দুই বছর পর কুমারী পূজা
অনলাইন ডেস্ক
০৩ অক্টোবর, ২০২২, 11:24 PM
দুই বছর পর কুমারী পূজা
সনাতন ধর্মালম্বীদের দুর্গোৎসবের আজ (৩ অক্টোবর) তৃতীয় দিন। মহাঅষ্টমী ও সন্ধি পূজার পাশাপাশি আজ কুমারী পূজাও হচ্ছে। গত দুই বছর করোনা মহামারির কারণে সারা দেশে কুমারী পূজা করা হয়নি।
কুমারী পূজা উপলক্ষে আজ রাজধানীর পূজামণ্ডপগুলোতে দর্শনার্থী-পুণ্যার্থীদের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। বিশেষ করে, রাজধানী গোপীবাগের রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।
করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর মহাঅষ্টমীর মূল আকর্ষণ কুমারী পূজা আয়োজন করা হয়নি। তবে, এবার করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকায় করা হচ্ছে এ পূজা। দেশের অন্যান্য জায়গাতেও কুমারী পূজা হচ্ছে।
সোমবার বেলা ১১টায় রাজধানীর গোপীবাগের রামকৃষ্ণ মঠে কুমারী পূজা শুরু হয়। কুমারী বালিকার মধ্যে বিশুদ্ধ নারীর রূপ কল্পনা করে তাকে দেবী জ্ঞানে পূজা করেন ভক্তরা।
এবারের কুমারীর নাম দেবপ্রিয়া চক্রবর্তী শ্রেষ্ঠা। তার বয়স ছয় বছর। কুমারী পূজা চলাকালে ভক্তদের সে বলেছে, ‘সকলকে আশীর্বাদ’।
রামকৃষ্ণ মিশনে বেলা ১১টায় কুমারী পূজা শুরু হয়। দেবী দুর্গাকে সম্মান জানাতেই অষ্টমীতে আয়োজন করা হয় কুমারী পূজার। ১৬টি উপকরণ দিয়ে কুমারী পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
হিন্দু শাস্ত্র অনুসারে, সাধারণত ১ থেকে ১৬ বছরের অজাতপুষ্প সুলক্ষণা ব্রাহ্মণ বা অন্য গোত্রের অবিবাহিত কুমারী নারীকে দেবী জ্ঞানে পূজা করা হয়। শ্রী রামকৃষ্ণের কথা মতে, শুদ্ধাত্মা কুমারীতে ভগবতীর রূপ বেশি প্রকাশ পায় এবং মাতৃরূপ উপলব্ধি করাই কুমারী পূজার উদ্দেশ্য।
শাস্ত্র মতে, এক বছর বয়সী কন্যাকে সন্ধ্যা, দুইয়ে সরস্বতী, তিনে ত্রিধামূর্তি, চারে কলিকা, পাঁচে সুভাগা, ছয়ে উমা, সাতে মালনী, আটে কুজ্বিকা, নয়ে কালসন্দর্ভা, দশে অপরাজিতা, এগারোয় রুদ্রানী, বারোয় ভৈরবী, তেরোয় মহালক্ষ্মী, চৌদ্দতে পীঠ নায়িকা, পনেরোতে ক্ষেত্রজ্ঞা এবং ষোলো বছরে তাকে অন্নদা নামে অভিহিত করা হয়।
পুরাণ মতে, দুর্গা দেবী কুমারী রূপেই আবির্ভূত হয়েছিলেন দেবতাদের সামনে। সেই রীতি বহন করেই মহাঅষ্টমীর সকালে কুমারী পূজার আয়োজন। মহাঅষ্টমীর সবচেয়ে বড় আকর্ষণ এই কুমারী পূজা। যেখানে একজন কুমারীকে মহাষ্টমীর দিন ভোরে গোসল করিয়ে নতুন কাপড় পরানো হয়। তাকে সাজিয়ে কপালে সিঁদুর, পায়ে আলতা ও হাতে ফুল দেওয়া হয়। এরপর কুমারীকে সুসজ্জিত আসনে বসিয়ে ষোলো উপাদান দেবীজ্ঞানে পূজা করা হয়। এ সময় চারদিকে শঙ্খধ্বনি, ঢাকের বোল, উলুধ্বনিতে মুখর হয়ে ওঠে।
মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি মনীন্দ্র কুমার নাথ বলেন, সকাল ৯টা ৫৭ মিনিটের মধ্যে দেবীর মহাঅষ্টমী কল্পারম্ভ ও বিহিত পূজা শেষ হয়। বিকেল ৪টা ৫ মিনিটে শুরু হবে সন্ধি পূজা। শেষ হবে ৪টা ৫৩ মিনিটে।
রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী পূর্ণাত্মানন্দ মহারাজ বলেন, ‘আধুনিক পৃথিবীতে সামাজিক, নৈতিক ও আধ্যাত্মিক সংকট নিরসন করে অগ্রগামী হতে হলে মাতৃজাতির প্রতি যথাযোগ্য সম্মান প্রদর্শন করা উচিত। জগতের অনেক স্থানে নারীকে সম্মান দেওয়া হয় পত্নী রূপে বা সহকারিণী রূপে। কিন্তু, নারীর সবচেয়ে মহিমময় রূপ তার মাতৃরূপ। তাই, আজকের এই মহাঅষ্টমী তিথিতে আমরা জগতের সব মাতৃজাতিকে উদ্দেশ্য করে কুমারী মাতাকে প্রণাম জানাই। তার মাধ্যমে আদ্যাশক্তিকে আমাদের প্রণাম নিবেদন করি।’
