শিরোনামঃ
ছাত্রলীগ নেতার নেতৃত্বে প্রবাসীর বাসা দখলের চেষ্টা , অর্ধকোটি টাকা চাঁদা দাবি ‘বাবা নেই’ ভিডিও গানের মোড়ক উন্মোচন আগামী পাঁচ বছরে শীর্ষে থাকবে ইমপিরিয়াল লক্ষ্য প্রতিষ্ঠাতার মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ দেশ জনতা পার্টির আলোচনা সভা রহিম আল-হুসাইনি আগা খান পঞ্চম-এর অভিষেক অনুষ্ঠিত আগা খান ৪র্থ আসওয়ান ,মিশরে শায়িত হলেন শিয়া ইসমাইলি মুসলিমদের ৪৯তম ইমাম আগা খানের জানাজা অনুষ্ঠিত মোহাম্মদপুর এলাকায় একটি বাজারের ক্রয়কৃত দোকান দখল, থানায় অভিযোগ আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নে এখনো সক্রিয় সড়কের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মইনুল হাসান ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ ২০২৪ এর পুনর্জন্ম : উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ

পাঁচ বছরে ২৩৫ খুনঃ আবারও রোহিঙ্গা স্বেচ্ছাসেবককে গুলি ও কুবিয়ে হত্যা

#
news image

কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে ক্রমেই বাড়ছে অপরাধ। নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে মানবিক কারণে আশ্রয় পাওয়া রোহিঙ্গারা। একের পর এক হত্যাকান্ড, আধিপত্য বিস্তার ও মাদক কারবারের জেরে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে অস্থিরতা বিরাজ করছে রোহিঙ্গা শিবিরে। পুলিশের তথ্য মতে, ২০২২ সালের ২১ সেপ্টম্বর পর্যন্ত পাঁচ বছরে ক্যাম্পে সংঘর্ষের ঘটনায় ২৩৫ জন নিহত হয়েছেন এবং ২ হাজার ৮৫০ জনের বিরুদ্ধে ১ হাজার ২৯৮টি মামলা হয়েছে। এসব মামলার বেশিরভাগই হয়েছে আধিপত্য বিস্তার ও মাদক কারবারের জেরে রক্তক্ষয়ী সংঘষের্র অভিযোগে।
এদিকে সবশেষ গতকাল উখিয়া উপজেলায় মো. জাফর (৩৫) নামে এক রোহিঙ্গা স্বেচ্ছাসেবককে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে উখিয়ার বালুখালী ১৮ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এ ঘটনা ঘটেছে। উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ৮-আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) ফারুক আহমেদ প্রভাতী খবরকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। নিহত জাফর ১৮ নম্বর ক্যাম্পের এইচ/৫১ বøকের মৃত বদিউর রহমানের ছেলে।
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তথ্যানুযায়ী, ২০১৭ সালের আগস্টে বাংলাদেশে আশ্রয় পাওয়ার পর রোহিঙ্গাদের অপরাধ প্রতিবছর আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। গত পাঁচ বছরে ক্যাম্পের অভ্যন্তরেই শুধু হত্যার শিকার হয়েছেন ৭২ জন এবং খুন ও আগ্নেয় অবৈধ অস্ত্র রাখার অপরাধে মামলা হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৩০০টি।
রোহিঙ্গা নেতা মৃত মুহিবুল্লাহর ছোট ভাই হাবিব উল্লাহর দাবি, ওই হত্যাকান্ডে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনবিরোধী সন্ত্রাসী গ্রæপ আরসা জড়িত। মিয়াানমার সেনাবাহিনীর বর্বর নির্যাতনের মুখে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা। তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা নির্যাতনের প্রতিবাদ ও তাদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করা নিয়ে সোচ্চার ছিলেন নিজ বড় ভাই মুহিবুল্লাহ। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে স্বীকৃতি পাওয়া এ নেতাকে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরাই হত্যা করেছে বলে তার অভিযোগ।’
