও গণমাধ্যম বিষয়সহ সাতটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়।
রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধ যখন বৈশ্বিক সরবরাহ চেইন ও জ্বালানী বাজারে বিরূপ প্রভাব ফেলেছে, ঠিক সেই চলমান ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে দ্বিপাক্ষিক, বহুপাক্ষিক ও আন্তর্জাতিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ইস্যু নিয়ে দুই নেতার মধ্যে আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়েছে। এ কারণেই ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো এই সফরকে ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’ হিসেবে দেখেছে।
৯ সেপ্টেম্বর, ভারতীয় পত্রিকা দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ‘শেখ হাসিনার সফর ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের গভীরতার ইঙ্গিত। আঞ্চলিক অস্থিরতার সময়কে সযতেœ মোকাবেলা করতে হবে’ শিরোনামে একটি সম্পাদকীয় প্রকাশিত হয়।
সম্পাদকীয়তে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে এমন এক সময় সম্পর্ক আরো গভীর হলো- যখন দক্ষিণ এশিয়ায় অনিশ্চয়তা বেড়েই চলছে। শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তান অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকটে ভুগছে। এমনকি গোটা অঞ্চলটিকেই এখন করোনা মহামারি ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সরবরাহ চেইনে সমস্যার মতো জোড়া অভিঘাত মোকাবিলা করতে হচ্ছে।’
এতে আরো বলা হয়, উদ্ভুত পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও সংযোগ বৃদ্ধির প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৫ সেপ্টেম্বর থেকে ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ এই ভারত সফরকে খাটো করে দেখার সুযোগ নেই।
ভারতের স্বনামধন্য কৌশল বিশ্লেষক কে পি নায়ার দি টিব্রিউনে এক উপসম্পাদকীয়তে লিখেন যে- বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গত সপ্তাহের ভারত সফরটি ছিল ইতিহাসের নিজেরই পুনরাবৃত্তি।
তিনি বলেন, সম্ভাব্য ভবিষ্যত অস্থিরতা এড়িয়ে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ককে সুদৃঢ় ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করতে ৩০ বছর আগে নয়াদিল্লী পি ভি নরসিংমা রাওয়ের কূটনীতি গ্রহণ করেছিল। আর এটি ছিল ভারতের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য প্রতিবেশীর সাথে শান্তির নীতি। এই শান্তির নীতিটি বিশেষত গত এক দশক ধরে উভয় দিক থেকেই অব্যহত রয়েছে।
তিনি আরো লিখেন, ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষেত্রে উভয় পক্ষই সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (সিইপিএ)’র ওপর আলোচনা শুরু করতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়। ভারত বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ব্যবসায় অংশীদার এবং এশিয়ায় এর বৃহত্তম রপ্তানি বাজার।
নায়ার বলেন, মহামারি সত্ত্বেও দু’দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল অভূতপূর্ব প্রায় ৪৪ শতাংশ, ২০২০-২১ অর্থবছরে ১০.৭৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে ২০২১-২২ অর্থবছরে ১৮.১৩ বিলিয়নে দাঁড়ায়।
তিনি বলেন, এছাড়াও স্থল সীমান্ত ও নদীর পানি ব্যবস্থাপনা উভয় ক্ষেত্রেই তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতি সাধিত হয়েছে।
অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন (ওআরএফ) এ স্টাডিজ অ্যান্ড ফরেন পলিসি’র ভাইস প্রেসিডেন্ট হর্ষ ভি পান্ত দি হিন্দুস্তান টাইমসের মতামত কলামে ৯ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর সম্পর্কে লিখেন, ‘দিল্লী-ঢাকা সম্পর্ক একটি নতুন সোনালী যুগে প্রবেশ করল।’
তিনি লিখেন, ‘এ সপ্তাহে বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরটি দুটি প্রতিবেশী দেশের পাশাপাশি একটি অঞ্চলের দু’দেশের জনগণের মধ্যে অকৃত্রিম বন্ধন তুলে ধরেছে।’
অনলাইন ডেস্ক
১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২, 12:28 AM

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক চার দিনের ভারত সফর প্রতিবেশী দেশের গণমাধ্যমের ব্যাপক মনযোগ আকর্ষণ করেছে। ভারতীয় পত্রিকাগুলো এই সফরকে একটি ‘সফল সফর’ হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেছে, ‘এই সফর ঢাকা-দিল্লী সম্পর্ক গভীর হওয়ার ইঙ্গিত বহন করে।’
