বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া পদ্মা সেতুর ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন বলে যে দাবি তার দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম এখন করছেন, সে প্রসঙ্গ ধরে মঙ্গলবার এ কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী হাছান।
কাকরাইলে প্রেস ইনস্টিটিউটে এক অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “ফেইসবুকে দেখলাম যে ফখরুল সাহেব নিশ্চয় কিছু খেয়েছিলেন, সেজন্য এরকম বলেছেন। কিন্তু আমি নিশ্চিত, অনেকে খেলেও তিনি এরকম কিছু খান না। তিনি ভদ্র মানুষ।
“কিন্তু কোনো কিছু না খেয়েও যে তিনি জলজ্যান্ত মিথ্যা কথা বলতে পারেন, সেটি প্রমাণ করে মির্জা ফখরুল সাহেব নিজেই নিজের মিথ্যাচারের রেকর্ড ভঙ্গ করলেন। আসলে পদ্মা সেতু হয়ে যাওয়ায় তাদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে, খেই হারিয়ে ফেলেছে।”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০১ সালের ৪ জুলাই পদ্মা সেতুর ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে তথ্যমন্ত্রী এসময় তার মোবাইল ফোনে ভিত্তিপ্রস্তর, তখনকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী মো. আনিছুল হক চৌধুরীর বাণী ও স্মরণিকার ছবিগুলো উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, “বিএনপিকে এ ধরনের অপপ্রচার না করে ভুল স্বীকার করার অনুরোধ জানাই। বিএনপির এখন বলা উচিত, তারা যে পদ্মা সেতুর বিরোধিতা করেছিল, সেটি তাদের ভুল ছিল। ভুল স্বীকার করতে কোনো বাধা নেই, লজ্জাও নেই।”
এর আগে প্রেস ইনস্টিটিউটের সেমিনার কক্ষে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা-বাসস আয়োজিত 'শিশু বিষয়ক উন্নয়নে সাংবাদিকতা' বিষয়ে দিনব্যাপী কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী।
কর্মশালাটিকে ‘সময়োপযোগী’ বর্ণনা করে মন্ত্রী বলেন, “শিশুরাই আমাদের ভবিষ্যত। আর উন্নত ভবিষ্যতের জন্য প্রয়োজন তাদের আত্মিক উন্নয়ন। কারণ শুধুমাত্র বস্তুগত উন্নয়ন টেকসই হয় না। বস্তুগত বা অবকাঠামোগত উন্নয়নই যদি একমাত্র উন্নয়ন হত, তাহলে ইউরোপের দেশগুলোতে মানবিকতা ও মূল্যবোধের সংকট হত না, দুর্ঘটনা হলে শুধু জরুরি সেবার অপেক্ষায় থাকতে হত না, বয়স্ক ব্যক্তি মানেই বৃদ্ধাশ্রমে যেতে হত না।
“ইউরোপ-আমেরিকার অন্ধ অনুকরণ নয়, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা উন্নত রাষ্ট্র গঠনের পাশাপাশি একটি মানবিক রাষ্ট্রও গঠন করতে চান। সেজন্য নতুন প্রজন্মের মনের গভীরে মেধা, মূল্যবোধ, দেশাত্মবোধ, মমত্ববোধ, এই চারের সমন্বয় ঘটাতে হবে। এবং এই কাজে সাংবাদিকদের হৃদয়গ্রাহী তথ্যনির্ভর প্রতিবেদন শিশু, তাদের অভিভাবক, শিক্ষকসহ সমাজকে সচেতন করতে পারে “
বাসসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে পিআইবির মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুভাষ চন্দ বাদল, বাসসের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আনিসুর রহমান কর্মশালায় বক্তব্য দেন।
শেষে অংশগ্রহণকারীদের হাতে সনদ তুলে দেন মন্ত্রী হাছান মাহমুদ।