গোয়েন্দা ও এপিবিএন পুলিশের তথ্যানুযায়ী, রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে খুন, গুম, অপহরণ, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ডাকাতি, আধিপত্য বিস্তারসহ নানা অপরাধ বেড়েই চলেছে। দিনে ক্যাম্পগুলো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকলেও রাতে নিয়ন্ত্রণ করে বিভিন্ন সন্ত্রাসী গ্রæপ। এতে কক্সবাজার জেলাবাসীর কাছে এখন মূর্তিমান আতঙ্কে পরিণত হয়েছে রোহিঙ্গারা। অপরাধের মধ্যে আছে হত্যা, অস্ত্র, মাদক, ধর্ষণ, অপহরণ, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলা, ডাকাতি বা ডাকাতির প্রস্তুতি ও মানবপাচার। এর মধ্যে ৭১টি খুন, ৭৬৪টি মাদক, ২৮টি মানব পাচার, ৮৭টি অস্ত্র, ৬৫টি ধর্ষণ, ১০টি ডাকাতি, ৩৪টি অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায় এবং অন্যান্য আইনে ৮৯টি মামলা হয়েছে।
বছরভিত্তিক অপরাধের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৭ সালে বাংলাদেশে আশ্রয় পাওয়ার বছর নানা অপরাধে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মামলার সংখ্যা ছিল ৭৬টি। আসামি ছিলেন ১৫৯ জন। ২০১৮ সালে মামলার সংখ্যা বেড়ে হয় ২০৮। আসামির সংখ্যা ছিল ৪১৪। ২০১৯ সালে মামলার সংখ্যা বাড়ে আরও ৫৫টি। ২৬৩ মামলায় আসামি করা হয় ৬৪৯ রোহিঙ্গাকে। ২০২০ সালে মামলার সংখ্যা কিছুটা কমে আসে। ৪৪৯ রোহিঙ্গার বিরুদ্ধে মামলা হয় ১৮৪টি। তবে চলতি বছর রোহিঙ্গাদের অপরাধের মাত্রা সীমা ছাড়িয়েছে। আগস্ট পর্যন্ত মামলা হয়েছে ৫৭০টি। আসামি করা হয়েছে ১ হাজারের বেশি রোহিঙ্গাকে।
কক্সবাজারের স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে কথিত আরসা, আল ইয়াকিনসহ কমপক্ষে ১৫টি অপরাধী দল সক্রিয়। এসব অপরাধী দলের নেতৃত্বে চলে মাদক কারবার, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, আধিপত্য বিস্তারে সশস্ত্র মহড়া, অপহরণ, মানবপাচারসহ বিভিন্ন অপরাধ। রোহিঙ্গারা দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে। যত দিন যাচ্ছে, ততই তারা ভয়ংকর রূপে দেখা দিচ্ছে।
এ ব্যাপারে বাহারছড়া ইউপির চেয়ারম্যান মৌলভী আজিজ উদ্দিন বলেন, ‘মানবিক কারণে আশ্রয় দেয়া রোহিঙ্গারা এখন স্থানীয়দের কাছে আতঙ্কে পরিণত হয়েছে। তারা প্রতিনিয়ত মাদক, মানবপাচার, অবৈধ অস্ত্র, স্বর্ণ চোরাকারবারি, অপহরণ, খুনসহ নানা অপকর্ম করেই যাচ্ছে।’
কক্সবাজার রোহিঙ্গা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মাহাবুবুর রহমান অভিযোগ করেন, কক্সবাজারের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির জন্য মূলত রোহিঙ্গারা দায়ী। এখানে যে পরিমাণ অপরাধ এখন হচ্ছে, তা অতীতে কখনও হয়নি। রোহিঙ্গারা ভাড়ায় খুন থেকে শুরু করে অপরাধমূলক নানা কাজে জড়িয়ে পড়ছে।
কক্সবাজার বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আয়াছুর রহমান বলেন, ‘রোহিঙ্গারা যেভাবে অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে তা বর্ণনা করা সম্ভব নয়। যতই সময় গড়াচ্ছে, ততই তারা ভয়ংকর হয়ে উঠছে। ‘এখনই যদি তাদের লাগাম টেনে ধরা না হয়, তবে তাদের নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়বে।’ রোহিঙ্গাদের দ্রুত মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
কক্সবাজারে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ার কথা স্বীকার করে র‌্যাব-১৫-এর উইং কমান্ডার আজিম আহমদ বলেন, ‘কক্সবাজারে মাদকের বড় বড় চালান নিয়ে যারা আটক হচ্ছে, তার মধ্যে ৭০ ভাগই রোহিঙ্গা। কক্সবাজারকে মাদকমুক্ত করার অন্যতম বাধা রোহিঙ্গারা।’