এই সফরের সাফল্য তুলে ধরে দেশব্যাপী ভারতীয় বিভিন্ন পত্রিকা, সংবাদ সংস্থা ও অনলাইন পোর্টালে হিন্দি, ইংরেজি ও বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষায় প্রখ্যাত সাংবাদিকদের হার্ড স্টোরির পাশাপাশি সম্পাদকীয়, উপ-সম্পাদকীয় ও নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর এই সফরটি এনডিটিভি, টাইমস নাও টিভি, রিপাবলিক টিভি ও সংসদ টিভির মতো ভারতীয় ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায়ও গুরুত্ব দিয়ে সম্প্রচার করা হয়। এই চ্যানেলগুলোতে প্রধানমন্ত্রীর সফরের ওপর অনুষ্ঠান ও টক শো সম্প্রচার করে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেপ্টেম্বরের ৫ তারিখ থেকে ৮ তারিখ পর্যন্ত ভারতে চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফর করেন।
এই সফরকালে যোগযোগ, পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা, বাণিজ্য, রপ্তানি ও গণমাধ্যম বিষয়সহ সাতটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়।
রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধ যখন বৈশ্বিক সরবরাহ চেইন ও জ্বালানী বাজারে বিরূপ প্রভাব ফেলেছে, ঠিক সেই চলমান ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে দ্বিপাক্ষিক, বহুপাক্ষিক ও আন্তর্জাতিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ইস্যু নিয়ে দুই নেতার মধ্যে আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়েছে। এ কারণেই ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো এই সফরকে ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’ হিসেবে দেখেছে।
৯ সেপ্টেম্বর, ভারতীয় পত্রিকা দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ‘শেখ হাসিনার সফর ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের গভীরতার ইঙ্গিত। আঞ্চলিক অস্থিরতার সময়কে সযতেœ মোকাবেলা করতে হবে’ শিরোনামে একটি সম্পাদকীয় প্রকাশিত হয়।
সম্পাদকীয়তে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে এমন এক সময় সম্পর্ক আরো গভীর হলো- যখন দক্ষিণ এশিয়ায় অনিশ্চয়তা বেড়েই চলছে। শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তান অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকটে ভুগছে। এমনকি গোটা অঞ্চলটিকেই এখন করোনা মহামারি ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সরবরাহ চেইনে সমস্যার মতো জোড়া অভিঘাত মোকাবিলা করতে হচ্ছে।’
এতে আরো বলা হয়, উদ্ভুত পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও সংযোগ বৃদ্ধির প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৫ সেপ্টেম্বর থেকে ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ এই ভারত সফরকে খাটো করে দেখার সুযোগ নেই।
ভারতের স্বনামধন্য কৌশল বিশ্লেষক কে পি নায়ার দি টিব্রিউনে এক উপসম্পাদকীয়তে লিখেন যে- বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গত সপ্তাহের ভারত সফরটি ছিল ইতিহাসের নিজেরই পুনরাবৃত্তি।
তিনি বলেন, সম্ভাব্য ভবিষ্যত অস্থিরতা এড়িয়ে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ককে সুদৃঢ় ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করতে ৩০ বছর আগে নয়াদিল্লী পি ভি নরসিংমা রাওয়ের কূটনীতি গ্রহণ করেছিল। আর এটি ছিল ভারতের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য প্রতিবেশীর সাথে শান্তির নীতি। এই শান্তির নীতিটি বিশেষত গত এক দশক ধরে উভয় দিক থেকেই অব্যহত রয়েছে।
তিনি আরো লিখেন, ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষেত্রে উভয় পক্ষই সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (সিইপিএ)’র ওপর আলোচনা শুরু করতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়। ভারত বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ব্যবসায় অংশীদার এবং এশিয়ায় এর বৃহত্তম রপ্তানি বাজার।
নায়ার বলেন, মহামারি সত্ত্বেও দু’দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল অভূতপূর্ব প্রায় ৪৪ শতাংশ, ২০২০-২১ অর্থবছরে ১০.৭৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে ২০২১-২২ অর্থবছরে ১৮.১৩ বিলিয়নে দাঁড়ায়।
তিনি বলেন, এছাড়াও স্থল সীমান্ত ও নদীর পানি ব্যবস্থাপনা উভয় ক্ষেত্রেই তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতি সাধিত হয়েছে।
অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন (ওআরএফ) এ স্টাডিজ অ্যান্ড ফরেন পলিসি’র ভাইস প্রেসিডেন্ট হর্ষ ভি পান্ত দি হিন্দুস্তান টাইমসের মতামত কলামে ৯ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর সম্পর্কে লিখেন, ‘দিল্লী-ঢাকা সম্পর্ক একটি নতুন সোনালী যুগে প্রবেশ করল।’
তিনি লিখেন, ‘এ সপ্তাহে বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরটি দুটি প্রতিবেশী দেশের পাশাপাশি একটি অঞ্চলের দু’দেশের জনগণের মধ্যে অকৃত্রিম বন্ধন তুলে ধরেছে।’