অনলাইন ডেস্ক
০৩ অক্টোবর, ২০২২, 11:24 PM
সনাতন ধর্মালম্বীদের দুর্গোৎসবের আজ (৩ অক্টোবর) তৃতীয় দিন। মহাঅষ্টমী ও সন্ধি পূজার পাশাপাশি আজ কুমারী পূজাও হচ্ছে। গত দুই বছর করোনা মহামারির কারণে সারা দেশে কুমারী পূজা করা হয়নি।
কুমারী পূজা উপলক্ষে আজ রাজধানীর পূজামণ্ডপগুলোতে দর্শনার্থী-পুণ্যার্থীদের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। বিশেষ করে, রাজধানী গোপীবাগের রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।
করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর মহাঅষ্টমীর মূল আকর্ষণ কুমারী পূজা আয়োজন করা হয়নি। তবে, এবার করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকায় করা হচ্ছে এ পূজা। দেশের অন্যান্য জায়গাতেও কুমারী পূজা হচ্ছে।
সোমবার বেলা ১১টায় রাজধানীর গোপীবাগের রামকৃষ্ণ মঠে কুমারী পূজা শুরু হয়। কুমারী বালিকার মধ্যে বিশুদ্ধ নারীর রূপ কল্পনা করে তাকে দেবী জ্ঞানে পূজা করেন ভক্তরা।
এবারের কুমারীর নাম দেবপ্রিয়া চক্রবর্তী শ্রেষ্ঠা। তার বয়স ছয় বছর। কুমারী পূজা চলাকালে ভক্তদের সে বলেছে, ‘সকলকে আশীর্বাদ’।
রামকৃষ্ণ মিশনে বেলা ১১টায় কুমারী পূজা শুরু হয়। দেবী দুর্গাকে সম্মান জানাতেই অষ্টমীতে আয়োজন করা হয় কুমারী পূজার। ১৬টি উপকরণ দিয়ে কুমারী পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
হিন্দু শাস্ত্র অনুসারে, সাধারণত ১ থেকে ১৬ বছরের অজাতপুষ্প সুলক্ষণা ব্রাহ্মণ বা অন্য গোত্রের অবিবাহিত কুমারী নারীকে দেবী জ্ঞানে পূজা করা হয়। শ্রী রামকৃষ্ণের কথা মতে, শুদ্ধাত্মা কুমারীতে ভগবতীর রূপ বেশি প্রকাশ পায় এবং মাতৃরূপ উপলব্ধি করাই কুমারী পূজার উদ্দেশ্য।
শাস্ত্র মতে, এক বছর বয়সী কন্যাকে সন্ধ্যা, দুইয়ে সরস্বতী, তিনে ত্রিধামূর্তি, চারে কলিকা, পাঁচে সুভাগা, ছয়ে উমা, সাতে মালনী, আটে কুজ্বিকা, নয়ে কালসন্দর্ভা, দশে অপরাজিতা, এগারোয় রুদ্রানী, বারোয় ভৈরবী, তেরোয় মহালক্ষ্মী, চৌদ্দতে পীঠ নায়িকা, পনেরোতে ক্ষেত্রজ্ঞা এবং ষোলো বছরে তাকে অন্নদা নামে অভিহিত করা হয়।
পুরাণ মতে, দুর্গা দেবী কুমারী রূপেই আবির্ভূত হয়েছিলেন দেবতাদের সামনে। সেই রীতি বহন করেই মহাঅষ্টমীর সকালে কুমারী পূজার আয়োজন। মহাঅষ্টমীর সবচেয়ে বড় আকর্ষণ এই কুমারী পূজা। যেখানে একজন কুমারীকে মহাষ্টমীর দিন ভোরে গোসল করিয়ে নতুন কাপড় পরানো হয়। তাকে সাজিয়ে কপালে সিঁদুর, পায়ে আলতা ও হাতে ফুল দেওয়া হয়। এরপর কুমারীকে সুসজ্জিত আসনে বসিয়ে ষোলো উপাদান দেবীজ্ঞানে পূজা করা হয়। এ সময় চারদিকে শঙ্খধ্বনি, ঢাকের বোল, উলুধ্বনিতে মুখর হয়ে ওঠে।
মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি মনীন্দ্র কুমার নাথ বলেন, সকাল ৯টা ৫৭ মিনিটের মধ্যে দেবীর মহাঅষ্টমী কল্পারম্ভ ও বিহিত পূজা শেষ হয়। বিকেল ৪টা ৫ মিনিটে শুরু হবে সন্ধি পূজা। শেষ হবে ৪টা ৫৩ মিনিটে।
রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী পূর্ণাত্মানন্দ মহারাজ বলেন, ‘আধুনিক পৃথিবীতে সামাজিক, নৈতিক ও আধ্যাত্মিক সংকট নিরসন করে অগ্রগামী হতে হলে মাতৃজাতির প্রতি যথাযোগ্য সম্মান প্রদর্শন করা উচিত। জগতের অনেক স্থানে নারীকে সম্মান দেওয়া হয় পত্নী রূপে বা সহকারিণী রূপে। কিন্তু, নারীর সবচেয়ে মহিমময় রূপ তার মাতৃরূপ। তাই, আজকের এই মহাঅষ্টমী তিথিতে আমরা জগতের সব মাতৃজাতিকে উদ্দেশ্য করে কুমারী মাতাকে প্রণাম জানাই। তার মাধ্যমে আদ্যাশক্তিকে আমাদের প্রণাম নিবেদন করি।’