রোহিঙ্গাদের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কাজ চলছে জানিয়ে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম প্রভাতী খবরকে মোবাইলে বলেন, ‘রোহিঙ্গারা অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়েছে। রোহিঙ্গাদের নিয়ন্ত্রণে জেলা পুলিশের পাশপাশি ক্যাম্পে এপিবিএনের তিনটি ব্যাটালিয়ন কাজ করছে। পাশাপাশি র‌্যাব ও গোয়েন্দা পুলিশ সেখানে কাজ করছে।’ তিনি আরও বলেন, মঙ্গলবারের হত্যাকান্ডে জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। ঘটনার ক্যাম্পের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে।

 

 

 

 

এসএম শামসুজ্জোহা

২২ সেপ্টেম্বর, ২০২২,  12:04 AM

news image

কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে ক্রমেই বাড়ছে অপরাধ। নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে মানবিক কারণে আশ্রয় পাওয়া রোহিঙ্গারা। একের পর এক হত্যাকান্ড, আধিপত্য বিস্তার ও মাদক কারবারের জেরে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে অস্থিরতা বিরাজ করছে রোহিঙ্গা শিবিরে। পুলিশের তথ্য মতে, ২০২২ সালের ২১ সেপ্টম্বর পর্যন্ত পাঁচ বছরে ক্যাম্পে সংঘর্ষের ঘটনায় ২৩৫ জন নিহত হয়েছেন এবং ২ হাজার ৮৫০ জনের বিরুদ্ধে ১ হাজার ২৯৮টি মামলা হয়েছে। এসব মামলার বেশিরভাগই হয়েছে আধিপত্য বিস্তার ও মাদক কারবারের জেরে রক্তক্ষয়ী সংঘষের্র অভিযোগে।
এদিকে সবশেষ গতকাল উখিয়া উপজেলায় মো. জাফর (৩৫) নামে এক রোহিঙ্গা স্বেচ্ছাসেবককে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে উখিয়ার বালুখালী ১৮ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এ ঘটনা ঘটেছে। উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ৮-আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) ফারুক আহমেদ প্রভাতী খবরকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। নিহত জাফর ১৮ নম্বর ক্যাম্পের এইচ/৫১ বøকের মৃত বদিউর রহমানের ছেলে।
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তথ্যানুযায়ী, ২০১৭ সালের আগস্টে বাংলাদেশে আশ্রয় পাওয়ার পর রোহিঙ্গাদের অপরাধ প্রতিবছর আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। গত পাঁচ বছরে ক্যাম্পের অভ্যন্তরেই শুধু হত্যার শিকার হয়েছেন ৭২ জন এবং খুন ও আগ্নেয় অবৈধ অস্ত্র রাখার অপরাধে মামলা হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৩০০টি।
রোহিঙ্গা নেতা মৃত মুহিবুল্লাহর ছোট ভাই হাবিব উল্লাহর দাবি, ওই হত্যাকান্ডে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনবিরোধী সন্ত্রাসী গ্রæপ আরসা জড়িত। মিয়াানমার সেনাবাহিনীর বর্বর নির্যাতনের মুখে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা। তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা নির্যাতনের প্রতিবাদ ও তাদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করা নিয়ে সোচ্চার ছিলেন নিজ বড় ভাই মুহিবুল্লাহ। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে স্বীকৃতি পাওয়া এ নেতাকে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরাই হত্যা করেছে বলে তার অভিযোগ।’
গোয়েন্দা ও এপিবিএন পুলিশের তথ্যানুযায়ী, রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে খুন, গুম, অপহরণ, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ডাকাতি, আধিপত্য বিস্তারসহ নানা অপরাধ বেড়েই চলেছে। দিনে ক্যাম্পগুলো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকলেও রাতে নিয়ন্ত্রণ করে বিভিন্ন সন্ত্রাসী গ্রæপ। এতে কক্সবাজার জেলাবাসীর কাছে এখন মূর্তিমান আতঙ্কে পরিণত হয়েছে রোহিঙ্গারা। অপরাধের মধ্যে আছে হত্যা, অস্ত্র, মাদক, ধর্ষণ, অপহরণ, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলা, ডাকাতি বা ডাকাতির প্রস্তুতি ও মানবপাচার। এর মধ্যে ৭১টি খুন, ৭৬৪টি মাদক, ২৮টি মানব পাচার, ৮৭টি অস্ত্র, ৬৫টি ধর্ষণ, ১০টি ডাকাতি, ৩৪টি অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায় এবং অন্যান্য আইনে ৮৯টি মামলা হয়েছে।
বছরভিত্তিক অপরাধের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৭ সালে বাংলাদেশে আশ্রয় পাওয়ার বছর নানা অপরাধে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মামলার সংখ্যা ছিল ৭৬টি। আসামি ছিলেন ১৫৯ জন। ২০১৮ সালে মামলার সংখ্যা বেড়ে হয় ২০৮। আসামির সংখ্যা ছিল ৪১৪। ২০১৯ সালে মামলার সংখ্যা বাড়ে আরও ৫৫টি। ২৬৩ মামলায় আসামি করা হয় ৬৪৯ রোহিঙ্গাকে। ২০২০ সালে মামলার সংখ্যা কিছুটা কমে আসে। ৪৪৯ রোহিঙ্গার বিরুদ্ধে মামলা হয় ১৮৪টি। তবে চলতি বছর রোহিঙ্গাদের অপরাধের মাত্রা সীমা ছাড়িয়েছে। আগস্ট পর্যন্ত মামলা হয়েছে ৫৭০টি। আসামি করা হয়েছে ১ হাজারের বেশি রোহিঙ্গাকে।
কক্সবাজারের স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে কথিত আরসা, আল ইয়াকিনসহ কমপক্ষে ১৫টি অপরাধী দল সক্রিয়। এসব অপরাধী দলের নেতৃত্বে চলে মাদক কারবার, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, আধিপত্য বিস্তারে সশস্ত্র মহড়া, অপহরণ, মানবপাচারসহ বিভিন্ন অপরাধ। রোহিঙ্গারা দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে। যত দিন যাচ্ছে, ততই তারা ভয়ংকর রূপে দেখা দিচ্ছে।
এ ব্যাপারে বাহারছড়া ইউপির চেয়ারম্যান মৌলভী আজিজ উদ্দিন বলেন, ‘মানবিক কারণে আশ্রয় দেয়া রোহিঙ্গারা এখন স্থানীয়দের কাছে আতঙ্কে পরিণত হয়েছে। তারা প্রতিনিয়ত মাদক, মানবপাচার, অবৈধ অস্ত্র, স্বর্ণ চোরাকারবারি, অপহরণ, খুনসহ নানা অপকর্ম করেই যাচ্ছে।’
কক্সবাজার রোহিঙ্গা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মাহাবুবুর রহমান অভিযোগ করেন, কক্সবাজারের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির জন্য মূলত রোহিঙ্গারা দায়ী। এখানে যে পরিমাণ অপরাধ এখন হচ্ছে, তা অতীতে কখনও হয়নি। রোহিঙ্গারা ভাড়ায় খুন থেকে শুরু করে অপরাধমূলক নানা কাজে জড়িয়ে পড়ছে।
কক্সবাজার বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আয়াছুর রহমান বলেন, ‘রোহিঙ্গারা যেভাবে অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে তা বর্ণনা করা সম্ভব নয়। যতই সময় গড়াচ্ছে, ততই তারা ভয়ংকর হয়ে উঠছে। ‘এখনই যদি তাদের লাগাম টেনে ধরা না হয়, তবে তাদের নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়বে।’ রোহিঙ্গাদের দ্রুত মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
কক্সবাজারে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ার কথা স্বীকার করে র‌্যাব-১৫-এর উইং কমান্ডার আজিম আহমদ বলেন, ‘কক্সবাজারে মাদকের বড় বড় চালান নিয়ে যারা আটক হচ্ছে, তার মধ্যে ৭০ ভাগই রোহিঙ্গা। কক্সবাজারকে মাদকমুক্ত করার অন্যতম বাধা রোহিঙ্গারা।’

রোহিঙ্গাদের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কাজ চলছে জানিয়ে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম প্রভাতী খবরকে মোবাইলে বলেন, ‘রোহিঙ্গারা অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়েছে। রোহিঙ্গাদের নিয়ন্ত্রণে জেলা পুলিশের পাশপাশি ক্যাম্পে এপিবিএনের তিনটি ব্যাটালিয়ন কাজ করছে। পাশাপাশি র‌্যাব ও গোয়েন্দা পুলিশ সেখানে কাজ করছে।’ তিনি আরও বলেন, মঙ্গলবারের হত্যাকান্ডে জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। ঘটনার ক্যাম্পের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে।